কাউখালীতে নির্ধারিত সময়ের আগেই অধিকাংশ মাদ্রাসা ছুটি
পিরোজপুর প্রতিনিধি
সরকারের বেঁধে দেয়া নির্ধারিত সময়ের আগেই পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার পঞ্চগ্রাম সম্মিলনী ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসার শ্রেনী কক্ষ ও অফিসে তালা দিয়ে চলে গেছেন শিক্ষক ও কর্মচারী। নির্ধারিত সময়ের আগেই প্রতিদিন মাদ্রাসাটি ছুটি হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় অভিভাবক ও এলাকাবাসী। খোঁজ নিয়ে জানাযায় উপজেলার অধিকাংশ মাদ্রাসা ও ২/৩ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিদিন আড়াই টার মধ্যে ছুটি হয়ে যায়।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বেলা দেড়টায় সরেজমিনে পঞ্চগ্রাম সম্মিলনী ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসায় গিয়ে দেখা যায়, মাদ্রাসাটির শ্রেনী ও অফিস কক্ষ তালাবদ্ধ। এমনকি জাতীয় পতাকাও টানানো নেই। কোনো শিক্ষক ও শিক্ষার্থীও নেই। মাদ্রাসার সুপার জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষা অফিসারের অনুমতি নিয়েই তিনি সহ উপজেলার সকল মাদ্রাসায় বেলা দুইটা পর্যন্ত ক্লাস করানো হচ্ছে। তবে উপজেলার সপ্তগ্রাম সম্মিলনী দাখিল মাদ্রাসায় বেলা দুইটা ১০ মিনিটে গিয়ে দেখা যায় তিনটি ক্লাসের ৭ জন শিক্ষার্থীকে পাঠদান করাচ্ছেন শিক্ষকরা। মাদ্রাসাটিতে ১৪ জন শিক্ষক - কর্মচারী কর্মরত রয়েছেন। মাদ্রাসাটিতে কাগজে কলমে ২৫১ জন শিক্ষার্থীর নাম রয়েছে বলে মাদ্রাসার সুপার জানান।
এসময় পঞ্চগ্রাম সম্মিলনী ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসার সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা স্হানীয় আব্দুল হান্নান, মোনাচ্ছেফ আলী খান সহ অনেকে জানান, মাদ্রাসাটির শিক্ষকরা প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে বেলা দুইটার মধ্যে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চুকিয়ে ছুটি দিয়ে চলে যান। দায়সারা পাঠদানের ফলে ছাত্র ছাএীর উপস্থিতির হার দিন দিন কমছে তেমনি মাদ্রাসার শিক্ষার পরিবেশও নষ্ট হচ্ছে।মাদ্রাসাটিতে উপজেলা প্রশাসন ও শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাদের সঠিক তদারকির অভাবে সরকার নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী পাঠদান না হওয়ার কারণে শিক্ষার্থীদের অভিভাবক মহলে বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেন তারা।
এ বিষয়ে জানতে মাদ্রাসার সুপার মোঃ মাহবুবুর রহমানের মোবাইল ফোনে কল করা হলে তিনি বলেন, আমি বাড়িতে যাচ্ছি। মাদ্রাসার ক্লাস শুরু ও শেষ করার সময় জানতে চাইলে বলেন, আমরা প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে বিরতিহীন ভাবে বেলা ২ টা পর্যন্ত ক্লাস করাচ্ছি। এবিষয়ে এক মিটিংয়ে আমরা উপজেলার সকল মাদ্রাসার প্রধানগন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে কথা বলে ক্লাস করাচ্ছি।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আব্দুল হান্নান বলেন, সরকারের বেঁধে দেওয়া নির্ধারিত সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান শুরু ও শেষ করতে হবে। কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বেলা ২ টায় ছুটি দেয়ার অনুমতি দেয়া হয়নি। বিষয়টি আপনার মাধ্যমে অবগত হলাম। এত তাড়াতাড়ি মাদ্রাসা বন্ধ করলে এটা অবশ্যই অনিয়ম। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্বজল মোল্লা বলেন, সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের আগে মাদ্রাসা কেন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই ছুটি দেওয়ার কোন বিধান নেই। সেখানে মাদ্রাসা বেলা দুইটায় ছুটি দেয়ার অনুমতির প্রশ্নই আসেনা। বিষয়টি জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।