ডার্ক মোড
Thursday, 13 March 2025
ePaper   
Logo
নাঃগঞ্জ মহানগরীতে ভেজাল  ইফতারের ছড়াছড়ি

নাঃগঞ্জ মহানগরীতে ভেজাল ইফতারের ছড়াছড়ি

 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, নারায়ণগঞ্জ 

পবিত্র মাহে রমজানের দ্বিতীয় সপ্তাহ চলছে। বিকেলের আগেই ফুটপাতে মৌসুমী ইফতার বিক্রেতার দোকান শুরু হয়। নারায়ণগঞ্জ শহরে ইফতার সামগ্রীর যথেষ্ঠ চাহিদার কারণেই ফুটপাতে মৌসুমী বিক্রেতারা ইফতার সামগ্রী বিক্রি করেন। কথা উঠেছে এ সকল ইফতার সামগ্রী কতটা স্বাস্থ্যসম্মত। ইফতারে রং ও ক্ষতিকর কেমিক্যাল ব্যবহারের বিরুদ্ধে তৎপর জেলা প্রশাসন। তবুও ইফতারে রং ও কেমিক্যাল এর ব্যবহার বন্ধ হয় না।

গত বছর প্রথম রোজা থেকেই নগরীতে ভেজাল বিরোধী অভিযান চলেছে। তখনকার নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জানিয়েছিলেন, আমরা রমজানের শুরু থেকেই এ বিষয়ে সোচ্চার। ২০২৩ সালে জেলায় ২০ টি ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালিত হয়েছে। জরিমানা আদায় হয়েছিল ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা। প্রতিবছর এই অভিযান চলমান থাকে।

তাছাড়া গতবছর বাজার মনিটরিং ও ভেজাল বিরোধী ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনায় মাঠে প্রতিদিন ৩টি টীম কাজ করেছিল। প্রতিদিন অন্তত দু’টি অভিযান পরিচালিত হত। প্রতিবছর রমজান মাসে জেলা প্রশাসনের অভিযান সত্ত্বেও খাদ্যে ভেজাল কমেনা বলে অভিযোগ উঠেছে সুধীমহলের পক্ষ থেকে। পুষ্টিবিদরা বলছেন, ভেজাল ইফতার সামগ্রীতে ক্যানসারসহ নানা রোগের মারাত্মক ঝুঁকি আছে।

 ১১ রোজা চলছে। এখনো জেলা প্রশাসন ইফতার সামগ্রীতে ভেজালের বিষয়ে কোন অভিযান শুরু করেনি। আপাতত কঠোরভাবে বাজার মনিটরিং চলছে। শহরবাসী ভেজাল ইফতার সামগ্রীর বিষয়ে মোবাইল কোর্টের অভিযানের দাবি করেছেন। তাদের মতে, আমরা কষ্ট করে সিয়াম সাধনা করি আর কিছু লোক জেনেবুঝে রোজাদারদের ক্ষতি করছে ইফতার সামগ্রীতে ক্ষতিকর কেমিক্যাল মিশিয়ে। এতেকরে আমাদের স্বাস্থ্যগত সমস্যা হচ্ছে। আমরা ধীরে ধীরে ক্যান্সারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।

 

গতবছর ১ রমজান মাস শুরু পর ৬ মার্চ কনজ্যুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর নারায়ণগঞ্জ জেলার নেতৃবৃন্দ চাষাড়ায় ইফতারীর দোকানে অভিযান চালিয়ে ছিল। মনিটরিংয়ের নেতৃত্ব দিয়েছেন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন কমিটির সদস্য ও ক্যাব, নারায়ণগঞ্জে যুগ্ম সম্পাদক বিল্লাল হোসেন রবিন। উপস্থিত ছিলেন, ক্যাব, জেলা কমিটির সদস্য রোকনুজ্জামান মিঠু, ক্যাব, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা কমিটির সভাপতি ডা. গাজী খায়রুজ্জামান প্রমুখ।

চাষাড়া থেকে মিশনপাড়া পর্যন্ত নবাব সলিমুল্লাহ সড়কের দুইপাশে সুগন্ধা বেকারী, সুগন্ধা রেস্টুরেন্ট, সুমাইয়া বিরিয়ানী, এটেল মাটি রেস্টুরেন্ট, ফুডল্যান্ড, সুলতান ভাই রেস্টুরেন্ট, সুইটনেশন, প্যারিস বাগেত, বৈশাখী রেস্টুরেন্টসহ ছোট ছোট ইফতারের দোকান মনিটরিং করা হয়। এ সময় দোকানীদের তৈরীকৃত ইফতার ঢেকে রাখা এবং সরবরাহ করার সময় স্টাফদের মাথায় ক্যাপ, মুখে মাস্ক, হাতে গ্লাভস লাগানোর জন্য বলা হয়। খোলাভাবে তৈরীকৃত ইফতারী বিক্রি করা যাবে না বলে জানানো হয়। পাশপাশি কোন অবস্থাতেই যেন বাসি ইফতার বিক্রির চিন্তা করা না হয়। এসব নিয়ম না মানলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে কি কি শাস্তি হতে পারে সেই সংক্রান্ত হ্যান্ডবিল বিতরণ করা হয় ইফাতার বিক্রেতাদের মাঝে। এছাড়া চাষাড়া মার্ক টাওয়ারের পাশে ও প্রেসিডেন্ট রোডে দুটি ইফতারী বিক্রির দোকান মনিটরিং করা হয়। মনিটরিং টিম দেখে অনেকেই পাতলা প্ল্যাস্টিক দিয়ে তাদের ইফতারী ঢেকে দেন।

জানা গেছে, ইফতারি পণ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় সোডিয়াম হাইড্রোসালফাইড (কস্টিক সোডা) ও সোডিয়াম সাইক্লামেট। জিলাপিসহ বিভিন্ন ইফতারি আইটেমে এসব রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়। যা মানবদেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর। তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক রং ব্যবহার করা হয় ইফতারি পণ্যে। শুধুমাত্র বেশি সুস্বাদু ও আকর্ষণীয় দেখানোর জন্য এসব কৃত্রিম রং ও রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আর এ কারণে ইফতারির সব খাবার অনিরাপদ হয়ে উঠে।

সরেজমিন নগরীর চাষাড়া, কালিরবাজার, দ্বিগুবাবুর বাজার, উকিলপাড়া, ডিআইটি মার্কেট, লঞ্চ টার্মিণাল, টানবাজার, নিতাইগঞ্জ ও আশপাশ এলাকা ঘুরে ঘুরে দেখা যায়, সেখানে কোথাও চিকেন টিক্কা, শিক কাবাব, জিলাপিসহ নানা পদে খোলাবাজারে পাওয়া কৃত্রিম রং দেদার ব্যবহার করা হয়। কাবাব পোড়ানোর স্থানের পাশেই রাখা হয়েছে রং ও মসলামিশ্রিত পাত্র। সেখান থেকে তা বারবার মাংসে ব্যবহার করা হয়।

এ বছর গলাচিপা এলাকায় একটি ওয়াজ মাহফিলের অনুষ্ঠানের পাশেই জিলাপি দোকানের একজন কর্মচারী মফিজুলকে দেখা গেল, খেয়াল খুশি মতো জিলাপির খামিতে রং মেশাতে। জিজ্ঞেস করতেই বললেন, এই রংতো আমরা সবসময়ই ব্যবহার করি। একইভাবে কৃত্রিম এসব রং ছোটবড় সব হোটেলের চিকেন গ্রিল তৈরিতেও ব্যবহার করা হচ্ছে। নগরীর যে কোনো এলাকার ইফতার বাজারে গেলেই এসব কৃত্রিম রং ব্যবহারের চিত্রটি চোখে পড়ে রমজানের সময়। রোজা শুরুর পর থেকে ২নং রেলগেইট, কলেজ রোড ও চাষাড়ার ইফতার বাজার-সবখানে মাংসের পদে অতিরিক্ত তেল ও মসলার ছড়াছড়ি চোখে পড়ছে।  

নগদ টাকাসহ ২২ লাখ টাকার মাল লুট বন্দরে পোশাক তৈরি কারখানায় দুর্ধর্ষ ডাকাতি

 

নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর উপজেলায় আল ফাহাদ ট্রেডলাইন্স নামে এক পোশাক তৈরি কারখানায় দুর্ধর্ষ ডাকাতি ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (১২ মার্চ) ভোরে মদনপুর ইউপির দেওয়ানবাগ এলাকায় এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় মুখোশদারি সংঘবদ্ধ একটি ডাকাত দল লুটে নেয় নগদ ১৩ লাখ টাকা সহ ২২ লাখ টাকার মালামাল ।

এ খবর পেয়ে নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খ সার্কেল) আসিফ ইমাম ডাকাতির ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় ডাকাতির ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের আশ্বস্ত করেন তিনি।

 কারখানার স্টোর কিপার আব্দুল হান্নান জানান, ভোর সাড়ে ৪ টার দিকে কারখানার পিছনের দরজা দিয়ে ১০/১২ জনের একটি মুখোশদারি ডাকাতদল অস্ত্রের মুখে সিকিউরিটি গার্ডদের জিম্মি করে কারখানায় প্রবেশ করে। তার পর গার্ডদের হাত পা বেধে সিসি ক্যামেরা ও মেশিনারিজ খুলে ডাকাতদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। পরে অফিস কক্ষগুলোতে ঢুকে ভল্ট, লকার ও টেবিলের ড্রয়ার ভেঙ্গে নগদ ১৩ লক্ষ ২০ হাজার টাকা, ৩টি কম্পিউটার, ১টি সিসিটিভির মনিটর, স্টোরেজ মেশিন, ১টি জেনারেটর, ৬টি মোবাইল সেট, ৪ লক্ষ টাকা মূল্যের ১টি গরু ও যন্ত্রপাতি সহ মোট ২২ লক্ষ টাকার মালামাল লুটে নিয়ে যায়।

 কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মান্নান মিয়া বলেন, গত বছরের ৩ জুলাই একই কায়দায় ডাকাতদল অত্র প্রতিষ্ঠান থেকে ২০ লক্ষাধিক টাকা মূল্যের মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। একের পর এক ডাকাতির ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন

আপনি ও পছন্দ করতে পারেন