ডার্ক মোড
Monday, 23 December 2024
ePaper   
Logo
আমি ‘পলাতক বীর উত্তম’ হাসি-না বলছি—

আমি ‘পলাতক বীর উত্তম’ হাসি-না বলছি—

কিউ. এম. জালাল খান

দিনটি ছিল পাঁচ আগস্ট দু’হাজার চব্বিশ
ভাবতে পারিনি এভাবে ভাঙবো মচকাবো
হুমড়ি খেয়ে পটল তুলবো
ইতিহাসের 'পলাতক বীর উত্তম' হবো
হবইতো, আমি যে একাত্তরের পঁচিশ মার্চের
'পলাতক বীর শ্রেষ্ঠ' শেষ মজিবরের-এর
পনোরই আগস্ট 'পঁচাত্তর উত্তর
একমাত্র উত্তরাধীকার
পাকিস্তানিদের সহায়তায় বাংলাদেশের
প্রথম রাজাকার পরিবার
বলতে কতইনা গর্ব বুকভর।

তারপরও ভারতের ষড়যন্ত্রে মেরেছি পল্টি
দশকের পর দশক ধরে গেয়েছি 'জয় বাংলা'
আবার ছাত্র জনতার রোষে হয়ে গেলাম
আমি শেষ হাসি-না 'জয় বাংলা'
কারণ খুঁজে পেলাম
আমি যে ছিলাম চিল শকুনি
পঁচা নিম্নদৃষ্টি হায়েনা
ছিলাম আমি শঠ ও শেষ হাসি-না।

সেই দুর্ঘটনায় বাপ মরে গেলো
তাই দাদু বাড়ি শশুর বাড়ি
আমার চরম ও পরম বন্ধু
হিন্দু ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলুম
প্রায় ছয় বছর পর ফিরে গেলুম
মতিউর রহমান রেন্টু ঠিকই বলে গেলুন
দুই সপ্তারও কম সময়ে
স্বাধীনতার বীর সৈনিক মহান জিয়াকে
হত্যার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করলুম
আবার এখন সেই হিন্দু ভারতেই
পালিয়ে আসলুম।

বাংলাদেশের সর্বশ্রেষ্ঠ সংগীত রচয়িতা
গাজী মাজহারুল আনোয়ার
আর বাংলাদেশের সর্বশ্রেষ্ঠ কণ্ঠশিল্পী
শাহনাজ রহমতুল্লাহ
তাই তাদের স্মরণে গাইতে ইচ্ছে করে
প্রথম ভারত আমার শেষ ভারত
জীবন ভারত আমার মরণ ভারত
ভারত ভারত ভারত।

আমি জেনেছি শুনেছি
ঈসলামের খলিফা উমর, ওসমান, আলী
রাশিয়ার সম্রাট রোমানভ
দ্বিতীয় নিকোলাস সপরিবার
ভারতের ইন্দিরা ও রাজীব গান্ধী
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট লিংকন ও কেনেডি
পাকিস্তানের ভুট্টো বেনজির
ইতালির বেনিতো মুসোলিনি
রুমানিয়ার নিকোলাই ও তার স্ত্রী এলেনা--

পৃথিবীতে যুগে যুগে খুন হয়েছেন
অনেক রাস্ট্রপ্রধান ও প্রধানমন্ত্রী
অথচ তাদের ছেলেমেয়ে বা বংশধর
রাজনৈতিক বা গণতান্ত্রিক পদ্ধতি
সভ্য সংস্কৃতি ছাড়া, বেপরোয়াভাবে
তাদের বাবা-মার খুনের রক্তক্ষয়ী
প্রতিশোধ নিতে কখনো ক্ষমতায় আসেনি।

তবে আমিতো রক্তপিপাসু
হাংগর হায়েনা হাসি-না
ন্যয়নীতি, নিয়ম নীতি মানিনা
দেশ ও জাতীর কথা ভাবিনা
মানবাধিকার কি জিনিস বুঝিনা
মানবতার জয়গানে নাচিনা
আইনের শাসন সামাজিক ন্যয়বিচার
বুঝেও না বুঝার করেছি ভান
যেমনি করে কানে সব শুনলেও
অভ্যাস আছে কম শুনার ভান
দেশ জাতি জীবন সমাজ প্রতিষ্ঠান মুসলমান
সবই আমার কাছে তামাশা অপর নাম।

হাঁ একটাই উদ্দেশ্য ছিল আমার
বিচার বহির্ভূত প্রতিশোধ নিতে হবে
আমার বাবা মজিবর
ওরফে দেবদাস চক্রবর্তী হত্যার।
দেশে ফিরেছিলাম বুঝে নিতে
আমার সেই অন্যায় আবদার পংকিল অধিকার।

১৯৮১ তে কলকাতা থেকে আসার আগে
করেছিলাম পণ
কেড়ে নেব তোদের অজস্র তাজা প্রাণ
তাইতো করেছি জিয়া হত্যা, শেরাটন আর্সন হত্যা
লগি বৈঠা হত্যা, বিডিআর হত্যা
হেফাজত হত্যা, জামাত শিবির হত্যা,
বাংলাদেশে আমার পাতানো স্বামী
মোদির আগমন হত্যা
কোটাবিরোধী আন্দোলন হত্যা, সাংবাদিক হত্যা
হাজার হাজার বিএনপি নেতা কর্মী হত্যা
জেল জুলুম, গুম ও খুন, বেধড়ক পুলিশি মারপিট
মিটিং মিছিল হামলা মামলা, আরো কত কী ।

আসার আগে র’ভারত আদিষ্ট হয়ে
করেছিলাম পণ
দেশটা দিবো জলাঞ্জলি
নির্বাচন করবো চুরি
তোদের বানিয়ে ছাড়বো বাংলাদাস
মানচিত্রে বসাবো আমার দাদুবাডী
তথাকথিত "শ্বশুরবাডী" ভারতের ভাগ।

আমার পিতামহ ছিলেন কলকাতা সিভিল কোর্টের
সহকারী উকিল অরন্য কুমার চক্রবর্তী
দাদী ছিলেন গৌরিবালা দাস
আমার দাদী-পিতা ছিলেন উকিল চন্ডিদাস
সংসদে রেহানা রানুর চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ।

আমি শঠ ও শেষ হাসি-না
আমি ছিলাম বাংলাদাসের মুখ্যমন্ত্রী
মনে পড়ে মৃণাল কান্তি দাস
আমার প্রথম যৌবনের সংগী
আমার বাপ মরে যাবার পর
আমার অন্তরংগ সংগী
ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি
জন্মই আমার আজন্ম হিন্দু প্রীতি।

দেশ ভেদ করে রেল ট্রেন বন্দর
তিস্তা ফারাক্কা সামরিক বেসামরিক
দেশবিরোধী শত অসম
কুচক্রি কুচুক্তি
লক্ষ লক্ষ ভারতীয় হিন্দুদের চাকরী দিয়ে
করেছিলাম তাদের পা-চাটা
লেন্দুপ দর্জি স্তুতি।

আমি দৈত্য ডাইনী বুডী
আমি কাল নাগীনি শকুনি
আমি কাঁঠাল রানী
আমিই ছিলাম জংলী হিংস্র হায়েনা বাঘ
তাইতো তোদেরকে করেছিলাম গুম আর খুন
আর হাত পা করেছিলাম ভাগ ভাগ ।
ছাত্রলীগ আর পুলিশ লীগ দিয়ে চালাই গুলি
তোদের মা'র বুক করেছিলাম খালি
আর হরিলুট করেছিলাম বিলিয়ন্স অব ডলার
আমি রক্তচোষা ড্রাকুলা ভ্যামপায়ার।

একটাই উদ্দেশ্য ছিল আমার
বাবা মজিবর ওরফে
দেবদাস চক্রবর্তী খুনের প্রতিবাদ
যেই দেশে গেছে বাবার প্রান
সেই দেশ করেছি বিনাশ।

