
রহমত,মাগফিরাত, নাজাতের বার্তা নিয়ে এলো পবিত্র মাহে রামাদান
মোহাম্মদ মকিস মনসুর
রহমত (আল্লাহর অনুগ্রহ), মাগফেরাত (ক্ষমা) ও নাজাত (দোজখের আগুন থেকে মুক্তি) বার্তা নিয়ে ফিরে এলো পবিত্র মাহে রামাদ্বান। ইসলামের তৃতীয় স্তম্ভ রোজা হচ্ছে ফারসি শব্দ, এর আরবি পরিভাষা হচ্ছে সাওম, বহুবচনে বলা হয় সিয়াম। সাওম অর্থ বিরত থাকা, পরিত্যাগ করা। রোজা প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের জন্য ফরজ একটি ইবাদত। আরবি মাসসমূহের মধ্যে সবচেয়ে বরকতময় ও মর্যাদাপূর্ণ মাস। এ মাসের গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্য অপরিসীম।
রমজান তাকওয়া ভিত্তিক জীবন গঠন ও মহান আল্লাহর অপূর্ব রহমতের বারিধারায় সমৃদ্ধ একটি মাস। রমজান হচ্ছে কোরআনের মাস, সত্য-মিথ্যার পার্থক্য রচনাকারী জিহাদী অভিযানগুলোর মাস।
এ মাসে সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার, স্ত্রী-সহবাস ও যে কোনো ধরনের পাপ কাজ থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে রোজা পালন করছে মুসলমানরা। এ মাসের শেষ অংশে রয়েছে হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও উত্তম কদরের রাত। ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী, এ মাসে প্রতিটি নেক আমলের সওয়াব আল্লাহতায়ালা ৭০ গুণ বাড়িয়ে দেন। মুমিনদের জন্য রমজান মাস ইবাদতের বসন্তকাল।
শুধু উপবাস থাকার নাম সিয়াম বা রোজা পালন করা নয়। সিয়াম পালন করার অর্থ হলোঃ আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় ইহজাগতিক অন্যায় অবিচার লোভ লালসা হিংসা নিন্দা মিথ্যাচারিতা পরিহার, মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ববোধ ও শৃঙ্খলা বোধ রক্ষা, ও পশুত্ব বোধ পরিহার করে ন্যায় সত্য পথে পরিশুদ্ধ জীবন গঠনের চর্চার নাম হলো সিয়াম বা রোজা।
“হে মুমিনগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে। যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর। যেন তোমরা তাকওয়া (আল্লাহ ভীতি) অর্জন করো।” (সূরা বাক্বারা- ১৮৩)
“যে কেউ রামাদ্বানের রোজা রাখে, ঈমান ও সওয়াবের আশায়, তার বিগত জীবনের সব পাপ মাফ করে দেওয়া হয়।: (বুখারী-৩৮)
“রোজা হলো (পাপাচার থেকে) রক্ষার ঢাল স্বরূপ। তাই তোমাদের কেউ রোজা রাখলে অশ্লীল কথা বলবে না, চিৎকার ঝগড়াঝাঁটি করবে না। যদি কেউ তাকে গালি দেয় বা তার সঙ্গে মারামারি করে, তাকে বলবে - আমি তো রোজাদার! আমি তো রোজাদার!” (বুখারী-১৮৯৪)
‘‘আল্লাহ তা’য়ালা বলেন- মানুষের প্রতিটি ভালো কাজ নিজের জন্য হয়ে থাকে, কিন্তু রোজা শুধুমাত্র আমার জন্য, অতএব আমি নিজেই এর প্রতিদান দিবো।” (বুখারী-১৯০৪)
‘‘আল্লাহ তা‘আলা বলেন- মানব সন্তানের প্রতিটি নেক আমলের প্রতিদান দশ থেকে সাতশত গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়ে থাকে। কিন্তু রোজার বিষয়টি ভিন্ন। কেননা রোজা শুধুমাত্র আমার জন্য, আমিই এর প্রতিদান দিবো।” (মুসলিম-১১৫১)
‘‘রোজা ঢাল স্বরূপ। এ দ্বারা বান্দা তার নিজেকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করতে পারে।’’ (আহমাদ-১৫২৯৯)
