ডার্ক মোড
Friday, 03 May 2024
ePaper   
Logo
উপজেলা পরিষদ নির্বাচন দোহারে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পূর্বাভাস

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন দোহারে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পূর্বাভাস

দোহার (ঢাকা) প্রতিনিধি

৮ মে ঢাকার দোহার উপজেলা পরিষদ সাধারন নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটার,সমর্থক ও আওয়ামীলীগের কর্মিদের মধ্যে নানা গুঞ্জন, আলোচনা ও সমালোচনা এখন তুঙ্গে। নির্বচনকে কেন্দ্র করে প্রার্থীদের পক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকসহ প্রচার-প্রচারনা চলছে।প্রার্থীরা ও তাদের অনুসারীরা তাদের নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন স্থানে ব্যানার পোষ্টার লাগিয়ে প্রচারনা চালাচ্ছেন।

রিটানিং অফিসার ও সিনিয়র জেলা নির্বাচন কার্যালয় কতৃক ’উপজেলা পরিষদ’ সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিকারী ১০ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষনা করেছেন। তবে আজ সোমবার সন্ধ্যায় চেয়ারম্যান প্রার্থী এ এইচ এম ফারুক উজ্জামান তার নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন ডেকে তার প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে অপর প্রার্থী মো.মেহবুব কবিরকে সমর্থন জানিয়েছেন। নির্বাচন কার্যালয় কতৃক সর্বশেষ চেয়ারম্যান পদে বৈধ প্রার্থীরা হলেন- মো.মেহবুব কবির ও মো.আলমগীর হোসেন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে সর্বশেষ বৈধ প্রার্থী হলেন- শেখ সালাহ উদ্দিন, গিয়াস উদ্দিন সোহাগ। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে- আছমা আক্তার, মিতু চৌধুরী, শামীমা ইসলাম বিথী।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো.তাসিনুর রহমান জানান, চেয়ারম্যান প্রার্থী এ এইচ এম ফারুক উজ্জামান,ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সুজাহার বেপারী ও আব্দুল ওহাব বেপারী,মোট তিন প্রার্থী তাদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেছেন।প্রার্থীদের প্রত্যাহার শেষে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন পশ্চিম সুতারপাড়া গ্রামের মৃত.আব্দুর রউফ এর পুত্র মো.আলমগীর হোসেন। আলমগীর হোসেন দোহার উপজেলার ২ বার নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান এবং দোহার উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি।
চেয়ারম্যান পদে অপর বৈধ প্রার্থী মো.মেহবুব কবির। তিনি উপজেলার নারিশা চৈতাবাতর গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের পুত্র।
নির্বাচন সুত্রে জানা যায়, এবারের ষষ্ঠ ধাপের ’উপজেলা পরিষদ’ সাধারণ নির্বাচনে ’নির্বাচন কমিশন’ প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র অনলাইনে দাখিল বাধ্যতামুলক করেছেন। আগামী ৮ মে প্রথম ধাপে সারাদেশে ১৫২টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মধ্যে দোহার উপজেলা রয়েছে। তফসিল অনুযায়ী অনলাইনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের তারিখ ১৭ এপ্রিল,আপিল-১৮-২০,আপিল নিষ্পত্তি ২১, প্রার্থীতা প্রত্যাহারের তারিখ-২২ এপ্রিল, প্রতিক বরাদ্দ-২৩ এপ্রিল, ভোটগ্রহন ৮ মে অনুষ্ঠিত হবে।

নির্বাচন নিয়ে উপজেলার সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের আড্ডায় উঠে আসছে উপজেলা চেয়ারম্যান,ভাইস-চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীদের নাম-ডাক। সুত্রে জানা যায়, গত ইউপি নির্বাচন ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দ্ব›েদ্বর রেশ এবার উপজেলা ভোটে রয়েছে। অভ্যন্তরীণ কোন্দলে বিপর্যস্ত দোহার উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সাবেক কমিটি। গত ইউপি নির্বাচনে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় না থাকলেও এবার উপজেলা ভোটে তা প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যান পদে তিন জন প্রতিদ্বন্দিতা থাকলেও সরকারদলীয় মাহমুদপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি এ এইচ এম ফারুক উজ্জামান তার প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেছেন।ফলে চেয়ারম্যান পদে মুল লড়াই হবে মো.আলমগীর হোসেন- মো.মেহবুব কবির। নির্বাচন কমিশন কতৃক মনোনয়ন বৈধ ঘোষনার পর থেকেই এক পক্ষ আরেক পক্ষকে কোণঠাসা করার চেষ্টায় অবিরত। এতে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন উপজেলার পাশাপাশি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
জানা যায়, সৎ ও যোগ্য প্রার্থী হিসেবে গ্রহনযোগ্যতা বেশী দোহার উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও স্থানীয় সাংসদের আস্থাভাজন প্রতিনিধি মো.আলমগীর হোসেনের। উপজেলা ৮ টি ইউপি চেয়ারম্যান, দোহার পৌর সভা মেয়র,কাঊন্সিলর ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে আলাপকালে জানা যায়, এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে আলমগীর হোসেনকে তারা আবারও দেখতে চান।
বর্তমান ইউপি জনপ্রতিনিধিগনরা জানান, স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্ঠা সালমান এফ রহমানের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত এই আলমগীর হোসেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামীলীগের রাজনীতি করছেন। তিনি ১৯৬২ সালের ৬ই মার্চ দোহার উপজেলার সুতারপাড়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করেন।

অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী মেহবুব কবিরের পক্ষে রয়েছেন সাবেক ঢাকা জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান এবং সাবেক জেলা ও উপজেলা আওয়ামীলীগের কমিটির কয়েক নেতৃবৃন্দরা। এরা সকলেই এ আসনের সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমানের সমর্থক। তবে গত ইউপি নির্বাচনে দ্বন্দ ও নেতৃত্ব নিয়ে আওয়ামীলীগের সভাপতি আলমগীর হোসেনের সাথে বিরোধ রয়েছে।

এ বিষয়ে দোহার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে টানা ২ বার নির্বাচিত ও তৃতীয় বারের প্রার্থী মো. আলমগীর হোসেন বলেন,আমি দীর্ঘদিন ধরে দোহার ও নবাবগঞ্জের মানুষের পাশে থেকে সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছি। পাশাপাশি নবাবগঞ্জ উপজেলায়ও উন্নয়ন কর্মকান্ড হাতে নিতে কাজ করেছি। আমি মনে করি নির্বাচনে সাধারন ভোটারগন আমাকে বেছে নিবেন।

এ বিষয়ে দোহারের আলোচিত ইঞ্জিনিয়ার মেহবুব কবির জানান, ২০১৩ সাল থেকে নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দিতা করে আসছি। দোহারের সর্বস্তরের লোকজন আমার সাথে আছে ইনশাল্লাহ। সুষ্ঠ ভোট হলে বিজয় হবেই আমার। নির্বাচিত হওয়ার পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্ঠা সালমান এফ রহমানের পরিকল্পনায় ঢাকা-১ আসনকে স্মাট নগর হিসেবে বাস্তবায়ন করতে আপ্রান চেষ্ঠা চালিয়ে যাবো।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন

আপনি ও পছন্দ করতে পারেন