ডার্ক মোড
Thursday, 13 March 2025
ePaper   
Logo
গঙ্গামতি সৈকতে অজস্র মৃত ঝিনুক, সৌন্দর্যের আড়ালে পরিবেশ নিয়ে উদ্বেগ

গঙ্গামতি সৈকতে অজস্র মৃত ঝিনুক, সৌন্দর্যের আড়ালে পরিবেশ নিয়ে উদ্বেগ

সৌমিত্র সুমন, পায়রা বন্দর (পটুয়াখালী)

পটুয়াখালীর পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটার চর গঙ্গামতি সমুদ্র সৈকতে প্রতিনিয়ত ভেসে আসছে অগণিত ছোট ছোট মৃত সাদা ঝিনুক। সৈকতের বিশাল এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে থাকা এসব ঝিনুকের খোলস একদিকে সৌন্দর্য বাড়ালেও, অন্যদিকে পরিবেশবিদদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। শুধু চর গঙ্গামতি সৈকতই নয়, দীর্ঘ ২২ কিলোমিটারজুড়ে বিভিন্ন স্থানে এ বছরের তুলনায় অনেক বেশি মৃত ঝিনুকের খোলস ভেসে আসতে দেখা যাচ্ছে।

চর গঙ্গামতি এলাকার জেলে আবজাল হোসেন জানান, এক দশক আগেও সৈকতে বড় আকারের ঝিনুক ভেসে আসতো, যা সংগ্রহ করে বিক্রি করা যেত। কিন্তু এবার গুড়ি গুড়ি ছোট আকারের ঝিনুকের খোলস সৈকতে জমছে। দেখতে সুন্দর লাগলেও এগুলো মাটির সঙ্গে মিশে যাচ্ছে বা সমুদ্রের ঢেউয়ে আবার ভেসে যাচ্ছে।

একই এলাকার জেলে মাশারেফ হোসেন বলেন, "আগে এত পরিমাণ ঝিনুকের খোলস পড়তে দেখিনি। এবছর তুলনামূলকভাবে বেশি মনে হচ্ছে। এগুলো আকারে ছোট হওয়ায় কোনো কাজে আসে না।

পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় কাজ করা স্থানীয় পরিবেশ কর্মী ও সাংবাদিক মেজবাহ উদ্দিন মাননু বলেন, "প্রতি বছরই সৈকতে কিছু মৃত ঝিনুক ভেসে আসে, তবে এবারের পরিমাণ আশঙ্কাজনকভাবে বেশি। কেন এভাবে প্রতিবছর ঝিনুক ভেসে আসছে, তার বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে গবেষণা করা দরকার। পাশাপাশি ঝিনুকের খোলস সৈকতের পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কি না, বা এগুলো সংগ্রহ করে কাজে লাগানো যায় কি না, তা নিয়েও গবেষণা হওয়া উচিত।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট পরিচালিত খেপুপাড়া নদী উপকেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা অভিজিৎ বসু জানান, "সমুদ্রের পানিতে কয়েকটি স্তর থাকে, যেখানে শামুক ও ঝিনুক নিচের স্তরে অবস্থান করে। সমুদ্র পৃষ্ঠের তাপমাত্রা বৃদ্ধি, পানির লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়া এবং পরিবেশগত নানা কারণে ঝিনুক মরে তীরে ভেসে আসতে পারে। তবে ল্যাব গবেষণা ছাড়া কুয়াকাটা সৈকতে ঝিনুকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ধারণ করা সম্ভব নয়।

সৈকতে মৃত ঝিনুকের এই অস্বাভাবিক উপস্থিতি একদিকে পর্যটকদের জন্য নতুন এক আকর্ষণ তৈরি করেছে, অন্যদিকে পরিবেশবিদদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতির প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটন এবং সম্ভাব্য পরিবেশগত প্রভাব নির্ণয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত গবেষণা ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন

আপনি ও পছন্দ করতে পারেন