
ছাতক কংক্রিট স্লিপার কারখানার উৎপাদন বন্ধ, অব্যবস্হাপনা ও জনবল সংকটসহ রয়েছে বিভিন্ন সমস্যা
মোঃআবু বকর সিদ্দীক চৌঃ ছাতক(সুনামগঞ্জ)
বাংলাদেশ রেলওয়ের অধীন ছাতক কংক্রিট স্লিপার কারখানা একটি সরকারি প্রতিষ্টান।
কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা, অবহেলা ও জনবল সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যার কারনে বছরের বেশীরভাগ সময়ই কারখানাটি বন্ধ থাকে।
কোন কোন সময় বছরই বন্ধ থাকে উৎপাদন। ছাতক রেলওয়ের অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত দুইবার কংক্রিট স্লিপার কারখানাটি চালু হয়েছে।
গত ২ ফেব্রুয়ারী চালু হয়ে যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে স্লিপার কারখানা বন্ধ হয়ে পড়ে ২৭ ফেব্রুয়ারি।
দ্বিতীয় দফায় গত ৪ মে চালু হয়ে কাঁচামালের অভাবে বন্ধ হয়ে যায় ২৯ মে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে,
ছাতক বাজার রেলওয়েতে গুরুত্বপূর্ণ পদ সহ বেশীর ভাগ পদ রয়েছে শূন্য।
ওয়েল্ডার গ্রেড-১, লাইনম্যান কাম ওয়্যার গ্রেড-২, সহকারি ল্যাবরেটরী, গাড়ী চালক, টুলকিপার, ট্রাভারসার অপারেটর, স্টোরটেন্ডল, ওয়েল্ডার, কাস্টিং মেশিন অপারেটর, ম্যাসিনিস্ট, মেকানিক, কংক্রিট মিক্সার অপারেটর, ডিমোল্ডিং অপারেটর, সহকারি ক্রাশার অপারেটর, সহকারি ল্যাবরেটরী হেলপার, ওয়েল্ডার হেলপার, টেনশনিং হেলপার, নিরাপত্তা প্রহরী, খালাসী, পরিচ্ছন্নতা কর্মী সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছে জনবল সংকট।
দেশের একমাত্র সরকারি এই কংক্রিট স্লীপার কারখানাটি উৎপাদন থেকে বারবার মুখ থুবড়ে পড়ছে।
জানা যায়, ১৯৮৮ সালের ২৭ অক্টোবর দৈনিক ২৬৪ টি স্লীপার উৎপাদন ক্ষমতা নিয়ে ছাতকে কংক্রিট স্লিপার প্লান্টের( কারখানার) যাত্রা শুরু হয়। জানাগেছে, কাঠের তৈরি স্লীপারের স্হায়িত্ব গড়ে ১০ বছর, অপরদিকে কংক্রিট স্লীপারের স্হায়িত্ব ৫০ বছর। তৎকালীন সরকার দেশের রেললাইনকে মজবুত,টেকসই ও নিরাপদ করার লক্ষ্যে ছাতকে দেশের একমাত্র কংক্রিট স্লীপার কারখানা স্হাপন করে। কারখানাটির উৎপাদন শুরুর পর থেকে সচল থাকলেও কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা, অবহেলা ও দূর্নীতির কারণে ২০০০ সালে দেখা দেয় অশনী সংকেত।
২০১২, ২০১৪, ২০১৬ ও ২০২০ সালে কয়েকবার চালু হলেও এর স্থায়িত্ব বেশিদিন টিকেনি। যান্ত্রিক ত্রুটি ও কাঁচামাল সঙ্কটের কারনে বছরের বেশিরভাগ সময়ই বন্ধ থাকে বাংলাদেশ রেলওয়ের একমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠান ছাতক কংক্রিট স্লিপার প্লান্ট।
বর্তমানে ছাতক রেলওয়ে ও কংক্রিট স্লীপার কারখানা কর্মকর্তা শুন্য। আবার দায়িত্বে যারা রয়েছেন তারা বেশীরভাগ সময়ই থাকেন ঢাকা ও সিলেটে। ছাতক রেলওয়ের উর্দ্ধতন উপ-সহকারি প্রকৌশলী বিদ্যুৎ (ফোরম্যান) আসাদুজ্জামান খান যোগদান করার পর থেকেই তিনি কর্মস্থলে থাকেন না। কর্মস্থলে না থেকেই তিনি দীর্ঘদিন ধরে সরকারি বেতন ভাতা ভোগ করছেন এমন অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
কংক্রিট স্লিপার প্লান্টের উর্দ্ধতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী কার্য জাকির হোসেন খান এখানে রয়েছেন অতিরিক্ত দায়িত্বে।
অভিযোগ রয়েছে তিনি মাসে একবার এসে রেলওয়ের বাংলোতে রাত্রিযাপন করে চলে যান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী জানিয়েছেন, এমনিতেই এই প্লান্টে রয়েছে জনবল সংকট। আর দায়িত্বশীল যারা রয়েছেন তারা বিভিন্ন অজুহাতে এখানে নামমাত্র হাজিরা দিয়ে চলে যান। কিন্তু রেলওয়ের বিভিন্ন টেন্ডারে প্রভাব বিস্তার এবং বেতন ভাতাদি সহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন প্রতিনিয়ত। ছাতক কংক্রিট স্লীপার প্লান্ট বন্ধ রয়েছে স্বীকার করে বাংলাদেশ রেলওয়ে সিলেটের সিনিয়র সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী (ছাতক অতিরিক্ত দায়িত্ব) আজমাঈন মাহতাব বলেন, সাময়িক সমস্যার কারনে প্লান্টটি বন্ধ রয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভাগীয় প্রকৌশলী টু ঢাকা এবং ছাতক বাজার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিব জানান , স্লিপার কারখানাটি শীগগির উৎপাদনে যাবে বলে তিনি আশাবাদী।
Comment / Reply From
You May Also Like
Latest News
Vote / Poll
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলা বন্ধ করতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্যোগ যথেষ্ট বলে মনে করেন কি?