সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স দখলের ষড়যন্ত্র চলছে, অচলাবস্থায় ব্যবসা কমেছে ৫০ শতাংশ
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ারবাজারে তালিকাভূক্ত সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সকে ব্যর্থ কোম্পানী হিসিবে চিহ্নিত করার পাশাপাশি কোম্পানীটি দখলের ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ করেছেন ওই কোম্পানীর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারা বলেছেন, যড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আইন ও নীতিমালা লংঘন করে কোম্পানীর ১৭ জন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়। উচ্চ আদালত ওই বরখাস্ত আদেশ বাতিল করেছে। বিমা উন্নয়ন কতৃপক্ষের নিয়োগ দেওয়া প্রশাসকের স্বেচ্ছাচারিতায় অচলাবস্থার কারণে ইতোমধ্যে কোম্পানীর ৫০ শতাংশ ব্যবসা কমেছে। প্রশাসককে অপসারণসহ ৮দফা দাবি না মানলে কর্মবিরতি পালনসহ আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
বুধবার রাজধানীর মালিবাগে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স ভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য তুলে ধরেন কোম্পানীর অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, ইন্স্যুরেন্স বিষয়ে কোন ধারণা না থাকায় বর্তমান প্রশাসক এসএম ফেরদৌসের নেতৃত্বে দেশের একমাত্র লাভজনক বিমা কোম্পানী এখন উল্টো পথে হাটছে। প্রতিষ্ঠার ১০ বছরে এই প্রথম গ্রাহকের বিমা দাবির ৭ দিন পেরিয়ে গেলেও তা পূরণ করতে পারেনি কোম্পানী। নানা অজুহাতে কোম্পানীর সকল প্রকার সেবা প্রদান বন্ধ করা হয়েছে। তাই বাধ্য হয়েই কর্মীরা কর্মবিরতি পালন করছে। এতে কোম্পানীতে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে কোম্পানী সংশ্লিষ্ট ২৮ হাজার পরিবার ও তাদের উপর নির্ভরশীল ৭০ হাজার বীমা পরিবারের সদস্য এবং ৮ লক্ষাধিক গ্রাহক সংকটের চরম মূখে পড়েছে।
মালিকানা বদলের মাধ্যমে সোনালী লাইফ ইন্সুইরেন্স ধ্বংসের চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেন কোম্পানীর সহকারী ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মঞ্জুর মোর্শেদ। তিনি বলেন, আগের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইওি) দুর্নীতি খতিয়ে দেখতে সোনালী লাইফ ইন্সুইরেন্সে প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছিলো বিমা উন্নয়ন কতৃপক্ষ। কিন্তু তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর দুর্নীতির তদন্ত না করে কোম্পানীর স্বার্থ বিরোধী একের এক পদক্ষেপ নিয়েছেন। যৌক্তিক কারণ ছাড়াই শীর্ষ নির্বাহীদের বরখাস্ত করেন। যা পরে উচ্চ আদালত রহিত করে। নিয়ম বহিভুত ভাবে নিজস্ব লোকজন নিয়োগ দিয়েছেন। সকল সুযোগ-সুবিধা বন্ধ ও কর্ম পরিবেশ নষ্ট করে কর্মীদের ধর্মঘটে যেতে বাধ্য করেছেন।
বিমা খাতে অভিজ্ঞতা শুন্য বর্তমান প্রশাসককে সরিয়ে সেখানে একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে নিয়োগসহ ৮দফা দাবি তুলে ধরেন কোম্পানীর সহকারী ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমদাদুল হক সাহিল। তিনি বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত লাগার কর্ম বিরতি চলবে। কোনভাবেই কর্মীরা কোম্পানীটি ধ্বংসের আয়োজন মেনে নিবে না। এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত দাবিনামায় বলা হয়, সোনালী লাইফের সকল কর্মকর্তাদের বকেয়া পাওনা দ্রুত পরিশোধ করতে হবে। নিরপেক্ষ অডিট কোম্পানি দিয়ে দ্রুত পূর্ণাঙ্গ অডিট সম্পন্ন করে রিপোর্ট প্রকাশ এবং অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। বেতন নীতিমালা কার্যকর করতে হবে।