ডার্ক মোড
Thursday, 30 January 2025
ePaper   
Logo
নারায়ণগঞ্জে ছাত্রদল-স্বেচ্ছাসেবক দলের  সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধসহ আহত ২০

নারায়ণগঞ্জে ছাত্রদল-স্বেচ্ছাসেবক দলের সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধসহ আহত ২০

 

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে প্রভাব বিস্তার ও আড়ৎ দখলকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের দুই গ্রæপের মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, গুলিবর্ষণ ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় জিপ গাড়ি ও ১০টি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটানো হয়।

এ সংঘর্ষের ঘটনায় রাফি আহমেদ স্বপন ও রাজু ভুইয়া নামে দুইজন গুলিবিদ্ধসহ উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। তাদেরকে মূমূর্ষ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের সাওঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-সিলেট মহসড়ক সংগলগ্ন সাওঘাট এলাকায় বিসমিল্লাহ আড়ৎ নিয়ে জাপান-বাংলাদেশ গ্রæপের চেয়ারম্যান সেলিম প্রধানের সঙ্গে স্থানীয় ব্যবসায়ী মুজিবর রহমানের আড়ৎ নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল।

ব্যবসায়ী মজিবুর রহমানের দাবি, সেলিম প্রধানের মালিকানাধীন জমি তিনি ১০ বছরের জন্য চুক্তি ভিত্তিতে ভাড়া নেন। পরে সেখানে বালু ভরাট ও সেড নির্মাণ করে কাচাঁবাজারের আড়ৎ গড়ে তোলেন। বর্তমানে পেশী শক্তি খাটিয়ে আড়ৎটি বেদখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন সেলিম প্রধান।

অপরদিকে, সেলিম প্রধানের দাবি, ভূয়া চুক্তিনামা তৈরী করে জোর পূর্বক জমি দখল করে আড়ৎ গড়ে তোলেন মজিবুর রহমান।

এদিকে, আড়ৎটি দখল করতে সেলিম প্রধানের পক্ষ নেয় জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমান ও তার লোকজন। অপরদিকে, মজিবুর রহমান ও আড়তের ব্যবসায়ীদের পক্ষ নেয় জেলা সেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ন আহবায়ক রফিকুল ইসলাম ও তার লোকজন।

মঙ্গলবার দুপুরে আড়তের পাশে সেলিম প্রধানের বাড়িতে মাসুদুর রহমানের লোকজন অবস্থান নেয়। এসময় আড়তের পাশের সড়ক দিয়ে রফিকুল ইসলাম তার নেতাকর্মীদের নিয়ে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাস বিরোধী মিছিল বের করে। এসময় সেলিম প্রধানের বাড়ির ভেতর থেকে ওই মিছিলে ইটপাটকেল ছোড়া হয়। পরে উভয়পক্ষের মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এ পর্যায়ে উভয়পক্ষের লোকজন ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, গুলিবর্ষণ, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এসময় কয়েকজনকে পিস্তল হাতে গুলি করতে দেখা গেছে।

সংঘর্ষে উভয়পক্ষের মাঝে অন্তত ২০ জন আহত হন। আহতের মধ্যে রাজু ও স্বপন নামের দুজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এসময় সেলিম প্রধানের ব্যবহৃত একটি জিপ গাড়ি জ¦ালিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া ১০ টি মোটরসাইকেল ভাংচুর চালিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

এসময় গাউছিয়া মার্কেট তাঁতবাজার, হাজী শপিং কমপ্লেক্সসহ আশপাশের মার্কেট ও হাঁটবাজারের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। জনমনে চরম আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌছেঁ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

জেলা সেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ন আহবায়ক রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাস বিরোধী মিছিল করছিলাম। ওই মিছিলে অতর্কিতভাবে সন্ত্রাসীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ গুলি ও হামলা করে।

জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। তবে শুনেছি আমার লোকজনের উপর সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছে। গুলিবিদ্ধসহ অনেকে আহত হয়েছে।

এ ব্যাপারে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) গ সার্কেল মেহেদী ইসলাম বলেন, সেলিম প্রধানের সঙ্গে মুজিবুর রহমানের বিসমিল্লাহ আড়ৎ নিয়ে র্দীঘদিন ধরে ঝামেলা চলছিল। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। যেহেতু এখানে গুলিবষর্ণের ঘটনা ঘটেছে আমরা অস্ত্র উদ্ধারের চেষ্টা চালাবো। এ ঘটনা কাউকে গ্রেপ্তার যায়নি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঘটনার সঙ্গে জড়িতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আড়তের আসল মালিক কে সেটির জন্য আমরা উচ্চ আদালতের দারস্থ হবো।

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ১ রাতে ৬ বাড়িতে ডাকাতি

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে এক রাতে ৬ বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দিবাগত রাত দেড়টা থেকে শুরু করে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত উপজেলার খাগকান্দা ইউনিয়নের সম্ভুপুরা গ্রামে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার দিবাগত রাতে ১০-১৫ জনের একটি মুখোশধারী ডাকাত দল প্রথমে জামালের বাড়িতে প্রবেশ করে ১৫ হাজার টাকা ও ১টি মোবাইল নিয়ে যায়। পরে একে একে নূর মোহাম্মদের বাড়ি থেকে ১০ হাজার টাকা ও ৩টি মোবাইল, তাসলিমার বাড়ি থেকে ৫ হাজার টাকা ও একটি স্বর্ণের চেইন, বাচ্চুর বাড়িতে প্রবেশ করলেও কিছু নিতে না পেরে খাবার নষ্ট ও জিনিসপত্র ভাঙচুর করে যায়। এরপর লিটনের বাড়িতে হামলা করে ২০ হাজার টাকা, দুটি মোবাইল, কানের দুল ও একটি চেইন লুট করে নেয় ডাকাতদল।

এদিকে, এক রাতের মধ্যে ছায় বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় শম্ভুপুরা গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা তাদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত এবং প্রশাসনের কাছে অতিরিক্ত নজরদারির দাবি জানিয়েছেন।

আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনায়েত হোসেন বলেন, ডাকাতির খবর পাওয়ার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে। আমরা তদন্ত শুরু করেছি এবং ডাকাতদের চিহ্নিত করে দ্রæত আইনের আওতায় আনার কাজ চলছে।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন