ডার্ক মোড
Friday, 31 January 2025
ePaper   
Logo
সিলেটে সয়াবিন তেলের সংকটে পাইকারি ও খুচরা বাজারে দাম বৃদ্ধির অভিযোগ

সিলেটে সয়াবিন তেলের সংকটে পাইকারি ও খুচরা বাজারে দাম বৃদ্ধির অভিযোগ

সিলেট ব্যুরো

সিলেটের পাইকারি ও খুচরা বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট দেখা দিয়েছ। সিলেটের সবচেয়ে বড় পাইকারি আড়ৎ বাজার কালিঘাটে দেখা দিয়েছে দাম বৃদ্ধি ও সংকট মুহুর্ত। খুচরা মুদির দোকানদাররা অগ্রীম টাকা দিয়ে পাচ্ছেন না সয়াবিন তেল। তেল সংকটে ভোক্তভোগীর শিকার সাধারণ মানুষ। সিলেটে বিশেষ করে ২ ও ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল পেতে দোকানে-দোকানে দৌড়ঝাঁপ করতে হচ্ছে ক্রেতাদের। আর ১ ও ৩ লিটার বোতলজাত তেল বিক্রি হচ্ছে বেশী দামে।

জানা গেছে, তেলের সংকট কাটাতে গেল ডিসেম্বর মাসের শুরুতে ভোজ্যতেলের দাম বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ কওে দেয় সরকার। দাম বাড়ানোর পর সংকট কেটে যাবে বলে আশা করা হলেও বাস্তবে তা হয়নি। উল্টো আরও অস্থির হয়েছে। দেশের বিভিন্ন বাজার থেকে সয়াবিন তেল হঠাৎ উধাও হয়ে গেছে। বিশেষ করে এক ও দুই লিটারের বোতলের সরবরাহ নেই বললেই চলে।
সাধারণ ক্রেতাদের অভিযোগ, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বোতলজাত তেল কেটে ড্রামে ভরে খোলা তেলের দামে বিক্রি করছেন, এতে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দাম গুণতে হচ্ছে। ভোক্তারা সঠিক সরবরাহ নিশ্চিত এবং তেলের বাজারে স্বচ্ছতা আনতে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন তারা।

ভোজ্যতেলের খুচরা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, দেশের বৃহৎ ভোগ্যপণ্যের বাজার চাক্তাই খাতুনগঞ্জের আমদানিকারকরা সিন্ডিকেট কওে ভোজ্যতেলের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেন। তারা চাহিদার অর্ধেকও সরবরাহ করছে না। ফলে খুচরা বাজারে তেলের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হচ্ছে এবং বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।

এ কারণে মূলত হু-হু করে দাম বাড়ছে। অলিগলিতে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ২০০ টাকায় এবং নগরীর বড় বাজারগুলোতে ১৮০-১৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বোতলজাত দুই লিটার ৩৮০ টাকা, তিন লিটার ৫৬০ টাকা এবং পাঁচ লিটার ৮৮০-৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এজন্য সয়াবিন তেলের সাথে অপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে বাধ্য করাকে দায়ী করছেন দোকানীরা। তারা বলছেন, ১০ হাজার টাকার তেল কিনলে সাথে ২০ হাজার টাকার চিনিগুড়া চাল, সরিষার তেল, আটা ও সুজি কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে। অথচ বাজারে এসব পণ্যের চাহিদা খুব কম।

এদিকে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক না হওয়ায় হতাশ ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই। দোকানিরা বলছেন, কোম্পানি প্রতিনিধিদের বারবার বলেও চাহিদা অনুযায়ী তেল পাওয়া যাচ্ছে না। আবার কোন-কোন কোম্পানি সামান্য পরিমাণ তেল দিলেও ক্রেতা পর্যায়ে চাহিদা নেই এমন পণ্য গছিয়ে দিচ্ছে। তাদের দাবি, বর্তমানে পাইকারি পর্যায়ে ব্যারেল প্রতি তেলের দাম কিছুটা কমেছে। তারপরও মিল থেকে তেলের সরবরাহ এখনও স্বাভাবিক করছে না কোন কোম্পানিই।

বর্তমানে সিলেটের বাজাওে বোতলজাত সয়াবিন তেল লিটার প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯৫ টাকা পর্যন্ত। আর পাঁচ লিটারের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সয়াবিন তেল বিক্রি মূল্য ৯শ’ টাকা পর্যন্ত। প্রায় দুই মাস আগে সরকার লিটার প্রতি ৮টাকা দাম বাড়ালেও সয়াবিন তেলের কৃত্রিম সংকট দূর করা সম্ভব হয়নি।

সিলেট নগরীর কালিঘাটের ভোজ্যতেলের পাইকারী বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান আমিন ব্রাদার্সের স্বত্তাধিকারী আমিন উদ্দীন বলেন, কোম্পানীগুলো চাহিদামতো তেল সরবরাহ করতো পারছেনা। এতে আমরা খুচরা বিক্রেতাদেও তোপের মূখে পড়ছি। এছাড়া সয়াবিন তেলের সাথে অগুরুত্বপূর্ণ পণ্য কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে। ফলে পাইকারী ব্যবসায়ীগণকে বাধ্য হয়ে কোম্পানীগুলোর অন্যায্য দাবী মেনে নিতে হচ্ছে। এর প্রভাব দামের উপর পড়ছে। তবে আমরা নির্দিষ্ট মূল্যেই তেল বিক্রি করছি।

এ ব্যাপারে সিলেটের সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তা আবুল সালেহ মোহাম্মদ হমায়ুন কবির বলেন, সয়াবিন তেল নিয়ে সংকটের খবরটি আমরা পেয়েছি। ইতোমধ্যে আমরা এই রিপোর্ট জেলা প্রশাসক, ভোক্তা অধিকার ও কৃষি বিপণন অধিদপ্তরে প্রেরণ করেছি। ব্যবসায়ীরাও জানিয়েছেন কোম্পানীগুলো সয়াবিন তেলের সাথে বিক্রেতাদের অন্যান্য পণ্য কিনতে বাধ্য করছে। এর প্রভাব পুরো বাজারের উপর পড়ছে। এরপরও গায়ের দাম থেকে তেলের দাম বেশী রাখার সুযোগ নেই। প্রমাণ পেলে আমরা ব্যবস্থা নিবো।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন

আপনি ও পছন্দ করতে পারেন