
গাজীপুরে প্রভাবশালীর ছত্রচ্ছায়ায় সওজের জমিতে মার্কেট"
এস এম জহিরুল ইসলাম, গাজীপুর
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গড়গড়িয়া মাষ্টারবাড়ি বাজার এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের জমি দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে একাধিক অবৈধ দোকানপাট। সাইনবোর্ড সাঁটিয়ে দখল করা জমিতে তৈরি হয়েছে আব্বাস আলী সুপার মার্কেট। যার নির্মাতা স্থানীয় প্রভাবশালী শহিদুল ইসলাম সোহেল। তার মামা শ্রীপুর পৌর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য লিয়াকত আলীর ছত্রচ্ছায়ায় এ দখলবাণিজ্য চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মহাসড়কের পাশে অর্ধশতাধিক দোকান নির্মাণ করা হয়েছে। এসব দোকানে রয়েছে মনোহারী, খাবারের হোটেল, ইলেকট্রনিক্স, কসমেটিকস ও চায়ের দোকান। পথচারীদের হাঁটার জায়গা না থাকায় প্রতিদিন তৈরি হচ্ছে যানজট ও বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি।
সড়ক আইন অনুযায়ী, মহাসড়কের ৩৩ মিটারের মধ্যে কোনো স্থাপনা নির্মাণ বেআইনি হলেও, স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের নিরবতায় নিয়ম ভেঙে একের পর এক স্থাপনা গড়েছেন সোহেল। দোকানদারদের কাছ থেকে জামানত ও মাসিক ভাড়া বাবদ প্রতিমাসে লাখ লাখ টাকা আদায় করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক দোকানি জানান, প্রতিটি দোকানের জন্য ১-৩ লাখ টাকা জামানত ও মাসে ৫-১০ হাজার টাকা পর্যন্ত ভাড়া আদায় করছেন সোহেল। কেউ কেউ দৈনিক ভিত্তিতে ভাড়া পরিশোধ করছেন। দোকানিরা বলেন, "নাম বললে আমাদের দোকান উঠিয়ে দেওয়া হবে, তাই মুখ খুলতে পারি না।
শুধু সরকারি জমি নয়, ব্যক্তি মালিকানার জমি দখলেরও অভিযোগ রয়েছে সোহেল ও লিয়াকতের বিরুদ্ধে। গিলারচালা গ্রামের হাজী মো. বাছির আলী জানান, কেওয়া মৌজায় নিজের নামে ৩৫ শতক জমি থাকার পরও যুবদল নেতা লিয়াকতের নেতৃত্বে সোহেল তার জমিতে ঢুকে বাঁশঝাড় কেটে ফেলেন এবং প্রাণনাশের হুমকি দেন। যে জমি থেকে বাঁশ কাটা হয়েছে সে জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। আদালত ওই জমিতে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞাও জারি করেছে।
ভুক্তভোগী বাছির আলী অভিযোগ করেন, শ্রীপুর থানার এসআই আলমগীর হোসেন ঘটনাস্থলে এসে উল্টো তাকে জমির বাঁশ দিয়ে দিতে চাপ দেন এবং বাড়াবাড়ি করলে বিপদে পড়ার হুমকি দেন। ফলে পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা।
গত আগস্ট থেকে লিয়াকতের বিরুদ্ধে জমি দখল, চাঁদাবাজি ও মারধরের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের বিচারের দাবিতে মাধখলা এলাকায় স্থানীয়রা বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলেন, "সাধারণ কেউ হলে সওজ বা পুলিশ একদিনেই দোকান গুঁড়িয়ে দিত। কিন্তু এরা প্রভাবশালী, তাই বছরের পর বছর দখলদারি চললেও কিছু হয় না।"
অভিযুক্ত শহিদুল ইসলাম সোহেল জমি দখলের বিষয় স্বীকার করে বলেন, “আমার কিছু দোকান আছে। সওজ চাইলে ছেড়ে দেব।” ভাড়া ও জামানতের বিষয়ে সরাসরি উত্তর দেননি তিনি।
বিএনপি নেতা লিয়াকত আলী বলেন, “আমি কোনো পেশিশক্তি বা দলের প্রভাব খাটাই না। আমার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ মিথ্যা।”
গাজীপুর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কে এম শরীফুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন ও মেসেজ করলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।
Comment / Reply From
You May Also Like
Latest News
Vote / Poll
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলা বন্ধ করতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্যোগ যথেষ্ট বলে মনে করেন কি?
হ্যাঁ
না
মন্তব্য নেই
0%
0%
0%
Popular Posts
Archive
Please select a date!
Submit