‘‘যে কেউ আল্লাহর রাস্তায় (অর্থাৎ শুধুমাত্র আল্লাহকে খুশী করার জন্য) একদিন রোজা পালন করবে, তা দ্বারা আল্লাহ তাকে জাহান্নামের অগ্নি থেকে সত্তর বছরের রাস্তার পরিমাণ দূরবর্তী স্থানে রাখবেন।” (বুখারী-২৮৪০; মুসলিম-১১৫৩)
“যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও নেকির আশায় রামাদ্বান মাসে কিয়াম করবে (তারাবীহ পড়বে) তার পূর্বেকার পাপ সমূহ মাফ করে দেয়া হবে।” (বুখারী-৩৫; মুসলিম-৭৬০)
যে ব্যক্তি মিথ্যা পরিত্যাগ করল না, আল্লাহ তা'য়ালা তার পানাহার ত্যাগ কবুল করেন না।” (বুখারী-১৯০৩)
“রোজা পালনকারীর জন্য দু’টো বিশেষ আনন্দ মুহূর্ত রয়েছে - একটি হল ইফতারের সময়, আর দ্বিতীয়টি হল তার রবের সাথে সাক্ষাতের সময়।” (বুখারী-৭৪৯২)
“জান্নাতে একটি দরজা রয়েছে। যার নাম রাইয়্যান। কিয়ামতের দিন শুধু রোজা পালনকারীরা ঐ দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে। তাদের ছাড়া অন্য কেউ সেই দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। সেদিন ঘোষণা করা হবে, রোজা পালনকারীরা কোথায়? তখন তারা দাঁড়িয়ে যাবে ঐ দরজা দিয়ে প্রবেশ করার জন্য। তারা প্রবেশ করার পর ঐ দরজাটি বন্ধ করে দেয়া হবে। ফলে তারা ব্যতীত অন্য কেউ আর সেই দরজা দিয়ে জান্নাতে ঢুকতে পারবে না।” (বুখারী-১৮৯৬; মুসলিম-১১৫২)
মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, “বলুন, এটি আল্লাহর অনুগ্রহে ও তার দয়ায়। সুতরাং এতে তারা আনন্দিত হোক। এটি তারা যা সঞ্চয় করে রাখে তা থেকে উত্তম।” (সুরা ইউনুস আয়াত ৫৮)।
তাই রমজান মাস যথার্থভাবে উদযাপনের জন্য এখনই পূর্ব প্রস্তুতি নেওয়া:
তাওবা ইসতেগফার করা; রমজান পাওয়ার আশা এবং নিয়ত করা; রমজানের সব উপকারিতা স্মরণ করা; খারাপ অভ্যাস ত্যাগ করা; মানসিক প্রতিজ্ঞা করা; কাজা রোজা আদায় করা; সাধারন ক্ষমা পাওয়ার চেষ্টা করা; ফরজ রোজার নিয়ম কানুন জেনে নেয়া; বিগত রমজানের অসমাপ্ত কাজ চিহ্নিত করা; রমজানের মাসায়েল গুলো পুনরায় দেখে নেয়া, রমজানের ২৪ ঘন্টার রুটিন করা; রমজানের চাঁদের অনুসন্ধান করা; বেশি বেশি দান সদকা করা; বেশি বেশি দোয়া করা; কোরআনের মাস রমজানের সম্মানার্থে পরিবারের সকলের মধ্যে পবিত্র কোরআনের তিলাওয়াত চর্চা ও আমল করা।
নিজেদের আত্মশুদ্ধি ও আল্লাহর নৈকট্য লাভ ও পাপ মোচনের আশায় রমজানের এক মাস ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল থাকবেন বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।
রমজান মাসের ফজিলত ও বৈশিষ্ট্য ও আমাদের করণীয়ঃ
১. ফরজ রোজা পালন, ২. কুরআন নাজিল, ৩.জান্নাতের দরজা খুলে দেওয়ার মাস ৪. জাহান্নামের দরজা বন্ধ ৫. শয়তানকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা, ৬.লাইলাতুল কদর পাওয়া, ৭. দোয়া কবুল হওয়া, ৮. জাহান্নাম থেকে মুক্তি ৯. ক্ষমা পাওয়া ১০. সৎ কাজের প্রতিদান বহুগুণে বেড়ে যাওয়া, ১১. হজের সাওয়াব পাওয়া, ১২. রোজাদারের বিশেষ সম্মান।
রমজান মাস-ই হল সেই মাস; যাতে নাজিল করা হয়েছে পবিত্র কোরআন মজিদ, যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথ যাত্রীদের জন্য সুষ্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী।’ (সুরা বাকারা ঃ আয়াত ১৮৫)
