ডার্ক মোড
Monday, 29 April 2024
ePaper   
Logo
দোহারে সড়ক দখলে নিয়ে হাট-বাজার

দোহারে সড়ক দখলে নিয়ে হাট-বাজার

দোহার (ঢাকা) প্রতিনিধি

ঢাকার দোহার উপজেলার জয়পাড়া ও মেঘুলা হাট-বাজারের রাস্তার অর্ধেকটা দখল করে চলছে বেচাকেনা! সরকার দলীয় নেতাকর্মী,স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও কাউন্সিলরের যোগসাজশে অবৈধভাবে যেখানে সেখানে ভ্রাম্যমান দোকান বসিয়েছে। ফলে সড়কে বাড়ছে যানজট ও ভোগান্তি বাড়ছে পথচারী এবং যানবাহনে চলাচলকারীদের।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,উপজেলার থানার মোড় হাইওয়ে সড়কের পাশের ফুটপাতের প্রায় পাচঁ ফুট প্রশস্ত ফুটপাত দখল করে অবৈধ ভ্রাম্যমান বসিয়েছে। এমনকি রাস্তায়ও দোকানপাট বসছে। জয়পাড়া থানার মোড় হাইওয়ে সড়কের পাশে ফলের দোকান, মোবাইলের সিমের দোকান, চা-পান সিগারেটের দোকান,খাবারের হোটেল,শাক-সবজির দোকানসহ এমন কোন জিনিষ নাই যে এখানে পাওয়া না যায়। তার সাথে যোগ হয়েছে বাস ষ্টান্ড,অটো ষ্টান্ড। মাত্র ১০০ গজ দুরেই রয়েছে দোহার থানা কার্যালয়।থানা কার্যালযের পরেই রয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে,উপজেলা পরিষদ,ডাক-অফিস,মডেল হাইস্কুল,বালিকা স্কুল এন্ড কলেজ,ব্যাংকপাড়া,বড় বড় শপিং কমপ্লেক্স ও জয়পাড়া অনার্স কলেজ।এ সকল প্রতিষ্ঠানে সেবা নিতে আসা জনসাধারন পড়েন চরম ভোগান্তিতে।সারা সড়ক জুড়েই অবৈধ দোকানপাট।

এ বিষয়ে কথা হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ইব্রাহীম খলিল সবুজের সাথে।তিনি বলেন, পুলিশ মাঝেমধ্যেই উচ্ছেদ করেন।তবে আবার টাকা দিলেই সব ঠিক হয়ে যায়।এভাবেই সড়ক ও ফুটপাত দখল করেই তারা বছরের পর বছর ব্যবসা করে আসছেন। এ বিষয়ে যারা এই অবৈধ দোকান বসিয়েছেন,তারা নিজের পরিচয় দিয়ে তেমন কিছুই বলতে চায় না।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকায় দেখা হয় কলম সৈনিক অলি আহমেদের সাথে। সেখানেও দেখা যায়,ফুটপাত দখল করে বিভিন্ন ভ্রাম্যমান দোকান বসিয়েছেন দোকানীরা। অবৈধ দোকানের বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক দোকানীরা বলেন, দোহার পৌরসভার মাধ্যমে আমরা বসেছি।যদি কিছু বলার থাকে সেখানে গিয়ে বলেন।

একই অবস্থা উপজেলার মেঘুলা বাজার সড়কে। এখানে প্রতিদিনই সৃষ্ট যানজট দেখেও না দেখার ভান করছে দোকানিরা। একটু এগোলেই চোখে পড়ে সারি সারি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও অটো রাস্তা দখল করে বানিয়ে নিয়েছে নিজেদের স্ট্যান্ড। ফলে একই রাস্তার দুই জায়গায় দখল হওয়ায় যান চলাচলের কোনো জো নেই। উপজেলার মেঘুলা বাজার সংলগ্ন দোহার টু ঢাকার আন্ত: মহাসড়কে গিয়ে দেখা যায়, মালিকান্দা-মেঘুলা স্কুল এন্ড কলেজ সড়ক থেকে কবি নজরুল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পর্যন্ত প্রায় আধা-কিলোমিটার পর্যন্ত সড়কটিতে ভ্রাম্যমান দোকান অবৈধ দখলের কারণে যানবাহন চলাচল স্থবির হয়ে পড়েছে। বিকালের পর সড়কের অর্ধেক অংশ দখল করে বসে ভ্রাম্যমান দোকানিরা।

