কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য মৃত জেলিফিশ। গত শনিবার থেকে জোয়ারের পানিতে ভেসে আসতে থাকে বিভিন্ন সাইজের এ মৃত জেলিফিশ। দ্রুত সৈকত থেকে মৃত এ জেলিফিশ অপসারন করা না হলে কুয়াকাটার পরিবেশ বিপন্ন হওয়ার আশংকা করছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

কুয়াকাটার জেলে আলী মাঝি বলেন, সাগরে বর্তমানে একেক জন জেলের জালে ৫০/৬০ টি কিংবা তার চেয়েও বেশী জেলিফিশ ধরা পড়ছে। এতে জেলিফিশের আঠালো পদার্থের কারনে অধিকাংশ জেলের জাল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অনেকে জাল কেটে দিতে বাধ্য হচ্ছে।

কুয়াকাটা বঙ্গবন্ধু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিত্যানন্দ হাওলাদার জানান, সমুদ্র তটে বিক্ষিপ্ত ভাবে পড়ে থাকা জেলিফিশ দ্রুত অপসারন না করা হলে এগুলো পচেঁ গলে দূর্গন্ধ ছড়ানোর পাশাপাশি পরিবেশ বিপন্ন হওয়ার আশংকা রয়েছে।

মহিপুর মৎস্য আড়ৎদার সমবায় সমিতির সভাপতি দিদার উদ্দিন আহমেদ মাসুম জানান, জেলিফিশের কারনে খুব কম সংখ্যক জেলে সাগরে যাচ্ছে।

ওয়ার্ল্ড ফিস পটুয়াখালী জেলার সহযোগী গবেষক সাগরিকা স্মৃতি জানান, সাগরে কচ্ছপের প্রধান খাদ্য হচ্ছে জেলিফিশ। কচ্ছপ কমে যাওয়া জেলিফিশের আধিক্যর কারন। এছাড়াও তাপমাত্রা এবং বিভিন্ন কারনে পরিবেশ দূষনের কারনে জেলিফিশ অনেকটা উপরে উঠে এসেছে। তবে বিগত বছর গুলোর তুলনায় এ বছর অনেক বেশী দেখা যাচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম জানান, অমেরুদন্ডী জলজ প্রানীটি জেলিফিশ নামে পরিচিত হলেও এটি কোন মাছ নয়, জেলিসদৃশ প্রানীটি প্রানী জগতের নিডোরিয়া পর্বের সিফোজোয়া শ্রেনীর অন্তর্গত। তবে সাইফোজোয়ান প্রজাতির জেলিফিশ সমস্ত মহাসাগরে দেখা যায়।

জলজ এ প্রানীটি বেশীর ভাগ মাত্র কয়েক সপ্তাহ বেঁচে থাকে। তবে কিছু কিছু এক বছর কিংবা তার বেশী সময় ধরে বেঁচে থাকে। এগুলো আকারেও বিভিন্নতা রয়েছে। তবে কুয়াকাটায় ভেসে আসা জেলিফিশ গুলো সাইফোজোয়ান প্রজাতির বলে তিনি ধারনা করছেন। কিছুদিন ধরে বঙ্গোপসাগরে প্রচুর পরিমানে জেলিফিশ বেড়ে যাওয়ায় সাগরে জেলেদের মাছ শিকারে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে।

কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র মো. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন', পর্যটকদের যাতে কোন প্রকার অসুবিধা না হয়, সে ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।