সেইদিন ছিলাম দেশের বাহিরে
র’ভারত আদিষ্ট হয়ে
এসেছিলাম প্রতিশোধ নিতে
তাই শেষ করেছি রাজনীতি,সংসদ, অর্থনীতি, নির্বাচন
শিক্ষা, বিচার, পুলিশ ও সরকারি প্রশাসন
সেনাবাহিনীকে পরিণত করেছিলাম
গোপালী সোনাবাহিনীতে
বাংলাদেশকে হিন্দু ভারতের
একটি অমুসলিম অঙ্গরাজ্য
বাংলাদাস বানাতে।

প্রায় সত্তর ভাগ কোটা করেছিলাম
তাদের জন্য যারা
আমার মেধাশুন্য হিন্দুপ্রেমী ছাত্রলীগ
হেলমেট লীগ রামদা লীগ
তাদের নাতি পুতি
আবার তাদের নাতি পুতি
যেন চাকরিতে সাড়া দেশ জুড়ে
শুধু থাকে আমার আওয়ামি (BAL) বংশধর
অনাদি অনন্তকাল।

তাই কোটাবিরোধী আন্দোলন করতে চেয়েছিলাম
রক্তলিপসু হাতে শক্ত দমন
শত শত কোমলমতি ও মেধাবী যুবক নিধন।

আমার শখ আমার তৃপ্তি
আমার মজা
বুলেটবিদ্ধ তাজা রক্তভেজা
নিথর দেহ অবলোকন
দুই যুগ ধরে তাইতো করে এসেছিলাম
প্রতিদিন ৱ্যাব পুলিশি গুম আর খুন
বন্দুক আর রিমান্ড নির্যাতন, ডাণ্ডাবেড়ি
খাঁটি ও গভীর রাস্ট্রীয় সন্ত্রাসের রাজনীতি
তাই বাংলাদেশ নামক বাংলাদাসকে দিয়েছিলাম
লম্বা এক গোপালী গোপালগঞ্জি বাঁশ
সর্বস্তরে সর্বকালের সর্ব নিকৃষ্ট
হাঁটুভাংগা চরম এক
দুর্ভোগ আর অবনতি।

আমি বললাম আমিযে গণহত্যা করেছি
তার নিরপেক্ষ তদন্ত হোক
এ যেন ঐ লোককথার মতো
আমি সিঁদচুরি করে আমার
হিন্দু শশুর বাড়িতে পালালাম
ঘরের মালিক আমাকে
ধাওয়া করতে করতে বলছে
চোর কই চোর কই,
আমি চোর নিজেও দৌড়াতে দৌড়াতে বলি
চোর কই চোর কই।
আমিযে মিথ্যুক নির্লজ্জ বেহায়া বেঈমান
যেন তদন্তের কথা বললে
আমার মিলবে নির্দোষ প্রমান।

খুনের রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়
পুর্নিমার চাঁদ যেন নীরব নিথর নিস্তব্ধ
রক্তাক্ত দেহখানি।
দিনরাত আমি যেন হায়েনা হাংগর হাসি-না
রাস্তার লাল জিব বের করা নেরী কুত্তার চাহনি
কবিতা তোমায় দিলাম ছুটি।

যাওয়ার আগে এই মর্মে সাক্ষ্য দিচ্ছি যে
আমি সত্যভাষী রেন্টুর ফাঁসি চাইনা
আমি আমার মতো কূটনী কুটাসক্ত কর্দমাক্ত
হাসি-নারই ফাঁসি চাই
আর ফাঁসির মঞ্চে উঠতে উঠতে
লেডি ম্যাকবেথ এর সুরে সুরে বলবো,
"All the perfumes of Arabia
Will not sweeten this little hand."

Q M Jalal Khan, PhD
Author, coauthor and lead editor of ten books on Awami fascism
Canada

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন