ডার্ক মোড
Tuesday, 21 May 2024
ePaper   
Logo
কাস্টমসে তোলপাড় গোয়েন্দার আটকে দেওয়া মার্সিডিজ গোপনে খালাস

কাস্টমসে তোলপাড় গোয়েন্দার আটকে দেওয়া মার্সিডিজ গোপনে খালাস

নিজস্ব প্রতিবেদক 

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্ট সেলের (সিআইসি) আটকে দেওয়া (লক) তিনটি নতুন মার্সিডিজ বেঞ্জ গাড়ি বেআইনিভাবে খালাস করেছে ঢাকার কমলাপুরের কাস্টম হাউস আইসিডি। নিয়ম অনুযায়ী সিআইসি কোনো পণ্য আটকে দেওয়ার পর তাদের পরীক্ষণ ছাড়া সেই পণ্য খালাসের কোনো সুযোগ নেই।

তবে গোয়েন্দা কমলাপুরে তিনটি মার্সিডিজ গাড়ি খালাসে সেই নিয়ম মানা হয়নি। শুধু তাই নয়, মিথ্যা ঘোষণায় নিয়ে আসা ২০২৩ মডেলের এসব গাড়ি খালাসে শুল্কও কম নেওয়া হয়েছে। এতে সরকারের প্রায় ৩ কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। বেআইনিভাবে গাড়ি খালাসের এ ঘটনায় কাস্টমসের ভেতরে তোলপাড় চলছে বলে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, ২০২৩ সালে তৈরি করা মার্সিডিজ বেঞ্জের সি২০০ মডেলের একটি গাড়ি নিয়ে আসে অটো ইমপোর্টস ল…মোহাম্মদ আকবর হোসেন বলেন, ‘এখানে একটা নিয়মের ব্যত্যয় হয়েছে। এ কারণে আমরা আমদানিকারকের কাছ থেকে বাকি রাজস্ব আদায়ের জন্য ডিমান্ড করেছি।’

সিআইসির লক করা পণ্য খালাসের বিষয়ে কমিশনার আরও বলেন, ‘যারা লক করা পণ্য খালাস করেছেন, তাদের ইতোমধ্যে শোকজ করা হয়েছে।’

সূত্র জানায়, মার্সিডিজ বেঞ্জের এই গাড়িগুলো হাইব্রিড গাড়ি হিসেবে শুল্কায়ন করা হয়েছে। এর মধ্যে ইউরোপিয়ান ব্র্যান্ডের দুটি গাড়ি ১৪৯৬ সিসির। এই গাড়ির শুল্কায়ন হয়েছে ৮৯ শতাংশ হারে। প্রকৃতপক্ষে এসব গাড়ির শুল্কায়ন হবে ১৩০ শতাংশ হারে। আর ১৯৯১ সিসির ই২০০ গাড়ির শুল্কায়ন হবে ২১৭ শতাংশ হারে। আবার শুল্কায়নের ক্ষেত্রে গাড়ির মূল্যও কম দেখানো হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে পণ্য আমদানি ধরা পড়লে ২০০ থেকে ৪০০ শতাংশ হারে জরিমানা আদায়ের বিধান রয়েছে। মার্সিডিজ গাড়িগুলোর ক্ষেত্রে সে ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। উল্টো প্রকৃত হারের তুলনায় কম শুল্ক আদায় করা হয়েছে। এর ফলে সরকার প্রায় ৩ কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জানা গেছে, কাস্টম হাউস আইসিডি থেকে সিআইসির লক করা পণ্য খালাস করে নিয়ে যাওয়া অটো ইমপোর্ট কোম্পানির মতো মিথ্যা ঘোষণায় ২০২৩ সালের তৈরি ব্র্যান্ড নিউ বিএমডব্লিউ এবং রেঞ্জ রোভার জিপ নিয়ে আসে অটো মিউজিয়াম। এই প্রতিষ্ঠানের মালিক বারভিডার বর্তমান সভাপতি ও এফবিসিসিআইর সাবেক সহসভাপতি হাবিব উল্লাহ ডন।

এর আগে ব্র্যান্ড নিউ বিএমডব্লিউ এক্স-৭ এক্স ড্রাইভ হাইব্রিড জিপ ও নতুন ব্র্যান্ডের রেঞ্জ রোভার জিপ মাইল হাইব্রিড হিসেবে ঘোষণা দেয় তার প্রতিষ্ঠান। যদিও ওয়ার্ল্ড কাস্টম অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউসিও) ব্যাখ্যা অনুযায়ী মাইল্ড হাইব্রিড গাড়ি সাধারণ গাড়ির মতো শুল্কায়ন হবে। কিন্তু আমদানিকারক ২৯৯৯ সিসির এ গাড়িটি খালাসে মিথ্যা ঘোষণার আশ্রয় নিয়েছে বলে মনে করে চট্টগ্রাম অটো মিউজিয়ামের মালিক বারভিডার বর্তমান সভাপতি ও এফবিসিসিআইর পরিচালক হাবিব উল্লাহ ডন বলেন, ‘সরকার হাইব্রিড গাড়ি হিসেবে সুবিধা দেওয়ার পর থেকে আমরা মাইল্ড হাইব্রিড গাড়ি আমদানি করে আসছি।

কয়েক মাস আগে হুট করে এনবিআর বলছে, এসব গাড়ি মাইল্ড হাইব্রিড হিসেবে শুল্কায়ন হবে না। সাধারণ গাড়ির মতো শুল্কায়ন করতে হবে। এটা ডব্লিউসিওর নিয়ম। এতে মিথ্যা ঘোষণা হয়েছে। আমরা তো মিথ্যা ঘোষণা দিচ্ছি না। আমরা কীভাবে জানব যে, ডব্লিউসিও মাইল্ড হাইব্রিড গাড়ি হাইব্রিড হিসেবে শুল্কায়ন হবে না। এনবিআরকে তো এটা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জানাতে হবে।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন