
ফসলী জমিতে পুকুর খনন বন্ধে ৩ সংগঠনের ৫ দাবি
শাহিনুর রহমান সোনা, রাজশাহী
রাজশাহী অঞ্চলে ফসলী জমিতে চলছে পুকুর খননের মহোৎসব। এসব খনন বন্ধে প্রশাসনকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে রাজশাহীর ৩ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ৫ দফা দাবি তুলেছেন।
দাবিগুলো হচ্ছে: ১) অবিলম্বে কৃষি জমিতে পুকুর খনন বন্ধে দৃশ্যমান কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং চিহ্নিত ভূমিদস্যুদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে ; ২) ভূমি দস্যূতায় সহতায়তাকারী পুলিশ কর্মকর্তা, এসি-ল্যান্ড, ইউএনও কে অপসারণসহ তাদের বিরুদ্ধে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে; ৩) জোর পূর্বক পুকুর খনন করতে গিয়ে কৃষকের ক্ষতির পরিমাণ নির্নয় করতে হবে এবং তার ক্ষতিপুরণ দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিশ্চিত করতে হবে; ৪) সমগ্র ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে; ৫) রাজশহীর বিভিন্ন উপজেলায় কৃষি জমিতে পুকুর খননের যে মহোৎসব চলছে তা অতিদ্রুত বন্ধ করতে হবে।
শনিবার (২১ জুন) বেলা ১১ টায় রাজশাহী নগরীর গণকপাড়ার একটি অভিজাত বুক ক্যাফেতে “কৃষি জমি রক্ষা কর, খাদ্য সুরক্ষা নিশ্চিত কর” স্লোগানে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন "রাষ্ট্র সংস্কার কৃষক আন্দোলন, বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরাম ও সবুজ সংহতি রাজশাহী মহানগর এক সংবাদ সম্মেলনে দাবিগুলো জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রাষ্ট্র সংস্কার কৃষক আন্দোলন, বাগমারার আহ্বায়ক ও মোহনপুর কলেজের প্রভাষক মো. আমজাদ হোসেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশগ্রহণ করেন নদী ও পরিবেশ গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী, আ্যাডভোকেট হোসেন আলী পিয়ারা, বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আতিকুর রহমান আতিক, জুলাই-৩৬ পরিষদের আহ্বায়ক মাহমুদ জামাল কাদেরী, ঈশিতা ইয়াসমিন প্রমূখ।
সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, রাজশাহীর বিভিন্ন উপজেলার পাশাপাশি বাগমারা উপজেলার নিমাই বিলের কৃষিজমিতে জোর জবরদস্তি অবৈধ পুকুর খননের মহোৎসব চলছে। কৃষি জমি রক্ষায় এ বিষয়টি নিয়ে ৪/৫ মাস যাবৎ প্রশাসনের দৃষ্টিতে আনার জন্য মানববন্ধন, স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। এর পরেও কোন প্রতিকার না পেয়ে গত- ১৯ মার্চ “বিজ্ঞ রাজশাহী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বাগমারা আমলী”- আদালতে একটি মামলা করা হয়। মামলা নম্বর: সি.আর কেস নং-৩৪৭/২০২৫ (বাগমারা)। বাগমারা উপজেলার এসি-ল্যান্ড বরাবর মামলাটির তদন্তভার রয়েছে। একই বিষয়ে কোন অগ্রগতি না ঘটলে গত ৮ এপ্রিল মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে একটি রিট-পিটিশন দেওয়া হয় এবং এই রিটে বাগমারা উপজেলায় পুকুর খননে স্থগিতাদেশ সহ রাজশাহী জেলা প্রশাসক, ইউএনও, এসি-ল্যান্ড কে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
আসামীরা দেশের প্রচলিত আইন, উচ্চ আদালতের রিট পিটিশনসহ সকল কিছুকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় নিমাই বিলের প্রায় ষাট বিঘা কৃষি জমিতে ঈদ-উল-আজহার ছুটিতে আবারো জোড়েশোরে খনন শুরু করেছে। তথাকথিত কতিপয় স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও ভূমি দস্যূরা এই কাজের সাথে জড়িত। তারা প্রতিনিয়ত রাত ১১ টার পর থেকে ভোর ৫ টা পর্যন্ত ৭ টি স্কেভেটার মেশিন দিয়ে খনন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। যদিও দেশের প্রচলিত আইনে ফসলী জমিতে পুকুর খনন করা যাবে না। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ, বাগমারা থানা, উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসনকে একাধিক বার অবগত করা হলেও তারা কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন নি বরং নীরব দর্শক এর ভূমিকা পালন করেছে। অবৈধ খননের কারনে কৃষকদের আবাদ নষ্ট হয়েছে এবং জমি আবাদের অনুপযোগী হওয়ায় কৃষকরা অনিশ্চিত ভবিষৎ এর মধ্যে পড়েছেন।
Comment / Reply From
You May Also Like
Latest News
Vote / Poll
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলা বন্ধ করতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্যোগ যথেষ্ট বলে মনে করেন কি?
হ্যাঁ
না
মন্তব্য নেই
0%
0%
0%
Popular Posts
Archive
Please select a date!
Submit