বিশেষ করে মালিকান্দা-মেঘুলা স্কুল কলেজ থেকে শুরু করে মেঘুলা ভুমি অফিস সড়ক,আবার ভুমি অফিস সড়ক থেকে শুরু করে মেঘুলা হাট-বাজার হয়ে কবি নজরুল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন সড়ক পর্যন্ত বসে এই ভ্রাম্যমান দোকান। এরা সবাই দোকানের সামনে পথচারীদের চলাচল বন্ধ করে দোকান ভাড়া বসিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে স্কুল কলেজের সামনেও চা-সিগারেটের দোকান বসানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা নিয়ন্ত্রন করে দুই গ্রæপ মেঘুলা বাজার থেকে চাঁদা আদায় করে তিন গ্রুপ।ভুমি অফিস সড়কে চাঁদা তোলে প্রশাসনের নামে।ক্ষমতাসীন দলের নামে বাজার থেকে চাঁদা আদায় করে বাদল মোল্লা। বনিক সমিতির নামে চাদাঁ আদায় করেন সমিতির নেতারা।সব মিলিয়ে সবাই ভালো বানিজ্য চুক্তিতে মেতে উঠেছে।দূর্ভোগে পড়েছেন সাধারন মানুষ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শর্তে একাধিক ব্যক্তিরা অভিযোগ করেছেন বাস্তবে প্রশাসনের তেমন কোনো ধরনের তৎপরতা চোখে পড়েনি বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ও বাজার সংশ্লিষ্টরা। তারা আক্ষেপ করেই বলেন দলের নামে চলছে ধা›ঁদাবাজী। মেঘুলা-শিমুলিয়া খাল ভরাট করে গড়ে তুলেছে ব্যানিজ্যিক সেন্টার। আর এমপি মহোদয়ের অনুমোদন দেওয়া খাল খননের মাটি বেচেঁ নারিশা ও জয়পাড়া ইউনিয়নের নেতারা গাড়ি কিনেছেন। আর সাধারন মানুষ খাল কাটার মাটি বেচা-কেনা করতে মাহেন্দ্র ও ট্রাকে নারিশার অনেক সড়ক ভেঙ্গে চলাচলের জন্য অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

অপরদিকে ঢাকা টু দোহার জয়পাড়া থানার মোড় ও মেঘুলা নামক সড়কে প্রতিদিনই আটকে থাকে শত শত গাড়ি। কারোই কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই সেদিকে। সড়কের জায়গার পাশে ফুটপাত দখল করে উপজেলা পর্যায়ে নেতাদের নাম ভাঙ্গিয়ে ভ্রম্যমান দোকান বসিয়ে দেদারসে বানিজ্য চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) মুন্সিগঞ্জ বিভাগের সাথে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নাই। এ বিষযে নারিশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন বলেন,বিষয়টি আমার জানা নেই। প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সংগ্রহ করে সমাধানের চেষ্টা করবো। এ বিষয়ে জয়পাড়া বাজার সমিতির সাধারন-সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন মাঝি বলেন, ঈদকে সামনে রেখে নিন্ম আয়ের মানুষেরা কিছু দোকান বসিয়েছে এই বিষয়টা আমি জানি।

এবিষয়ে দোহার পৌর মেয়র মো.আলমাছ উদ্দিন জানান,ঈদ পরবর্তী সময়ে ফুটপাত দখলমুক্ত করতে অভিযান পরিচালনা করা হবে।

অপরদিকে উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী কর্মকর্তা মো.জাকির হোসেন বলেন প্রতিনিয়ত সড়কের ওপর বাজার উচ্ছেদে কাজ করে যাচ্ছেন তারা। আন্ত:মহাসড়কের ওপর বাজার না বসাতে আমরা কঠোরভাবে বলা আছে। আটটি বাজার সরকারিবিধি অনুযায়ী উপজেলা প্রশাসন ইজারা দিলেও, প্রকৃতপক্ষে অন্যন্য বাজারের নামে নির্দিষ্ট জমি নেই। আর এই সুযোগটা নিয়ে দখল করে দোকান বসান।দখলের বিষয় জানতে পারলে অভিযানের মাধ্যমে উচ্ছেদ করা হবে।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন