
জয়পুরহাটে সৎ মায়ের হাতে বলি শিশু রুহি, সেপটিক ট্যাংক থেকে লাশ উদ্ধার
মোয়ান্নাফ হোসেন শিমুল ,জয়পুরহাট
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় সৎ মায়ের হাতে বলি হয়েছে ৪ বছরের শিশু রদিয়া আক্তার রুহি। ছয় দিন ধরে নিখোঁজ থাকার পর শুক্রবার (৩০ মে) রাত ১১টার দিকে উপজেলার মাত্রাই ইউনিয়নের হিমাইল গ্রামের নিজ বাড়ির সেপটিক ট্যাংক (পায়খানা) থেকে শিশু রুহির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ ।
এর আগে শিশু রুহি নিখোঁজ থাকায় থানায় লিখিত অভিযোগ করলে রুহির সৎ মা সোনিয়া আক্তার, সৎ নানা (সোনিয়ার পিতা) জিয়া কসাই ও শিশু রুহির চাচাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়। সে সময় তাদের দেওয়া তথ্যর ভিত্তিতে হিমাইল গ্রামে শিশু রুহির বাবা আব্দুর রহমানের বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। এরপর নিজ বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে শিশু রুহির মরদেহ উদ্ধার করে তারা।
এ ঘটনায় কালাই থানা পুলিশ রুহির সৎ মা সোনিয়া, আপন চাচা রনি, বাবা আব্দুর রহমান এবং সৎ নানা জিয়াউর রহমানসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, নিহত শিশু রুহির পিতা আব্দুর রহমান হিমাইল গ্রামের আমলের মেয়ে আরজিনাকে গত ৮ বছর আগে প্রথম বিয়ে করেন। সে পক্ষের সন্তান রুহি। রুহির মা আরজিনার সাথে বাবা আব্দুর রহমানের পারিবারিক মিল না হওয়ায় গত দুই বছর আগে বিচ্ছেদ হয় তাদের। এরপর থেকে আরজিনা মেয়ে রুহিকে নিয়ে তার বাবা আলমের বাড়িতেই থাকে। পরে আরেকটি বিয়ে করে আব্দুর রহমান। রুহির নানার বাড়ি ও বাবার বাড়ি পাশাপাশি হওয়ায় প্রায় প্রতিদিন বাবার বাড়িতে যাতায়াত করতো । গত ২৪ মে সকালে রুহি তার বাবা আব্দুর রহমানের বাড়িতে গেলে আর না ফেরায় মা আরজিনা প্রথমে সৎ মা ও চাচাকে জিজ্ঞেস করলে তারা জানায়, তার দাদা-দাদি না থাকায় তাকে আবার পাঠিয়ে দিয়েছি। কিন্তু, রাত পর্যন্ত মেয়েকে অনেক খোঁজাখুঁজি করে কোথাও না পেয়ে পরদিন (২৫ মে) কালাই থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
জিডির পর পুলিশ তদন্ত শুরু করে এবং সন্দেহভাজন হিসেবে রুহির সৎ মা সোনিয়া, চাচা রনি এবং সৎ নানা জিয়া কসাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। একপর্যায়ে তারা স্বীকার করেন, শিশুটিকে হত্যা করে বাড়ির টয়লেটের ভেতরে ফেলে দিয়েছেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
স্থানীয়রা বলছেন, রুহির বাবা সবসময় ধান কাটার কাজে মাঠে ব্যস্ত এবং দাদা-দাদি গরুর ঘাস কাটা নিয়ে মাঠে যায় আর এই সময়ে শিশু রুহি তার বাবার বাড়িতে গেলে সৎ মা এবং আপন চাচার পরকীয়ায় দেখে ফেলায় তাকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে পায়খানার ট্যাংকির ভিতরে বস্তা বন্দী করে রেখেছে। শিশু রুহিকে তার সৎ মা মোটেও সহ্য করতে পারেননা।
তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছে এলাকাবাসী।
কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন বলেছেন , এ ঘটনায়
৪ জনকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত শেষে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন
আপনি ও পছন্দ করতে পারেন
সর্বশেষ
জনপ্রিয়
আর্কাইভ!
অনুগ্রহ করে একটি তারিখ নির্বাচন করুন!
দাখিল করুন