ডার্ক মোড
Thursday, 03 July 2025
ePaper   
Logo
ধার-দেনা করে চলেছি, এবার ঘুরে দাঁড়াব বলছেন জেলেরা

ধার-দেনা করে চলেছি, এবার ঘুরে দাঁড়াব বলছেন জেলেরা

সাব্বির ইবনে ছিদ্দিক (হাতিয়া) নোয়াখালী

৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে আগামী বুধবার (১১ জুন) মধ্যরাত থেকে বঙ্গোপসাগরে পুনরায় মাছ ধরা শুরু হচ্ছে। এ উপলক্ষে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার উপকূলজুড়ে ফিরেছে কর্মচাঞ্চল্য। উপজেলার ২০টি মৎস্যঘাটে প্রায় লক্ষাধিক জেলে এখন গভীর সমুদ্রে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

নিষেধাজ্ঞার এই দীর্ঘ সময়টি ছিল জেলেদের জন্য চরম কষ্টের। আয়-রোজগার বন্ধ থাকায় অধিকাংশ জেলে ও ট্রলার শ্রমিকরা পড়েন অর্থনৈতিক সংকটে। এখন আবার মাছ ধরার সুযোগ পেয়ে তারা আশাবাদী হয়ে উঠেছেন।

সূর্যমুখী ঘাটের  নবীর উদ্দিন মাঝি  বলেন, "দীর্ঘদিন বসে ছিলাম। কোনো আয় ছিল না, ধার-দেনা করে চলেছি। এখন সাগরে গিয়ে ভালো মাছ পেলে কিছুটা ঘুরে দাঁড়াতে পারব।"

একই ঘাটের হাসান মাঝি  অভিযোগ করে বলেন, "প্রকৃত অনেক জেলে সরকারি প্রণোদনা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। তালিকায় দেখা গেছে, অনেক অপ্রাসঙ্গিক নাম আছে, অথচ প্রকৃত জেলেরা বাদ পড়েছে। আমরা চাই প্রণোদনার তালিকায় প্রকৃত জেলেদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হোক।"

জেলে আমজাদ হোসেন জানান, "আগামীকাল গভীর সমুদ্রে যাবো। ট্রলারে বরফ, জাল ও অন্যান্য সরঞ্জাম তোলা হয়েছে। গতকাল ট্রলারের রং করার কাজও শেষ হয়েছে।"

হাতিয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. ফাহাদ হাসান বলেন, "নিষেধাজ্ঞার সময় ইলিশসহ অন্যান্য সামুদ্রিক মাছের প্রজনন বেড়েছে। ফলে এবার ইলিশের ঘনত্ব বাড়বে বলে আমরা আশা করছি। নিয়মিত নজরদারি করে আমরা নিশ্চিত হয়েছি যেন কেউ নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ না করে।"

তিনি আরও জানান, নিরাপত্তা নিশ্চিতে কোস্ট গার্ড, নৌ-পুলিশ ও মৎস্য অধিদপ্তর একযোগে কাজ করছে।

 

উপকূলের মানুষের কাছে ইলিশ মৌসুম শুধু মাছ ধরার সময় নয়, এটি তাদের জীবিকার অংশ। তাই দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সমুদ্রে নামার সুযোগ পেয়ে উপকূলের জেলেদের চোখে এখন একটাই স্বপ্ন—ভরা মৌসুমে ফিরবে রুপালি দিন, ঘুরে দাঁড়াবে উপকূলীয় অর্থনীতি।

 

উল্লেখ্য, সামুদ্রিক মাছের প্রজনন ও মজুদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার প্রতিবছর ২০ এপ্রিল থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করে। তবে এবার জেলেদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞার সময় এগিয়ে এনে ১৪ এপ্রিল থেকে ৫৮ দিনের জন্য তা কার্যকর করা হয়। এ সময় সব ধরনের সামুদ্রিক মাছ ধরা ও গভীর সমুদ্রে ট্রলার চলাচল সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ ছিল।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন