আজমিরীগঞ্জে প্রশাসনিক অনুমোদনের তোয়াক্কা না করে গায়ের জোরে চলছে মা ও শিশু ডায়াগনস্টিক সেন্টার
দিলোয়ার হোসেন, আজমিরীগঞ্জ (হবিগঞ্জ)
আজমিরীগঞ্জ পৌরসভার কাকাইলছেও রোডে হবিগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিসের অনুমতি বৈকি আজমিরীগঞ্জ পৌরসভার ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া অবাধে চলছে মা ও শিশু ডায়াগনস্টিক সেন্টার। সূত্রমতে ২০২৪ সালের মে মাস হতে অদ্যবদি পর্যন্ত কোন রকম বৈধ কাগজের তোয়াক্কা না করে অনেকটা গায়ের জোরে এই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আল্ট্রাসনোগ্রাফি,রক্ত পরিক্ষা,এক্স-রে সহ জটিল চিকিৎসাগুলি করা হচ্ছে। পৌর কতৃপক্ষের নিকট হতে ট্রেড লাইসেন্স, অনাপত্তিপত্র,পরিবেশ অধিদপ্তরের অনাপত্তি,ফায়ার সার্ভিসের ছাড়পত্র নেয়ার কোন রকম চেস্টাই এই ডায়াগনস্টিক সেন্টার এর পরিচালকগন নেয়ার প্রয়োজন মনে করেনি।একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিচালনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতাধীন হবিগঞ্জ সিভিল সার্জন কতৃক সনদ নিয়ে বা আবেদন করে পরিচালনা করার বিধি থাকলেও আজমিরীগঞ্জ মা ও শিশু ডায়াগনস্টিক সেন্টার হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপত ডাঃ তন্ময়ের মাধ্যমে হবিগঞ্জ সিভিল সার্জনকে মৌখিকভাবে জানিয়ে তাদের কার্যক্রম শুরু করে দেয় বলে তথ্য উঠে এসেছে।
বৈধ কাগজপত্র না থাকা কিংবা অনুমোদনহীন থাকার কারনে তাদের দ্বারা চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসার কোন জবাবদিহীতার কোন সুযোগ থাকছে না আবার বিভিন্ন দপ্তর থেকে সনদ যেমন এক্স-রে এর ক্ষেত্রে পারমাণবিক কমিশন হতে ছাড়পত্র, বর্জ্য নিস্কাসন ও পরিবেশ দূষন না করার অঙ্গিকারে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, পৌরসভার ট্রেড লাইসেন্স ও অনাপত্তিপত্র,শ্রম ও কর্ম কমিশনের ছাড়পত্র,ফায়ার সার্ভিসের ছাড়পত্র সহ গুরুত্বপূর্ণ ও আব্যশকীয় দপ্তরের সনদ ও ছাড়পত্র আনতে দপ্তর অনুযায়ী সরকারী রাজস্বও তারা ফাঁকি দিচ্ছে অনেকটা প্রক্যাশেই।
নাম প্রক্যাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতাধীন কিছু কর্মকর্তা জানান জুলাই পরবর্তী পরিস্থিতির কারনে তারা সরাসরি বা রাজনৈতিক প্রভাবে প্রভাবিত হওয়ায় ইচ্ছে থাকলেও ব্যবস্থা নিতে ভয়ে কোন ব্যবস্থা নিতে পারেন না।
মা ও শিশু ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্মরত চিকিৎসক ও সূত্রমতে উক্ত ডায়াগনস্টিক সেন্টার এর আংশিক মালিক ডাঃমোঃ তোফাজ্জুল হোসাইন এর সাথে সরাসরি যোগাযোগ করলে তিনি অকপটে কোন বৈধ কাগজপত্র না থাকার বিষয়টি স্বীকার করেন তবে জুন ২০২৪ সালে আজমিরীগঞ্জ পৌরসভায় ট্রেড লাইসেন্স এর আবেদন করলে ভবন মালিকের জায়গা সরকারী খাস খতিয়ান হওয়ায় এবং হোল্ডিং নাম্বার না থাকায় পৌরসভা কতৃপক্ষ অদ্যবদি পর্যন্ত ট্রেড লাইসেন্স প্রদান করেন নি বলে আমাদের জানায়।তিনি আরো জানান,এই ডায়াগনস্টিক সেন্টার এর পরিচালনায় শায়েকুল আলম নামের ব্যক্তি রয়েছেন তার সাথে যোগাযোগ করলে কাগজপত্র না থাকার বিষয়ে বিশদ জানা যাবে পরে তিনি ঐ ব্যক্তির একটি কার্ড দেন আমাদের।
ডাঃ মোঃ তোফাজ্জুল হোসাইনের কথা কে পরিচালক শায়েকুল আলমের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে প্রথমে তিনি পরিচালক থাকার সত্যতা নিশ্চিত করলেও সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার পর তিনি বলেন ডায়াগনস্টিক সেন্টার এর মালিক পক্ষ কে বলেন আমাকে কাগজে কলমে পরিচালক ঘোষনা করতে তারপর কথা বলব,আমরা সাংবাদিক আমরা কেন এই কথা মালিক পক্ষকে বলবও আপনি পরিচালক হলে মন্তব্য দেন না হলে কল দেয়ার জন্য দুঃখিত বললে সে বলে "তরে আমি চিনচি,তুই আমার সামনে আইসা কথা ক তরে অখন ওই দেইক্কালাইমু" বলে কল কটে দেন পরবর্তীতে খোজ নিয়ে জানা যায় তথাকথিত অবৈধ ডায়াগনস্টিক সেন্টার এর এই পরিচালক আয়কর আইনজীবী পেশায় সিলেট কাজ করেন।
আজমিরীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ ইকবাল হোসেনকে বিস্তারিত জানিয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি জানান,বিষয়টি পুরোপুরি সিভিল সার্জন কার্যালয়ের অধীনে।আমরা তদারকীর কাজ করি,বৈধ কাগজ পত্র ছাড়া কোন ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিচালিত হলে আমরা সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করবও।পরে তার নির্দেশে স্যানিটারি ইন্সপেক্টর আমজাদ হোসেন মা ও শিশু ডায়াগনস্টিক সেন্টারে সরজমিন গিয়ে আগামী ২৬ জানুয়ারি ২০২৫ ইং রবিবার আজমিরীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রশাসনের নিকট তাদের সকল কাগজপত্র সহ পরিচালকগনকে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দিয়ে আসেন বলে আমাদের মোবাইলে জানান।
হবিগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ রত্নদ্বীপ বিশ্বাসকে মা ও শিশু ডায়াগনস্টিক সেন্টার অনুমোদনহীন ভাবে পরিচালিত হওয়ার বিষটি অবগত করলে তিনি জানান,তথ্যটি জানানোর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ আমি বিষয়টি নোট করে রাখলাম,যদি অনুমোদনহীন হয় তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।