খুলনায় আতঙ্কের অন্য নাম পিস্তল সোহেল
রূপসা (খুলনা) প্রতিনিধি
খুলনায় ঠিকাদারি সমিতি, এলজিইডি সহ সংশ্লিষ্ট সকল সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারী, জনপ্রতিনিধি ও জনসাধারনের কাছে এক আতঙ্কের অন্য নাম পিস্তল সোহেল।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায় খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় নিজ খামারে তার বাড়ি। কথায় কথায় সিনেমা স্টাইলে পিস্তল বের করে মানুষের মাথায় ঠেকিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করা তার কাজ। তিনি বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে নিজেকে খুলনার সবচেয়ে বড় ক্ষমতাসীন ঠিকাদার বলে পরিচয় দিতেন। এবং শেখ হাসিনা তার আত্মীয় শেখ পরিবার তার সেল্টারদাতা এটা বলে বিভিন্ন প্রশাসনের মাধ্যমে নিজেকে জাহির করে বলতেন সে শেখ পরিবারের লোক। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে চেনেন এমন টা দাবি ছিলো এই পিস্তল সোহেলর।
শেখ সোহেল ও শেখ জুয়েল কে যখন তখন ফোন করে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের ধরিয়ে দিতেন। যেখানেই ঠিকাদারি কাজ করতেন সেখানেই গিয়ে সে প্রথমেই তার ক্ষমতার তাণ্ডব লীলা শুরু করতেন এবং আতঙ্ক সৃষ্টি করতেন এলাকার প্রশাসন ও জনগনকে মধ্যে। সেখানকার সরকারি কর্মকর্তা বিশেষ করে ইঞ্জিনিয়ারদের সাথে প্রচুর খারাপ ব্যবহার করতেন। ইঞ্জিনিয়ারদের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে ভয় প্রদর্শন করে নিম্নমানের কাঁচামাল দিয়ে ঠিকাদারি কাজ করতেন। এ নিয়ে এলাকাবাসী কোন কিছু বললেই পুলিশ দিয়ে এলাকার লোকজনকে ধরিয়ে নিয়ে ক্রসফায়ারের ভয় দিতেন।
এমন নজির রয়েছে অনেক। সূত্রে মতে জানা যায় খুলনা জেলা রূপসা উপজেলার কাজদিয়া থানার মোড় থেকে আলাইপুর বাজার রাস্তার পিঁচের কাজ করাচ্ছিলেন পিস্তল সোহেল। নিম্নমানের ইট খোয়া এবং ধুলোবালি দিয়ে রাতে কাজ পরিচালনা করেছিলেন। পিঠাভোগ গ্রামের আব্দুস সাত্তার খানের ছেলে মোহাম্মদ ইউনুস বাধা প্রদান করে, এমন নির্মাণের কাজ না করতে পরামর্শ দেন। তৎকালীন রূপসা থানা অফিসার ইনচার্জ সরদার মোশারফ হোসেন কে দিয়ে মোঃ ইউনুস কে থানায় ধরিয়ে নিয়ে ক্রসফায়ারের ভয় দেখান এবং সাদা কাগজে সই করিয়ে পরিবারের কাছে মুক্তি দেন।
তাতে করে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয় পিস্তল সোহেলের বিরুদ্ধে কেউ আর কথা বলতে সাহস পায় না। আরো জানা যায় রূপসা থানা প্রকৌশলী মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান এমন নির্মানের কাঁচামাল দিয়ে রাস্তা করার পক্ষে ছিলেন না সে ক্ষেত্রে তার মাথায় এবং গালের ভেতর পিস্তল ঢুকিয়ে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করেন। তার ভয়ে ইঞ্জিনিয়ার এই সস্তা কাজের বিল করে দিতে বাধ্য হন। এমনও হাজার অনিয়ম এবং সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জন্য সোহেল ধীরে ধীরে পিস্তল সোহেল নামে পরিচিত হয়ে উঠেন খুলনা, বাগেরহাট জেলা সহ অন্য অন্য জেলায় ।
ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচার ও গণ হত্যাকারী শেখ হাসিনা পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার গণতান্ত্রিক ও যৌক্তিক আন্দোলনের বিপক্ষে প্রতিহিংসার কারনে ২৮ জুলাই ২০২৪ ইং তারিখ রাত একটা ত্রিশ মিনিট থেকে রাত তিনটা পর্যন্ত খুলনা আওয়ামীলীগ একযোগে পরস্পর যোগাযোগে শটগান কাটা রাইফেল বন্দুক পিস্তল রামদা ও চাইনিজ কোরাল লোহার রড চাপাতি সহ খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি এডভোকেট শফিকুল আলম সহ উপস্থিত সবাইকে খুন করার উদ্দেশ্যে মহাতান্ডব চালায়। এ সময় পিস্তল সোহেলের অগ্রনী ভূমিকা ছিলো । এই ঘটনা কে কেন্দ্র করে ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ ইং তারিখে মোঃ আসাদুজ্জামান হারুন বাদী হয়ে খুলনা বিচারিক আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ৪৬৯৪/২৪ উক্ত মামলার ৪৫ নম্বর আসামি এই পিস্তল সোহেল।
এ ব্যাপারে পিস্তল সোহেলের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করতে চাইলেও যোগাযোগ করা যায়নি তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।