নিজেদের আত্মশুদ্ধি ও আল্লাহর নৈকট্য লাভ ও পাপ মোচনের আশায় রমজানের এক মাস ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল থাকবেন বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।
চাঁদ দেখে কল্যাণের দোয়া পাঠ
নবী করিম (স.) চাঁদ দেখার সঙ্গে সঙ্গে পুরো মাসের জন্য কল্যাণের দোয়া করেছেন। হজরত তালহা ইবনে উবায়দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) যখন নতুন চাঁদ দেখতেন এই দোয়া পড়তেন-
اللَّهُمَّ أهِلَّهُ عَلَيْنَا بِالأمْنِ وَالإيمانِ، وَالسَّلاَمَةِ وَالإسْلاَمِ، رَبِّي وَرَبُّكَ اللهُ
‘আল্লাহুম্মা আহিল্লাহু আলাইনা বিল আমনি ওয়াল ঈমান, ওয়াস সালামাতি ওয়াল ইসলাম, রাব্বি ওয়া রাব্বুকাল্লাহ’
অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ! তুমি ওই চাঁদকে আমাদের ওপর উদিত করো নিরাপত্তা, ঈমান, শান্তি ও ইসলামের সঙ্গে। (হে চাঁদ) আমার ও তোমার প্রতিপালক আল্লাহ।’ (সুনানে তিরমিজিঃ ১২২৮)
দোয়ার প্রতিটি শব্দ দ্বারা শান্তি ও নিরাপত্তার আবেদন করা হয়েছে। ‘আহিল্লাহু’ শব্দের অর্থ হচ্ছে উদিত করুন। অর্থাৎ এই চাঁদ দেখার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সুরক্ষা ও ঈমান দিন। ‘বিল আমনি’ অর্থ বিভিন্ন ধরণের মসিবত থেকে আমাদের নিরাপদে রাখুন। ‘ওয়াল ঈমানি’ অর্থ ঈমানের ওপর সুদৃঢ় রাখুন। ‘ওয়াস সালামাতি ওয়াল ইসলামি’ অর্থ দ্বীন ও দুনিয়ার সব ধরণের ক্ষতি থেকে হেফাজত করুন। ‘রাব্বি ওয়া রাব্বুকাল্লাহ’ শব্দ দ্বারা নতুন চাঁদকে সম্বোধন করে বলা হয়েছে, আমি তোমাকে দেখে দোয়া পড়েছি কিন্তু তোমার স্রষ্টা ও আমার স্রষ্টা এক ও অভিন্ন।
তারাবির নামাজ আদায়
রমজানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো- তারাবি। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের উদ্দেশ্যে রমজান মাসে তারাবির নামাজ আদায় করে, তার অতীতের গুনাহসমূহ আল্লাহপাক ক্ষমা করে দেবেন। (বুখারি প্রথম খ-, ৩০ পৃ. হাদিস ৩৬, ই.ফা.)
তারাবির নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করা সুন্নত। পারিবারিকভাবেও তারাবির নামাজের জামাত করা যেতে পারে। বিধি-নিষেধের কারণে যদি সম্ভব না হয়, তবে একাকী তো অবশ্যই পড়া যায়। কেননা একাধিক সাহাবী তারাবির নামাজ একাকী আদায় করেছেন বলেও প্রমাণিত।
তাহাজ্জুদ আদায়
তাহাজ্জুদ সারা বছরের আমল। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘ফরজ নামাজসমূহের পর উত্তম নামাজ হলো রাতের তাহাজ্জুদ’ (মুসলিমঃ ১১৬৩)। রমজানে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় অত্যন্ত সহজ। সেহরির আগে বা পরে দুই-দুই রাকাত করে তাহাজ্জুদ আদায় করা যেতে পারে। মনে রাখতে হবে, পবিত্র রমজানে নফলের সওয়াব ফরজের সমান, ফরজের সওয়াব সত্তর গুণ।
তাছাড়া, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) রমজান মাসে তাহাজ্জুদের প্রতি সবাইকে উদ্বুদ্ধ করতেন। তবে তিনি অবশ্য পালনীয় বিষয় হিসেবে নির্দেশ দেননি। তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমান ও নিষ্ঠার সঙ্গে রমজানে তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করবে, আল্লাহ তাআলা তার পূর্ববর্তী পাপ মার্জনা করবেন।’ (সুনানে নাসায়িঃ ২১৯৭)
সেহরির সুন্নত আদায়
আল্লাহর রাসুল (স.) বলেন, ‘তোমরা সেহরি খাও। কেননা, সেহরিতে বরকত রয়েছে।’ (সহিহ মুসলিমঃ ১/৩৫০)
রাসুলুল্লাহ (স.) আরও বলেন , ‘এক ঢোক পানি দিয়ে হলেও সেহরি করো। কারণ যারা সেহরি খায়, আল্লাহ তাআলা তাদের উপর রহমত বর্ষণ করেন এবং ফেরেশতারা তাদের জন্য রহমতের দোয়া করেন।’ (মুসনাদে আহমদঃ ৩/১২; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাঃ ৯০১০; সহীহ ইবনে হিব্বানঃ ৩৪৭৬)
সুবহে সাদিকের কাছাকাছি সময় সেহরি খাওয়া মোস্তাহাব।
রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘সকল নবীকে সময় হওয়ার পরপরই (তাড়াতাড়ি) ইফতার করতে এবং শেষ সময়ে সেহরি খেতে আদেশ করা হয়েছে।’ (আলমুজামুল আওসাতঃ ২/৫২৬; মাজমাউয যাওয়াইদঃ ৩/৩৬৮)
আমর ইবনে মায়মুন আল আওদি বলেন, ‘সাহাবায়ে কেরাম দ্রুত ইফতার করতেন আর বিলম্বে সেহরি খেতেন।’ (মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাকঃ ৭৫৯১; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবাঃ ৯০২৫)তবে, ‘সুবহে সাদিক হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা হয়Ñএত দেরি করা মাকরুহ’ (ফতোয়া আলমগিরিঃ খ-- ১, পৃষ্ঠা- ২০১)।
ইফতারের সুন্নত আদায়
অনতিবিলম্বে ইফতার করা মহানবী (স.)-এর গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। হযরত সাহল ইবনে সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যতদিন মানুষ অনতিবিলম্বে ইফতার করবে, ততদিন তারা কল্যাণের মধ্যে থাকবে’ (সহিহ বুখারিঃ ১৮২১; সহীহ মুসলিমঃ ১৮৩৮)। অন্য হাদিসে নবী করিম (স.) বলেছেন—
‘দ্বীন ততদিন পর্যন্ত ঠিক থাকবে, যতদিন পর্যন্ত মানুষ তাড়াতাড়ি ইফতার করবে। কেননা, ইহুদি-খ্রিস্টানরা বিলম্বে ইফতার করে’ (আবু দাউদঃ ২৩৫৫)
এছাড়াও ইফতারের দোয়া পড়া এবং খেজুর, পানি দিয়ে ইফতার করা সুন্নত। আল্লাহর রাসুল (স.) খেজুর, পানি, দুধ দিয়ে ইফতার করেছেন। ইফতারে বেশি খাওয়া জরুরি নয়। আনাস বিন মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘নবী (স.) নামাজের আগে কয়েকটি কাঁচা খেজুর খেয়ে ইফতার করতেন। যদি কাঁচা খেজুর না থাকত, তাহলে শুকনো খেজুর দিয়ে। যদি শুকনো খেজুরও না থাকতো তাহলে কয়েক ঢোক পানি দিয়ে।’(তিরমিজি; রোজা অধ্যায়ঃ ৬৩২)
লক্ষ্য রাখতে হবে, রোজাদারকে ইফতার করানো বেশি ফজিলতপূর্ণ আমল। ‘যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, সে রোজাদারের সমপরিমাণ সওয়াব পাবে; রোজাদারের সওয়াব থেকে একটুও কমানো হবে না।’ (তিরমিজিঃ ৮০৭; ইবনে মাজাহঃ ১৭৪৬; ইবনে হিব্বানঃ ৮/২১৬; সহীহ আল-জামেঃ ৬৪১৫)
জবানের হেফাজত, গীবত-মিথ্যাচার সবসময় বর্জনীয়মিথ্যাচার ও গিবতের কারণে রোজা ভেঙে যায় না ঠিক, তবে রোজার সওয়াব ও গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যায়।
রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘রোজা হলো (জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচার) ঢাল, যে পর্যন্ত না তাকে বিদীর্ণ করা হয়। জিজ্ঞাসা করা হলো, ইয়া রাসুলুল্লাহ, কিভাবে রোজা বিদীর্ণ হয়ে যায়? নবী করিম (স.) বললেন, মিথ্যা বলার দ্বারা অথবা গিবত করার দ্বারা।’ (আলমুজামুল আওসাত, তাবরানীঃ ৭৮১০; নাসায়ীঃ ২২৩৫)
হাদিসে কুদসিতে মহান আল্লাহ বলেছেনঃ “আদম সন্তানের প্রতিটি কাজই তার নিজের জন্য; শুধু রোজা ছাড়া। কারণ, তা আমার জন্য। তাই আমি নিজে এর পুরস্কার দেব। রোজা ঢালস্বরূপ। রোজা রেখে তোমাদের কেউ যেন অশ্লীলতায় লিপ্ত না হয় এবং ঝগড়া-বিবাদ না করে। যদি কেউ তাকে গালি দেয় অথবা তার সঙ্গে ঝগড়া করতে চায়, তাহলে সে যেন বলে, আমি রোজাদার। যে মহান সত্তার হাতে আমার প্রাণ, তার শপথ! অবশ্যই (অনাহারের কারণে সৃষ্ট) রোজাদারের মুখের ঘ্রাণ আল্লাহর কাছে মিসকের সুগন্ধির চেয়েও সুগন্ধিময়ৃ। (বুখারিঃ ১৯০৪; মুসলিমঃ ২৭৬২)
সুতরাং জবানের হেফাজত করা পবিত্র রমজানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলত পূর্ণ আমল।
অন্যের কষ্ট অনুধাবন ও দান-সদকা
মুমিন রোজা রাখার মাধ্যমে ক্ষুধার্ত মানুষের কষ্ট অনুধাবন করতে পারে। তাই সে প্রতিবেশী ও অসহায় মানুষের খোঁজখবর রাখে। এটি রমানের গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত।
রাসুলুল্লাহ সা. রমজান মাসে বেশি বেশি দান করতেন। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (স.) ছিলেন মানুষের মাঝে সর্বশ্রেষ্ঠ দাতা। রমজানে তার দানশীলতা (অন্য সময় থেকে) অধিকতর বৃদ্ধি পেত; যখন জিব্রাইল (আ.) তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন। জিব্রাইল (আ.) রমজানের প্রতি রাতে আগমন করতেন এবং তারা পরস্পরকে কোরআন শোনাতেন। আল্লাহর রাসুল (স.) তখন কল্যাণবাহী বায়ুর চেয়ে অধিক দানশীল ছিলেন।’ (বুখারিঃ ০৬; মুসলিমঃ ২৩০৮; মুসনাদে আহমদঃ ২৬১৬) তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত সুন্নতের অনুসরণ করা।
কোরআন তেলাওয়াত ও অধ্যয়ন
পবিত্র রমজান হচ্ছে কোরআন নাজিলের মাস। এই মাসে বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত ও অধ্যয়নের গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক বেশি। প্রতি রমজানে রাসুল (স.) ও জিবরাইল (আ.) পরস্পরকে কোরআন শোনাতেন। নবীজি (স.) জীবনের শেষ রমজানে উভয়ে উভয়কে দু-দুবার করে পূর্ণ কোরআন পাঠ করে শোনান। (তাফসিরে ইবনে কাসির)।
এ ক্ষেত্রে ‘য়ুদাররিসু’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, যা অর্থ ও মর্ম অনুধাবনের তাগিদ দেয়। তাই তরজমা ও তাফসীরের প্রতিও গুরুত্ব দিতে হবে।
তাওবা ও মাগফেরাত
তওবা-ইস্তেগফার সব সময়ের আমল হলেও রমজানে এর গুরুত্ব ও ফজিলত স্বাভাবিকভাবেই অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি। তাই রমজানে তওবা-ইস্তেগফার করা জরুরী ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। রাসুলে আকরাম (স.) বলেন, ‘গুনাহ থেকে তওবাকারীর অবস্থা এমন, যেন তার কোনো গুনাহ নেই’। (ইবনে মাজাঃ ২/১৪১৯)
মিসওয়াক
মিসওয়াক করা একটি হারানো সুন্নত। মহানবী (স.) থেকে মিসওয়াক প্রসঙ্গে ৪০টি হাদিস বর্ণিত আছে। তিনি বলেছেন, ‘যখনই হজরত জিবরাইল (আ.) আমার কাছে আসতেন, তখন আমাকে মিসওয়াকের নির্দেশ দিতেন। এতে আমি আশঙ্কা বোধ করলাম যে, (মিসওয়াক করে) আমি আমার মুখের সম্মুখ দিক ক্ষয় করে দেবো (আহমদঃ ২২২৬৯, মিশকাতঃ৩৫৫)। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (স.) রাতে বা দিনে যখনই ঘুম থেকে উঠতেন তখনই অজু করার আগে মেসওয়াক করতেন’ (আহমদ, আবু দাউদ, মিশকাতঃ ৩৫২)।
মহানবী (স.) আরও বলেছেন, ‘নবী-রাসুলদের সুন্নত হলো চারটি। ১. লজ্জা করা, অন্য বর্ণনায় খৎনা করা; ২. সুগন্ধি ব্যবহার করা; ৩. মিসওয়াক করা এবং ৪. বিয়ে করা’ (তিরমিজি, মিশকাতঃ ৩৫১)। তাই আমাদের উচিত, অবহেলিত এই সুন্নতটি রমজানে চালু করা।
ওমরা
পবিত্র রমজান মাসে ওমরা পালন করলে হজের সমতুল্য সওয়াব পাওয়া যায়। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করিম (স.) এক আনসারি নারীকে বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে হজ করতে তোমার বাধা কিসের?’ ইবনে আব্বাস (রা.) নারীর নাম বলেছিলেন; কিন্তু আমি ভুলে গিয়েছি। ওই নারী বলল, ‘আমাদের একটি পানি বহনকারী উট ছিল; কিন্তু তাতে অমুকের পিতা ও তার পুত্র (অর্থাৎ মহিলার স্বামী ও ছেলে) আরোহণ করে চলে গেছেন। আর আমাদের জন্য রেখে গেছেন পানি বহনকারী আরেকটি উট, যার দ্বারা আমরা পানি বহন করে থাকি।’ নবী (স.) বলেন, ‘আচ্ছা, রমজান এলে তখন ওমরা করে নিয়ো। কেননা রমজানের একটি ওমরাহ একটি হজের সমতুল্য।’ (বুখারী ঃ ১৭৮২)
শেষ দশ দিন ইতেকাফ করা অথবা আমলের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া
রাসুল সা. রমজানের রাতে ঘুমাতেন না। কিন্তু শেষ দশকে তিনি সবাইকে নিয়ে ইবাদত করতেন। সাহাবীরাও এই সময়কে খুব গুরুত্ব দিতেন। রমজানের অন্যান্য দিনে যেই আমলগুলো করতেন, শেষ দশকে এসে তার পরিমাণ অনেক বেড়ে যেত।
হযরত আয়েশা (রা.) বলেন, রমজানের শেষ দশকে নবীজি (সা.) ইবাদতের জন্য লুঙ্গি শক্ত করে বেঁধে ফেলতেন। অর্থাৎ ইবাদতের জন্য পরিপূর্ণ প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন। সারা রাত জাগ্রত থেকে ইবাদত করতেন এবং স্বীয় পরিবার-পরিজনকে জাগিয়ে দিতেন। (সহিহ বুখারি ও মুসলিম)
রমজানের শেষ দশক এত গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার মূল কারণ হল, লাইলাতুল কদর বা হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ রাতের কারণে। কিন্তু হাদিস শরীফে কদরের রাত ঠিক কোনটি, তা নির্ধারণ করে বলা হয়নি। রমজানের শেষ দশকে তা খুঁজতে বলা হয়েছে। হাদিসে আছে, নবীজি (স.) নির্দেশ দিয়েছেনঃ ‘তোমরা রমজানের শেষ দশকে লাইলাতুল-কদর খোঁজ করো।’ (বুখারিঃ ২০২০) অন্য বর্ণনায় আরও স্পষ্ট করে বলেছেন, “তোমরা রমজানের শেষ দশকের বে-জোড় রাতগুলোতে লাইলাতুল-কদর তালাশ করো”। (বুখারীঃ ২০১৭)
একারণেই রমজানের শেষ দশকে ইতেকাফ করার বিধান দেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে কদরের রাত পাওয়াটা নিশ্চিত হয়। তাই সম্ভব হলে ইতিকাফ করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ।
সদকাতুল ফিতর আদায়
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর যুগ থেকে আজ পর্যন্ত মুসলিম উম্মাহ ইসলামের অন্যান্য মৌলিক আমল ও ইবাদতের মতো সদকাতুল ফিতর ও নিয়মিত আদায় করে আসছে।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) সদকাতুল ফিতরকে অপরিহার্য করেছেন, অনর্থক অশালীন কথা ও কাজে রোজার যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণের জন্য এবং নিঃস্ব লোকের আহার জোগানোর জন্য। (সুনানে আবু দাউদঃ ১৬০৯)
হযরত জারির (রা.)-এর সূত্রে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেন, রমজানের রোজা সদকাতুল ফিতর আদায় করার পূর্ব পর্যন্ত আসমান-জমিনের মাঝে ঝুলন্ত থাকে। (আত তারগিব ওয়াত তারহীবঃ ২/৯৬)
গুনাহ পরিত্যাগ ও তাকওয়া অর্জন
আল্লাহ তাআলা রমজান মাসে সিয়াম সাধনার উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলেছেন, ‘হে মুমিনরা! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ওপর, যেন তোমরা তাকওয়া (আল্লাহভীতি) অর্জন করতে পারো।’ (সূরা বাকারাঃ ১৮৩)
হাদিসে এসেছে, ‘অনেক রোজাদার এমন আছে, যাদের রোজা পালনের সার হলো তৃষ্ণার্ত আর ক্ষুধার্ত থাকা। ’ (সুনানে তিবরানীঃ ৫৬৩৬)
সুতরাং মুসলমান মাত্রই গুনাহ থেকে পবিত্র হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিরত থাকার সর্বোচ্চ চেষ্টা ও আমল করা জরুরি।
শ্রমিক ও অধীনস্তদের কাজ হালকা করারমজান মাস রহমতের ও ইবাদতের জন্য বিশেষায়িত। এ মাসে মালিক বা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো শ্রমিকের প্রতি রহম করা, তাঁর কাজের চাপ কমিয়ে দিয়ে তাঁকে ইবাদতে সহায়তা করা। প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রামাদান মাসে তার কাজের লোকের কাজ কমিয়ে সহজ করে দিল, কেয়ামতের দিন আল্লাহ তার হিসাব সহজ করে দেবেন।’ (বুখারি)
পারিশ্রমিকের ব্যাপারে হাদিস শরিফে আছে, ‘তোমরা শ্রমিকের মজুরি পরিশোধ করো তার ঘাম শুকানোর আগেই’ (বায়হাকি, মিশকাত)। যারা শ্রমিকের মজুরি আদায়ে টালবাহানা করেন, তাদের ব্যাপারে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স.) বলেছেন, ‘সামর্থ্যবান পাওনা পরিশোধে গড়িমসি করা জুলুম বা অবিচার’ (বুখারী)। ‘হাশরের দিনে জুলুম অন্ধকার রূপে আবির্ভূত হবে’ (মুসলিম)।
চন্দ্র বছর ও সৌর বছরের মধ্যে ১১ দিনের পার্থক্যের কারণে প্রতিবছর রমজান মাসের সূচনার তারিখ পাল্টে যায়। কবে চাঁদ দেখা যাবে, তার ওপর নির্ভর করে পবিত্র রমজান মাস শুরু হয়।
রোজার নিয়ত
نَوَيْتُ اَنْ اُصُوْمَ غَدًا مِّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْم
নাওয়াইতু আন আছুম্মা গাদাম মিন শাহরি রমাজানাল মুবারাকি ফারদাল্লাকা, ইয়া আল্লাহু ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আনতাস সামিউল আলিম।
বাংলা অর্থ : "হে আল্লাহ! আমি আগামীকাল পবিত্র রমজানের তোমার পক্ষ থেকে নির্ধারিত ফরজ রোজা রাখার ইচ্ছা পোষণ (নিয়্যত) করলাম। অতএব তুমি আমার পক্ষ থেকে (আমার রোযা তথা পানাহার থেকে বিরত থাকাকে) কবুল কর, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী।
ইফতারের কিছুক্ষণ পূর্বে ‘ইয়া ওয়াসিয়াল মাগফিরাতি, ইগফিরলী’ এ দোয়াটি বেশী বেশী পড়তে হবে। অর্থঃ হে মহান ক্ষমা দানকারী! আমাকে ক্ষমা করুন। (শু‘আবুল ঈমানঃ ৩/৪০৭)
ইফতারের দোয়া
اَللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَ عَلَى رِزْقِكَ وَ اَفْطَرْتُ بِرَحْمَتِكَ يَا اَرْحَمَ الرَّاحِيْمِيْن
"আল্লাহুম্মা সুমতু লাকা ওয়া তাওয়াক্কালতু আ’লা রিযকিকা ওয়া আফতারতু বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমীন।
বাংলা অর্থ : "হে আল্লাহ! আমি তোমারই সন্তুষ্টির জন্য রোজা রেখেছি এবং তোমারই দেয়া রিযিক এর মাধ্যমে ইফতার করছি।
ইবাদতের বসন্তকাল অবারিত পুণ্যের এ মাসে, একটি নফল ইবাদত অন্য মাসের ফরজ এবং একটি ফরজ ইবাদত অন্য মাসের সত্তরটি ফরজ ইবাদত এর পুণ্য সমতুল্য বলে প্রিয় নবীজি সা. ঘোষণা করেছেন।
রামাদান মাসে আমাদের হোক দীপ্ত শপথ, বিচ্ছেদ হোক পাপের সাথে, সম্পর্ক হোক মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তথা আমাদের রবের সাথে, আমাদের সবাইকে মনে রাখা উচিত মানুষকে খুশি করা খুব কঠিন, কিন্তু মহান আল্লাহকে খুশি করা খুব সহজ,
কোনো ব্যক্তি যখন "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ" অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নাই বাক্যটি পড়তে থাকে, তখন বাক্যটি আকাশসমূহ ছেঁদ করে আল্লাহর সামনে গিয়ে পৌঁছায়।
আল্লাহ তা'য়ালা তখন বাক্যটিকে বলেন স্থির হও। তখন বাক্যটি বলে আমি কিভাবে স্থির হবো? আমাকে যে উচ্চারণ করেছে তাকে তো এখনো মাফ করা হয়নি "রব"। তখন আল্লাহ তা'য়ালা বলেন- আমি তোমাকে এমন লোকের জিহবা দিয়ে উচ্চারণ করিয়েছি। উচ্চারণের আগেই যাকে মাফ করে দিয়েছি।
সুবহানাল্লাহ! (হাদীসে কুদসী, বুখারী)
আলহামদুলিল্লাহ, মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে লাখো কোটি শুকরিয়া আদায় করি আজ ও আমাদেরকে ভালো রেখেছেন, সুস্থ রেখেছেন, আমাদের পরিচিত ও অপরিচিত অনেকেই আজ বেঁচে নেই, সবাইকে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যেন জান্নাতবাসী করেন, এই দোয়া সহ আমার মত সকল অসুস্থ রোগীদের শিফা দান সহ, সবার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা সহ আসুন সবাই দোয়া করি,
দোয়াই হচ্ছে একমাত্র ভরসা ,,
اَذْهَبِ الْبَأْسَ رَبَّ النَّاسِ - وَاشْفِ اَنْتَ الشَّافِي - لَا شِفَاءَ اِلَّا شِفَائُكَ شِفَاءً لَا يُغَادِرُ سَقْمًا
উচ্চারণ :“আল্লাহুম্মা, রাব্বান নাস! আযহিবিল বা’স। ওয়াশফি, আনতাশ শাফি। লা শিফাআ ইল্লা শিফা-উক, শিফা-আ’ লা ইউগাদিরু সাকামা।”অর্থ : ‘হে মানুষের প্রতিপালক! এ রোগ দূর কর এবং আরোগ্য দান কর, তুমিই আরোগ্য দানকারী। তোমার আরোগ্য ব্যতিত কোনো আরোগ্য নেই। এমন আরোগ্য, যা বাকী রাখে না কোনো রোগ।’ (বুখারি, মিশকাত) আমিন,
পরিশেষে এই বলে আজকের লেখা শেষ করতে চাই, মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যেনো প্রতিটি মানুষের উপর খাস রহমত, বরকত, মাগফিরাত, ও নাজাত দান করা সহ রমজান তাকওয়া ভিত্তিক জীবন গঠনের মাস এই মাহে রামাদানে আমাদের সকল মুসলমানদের রোজা রাখা এবং সিয়াম আদায় করার তাওফিক দান করেন, আমিন, সুম্মা আমিন।
লেখক, সাংবাদিক, সাবেক সেক্রেটারি, কার্ডিফ শাহজালাল মস্ক এন্ড ইসলামিক কালচারাল সেন্টার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, আনজুমানে আল- ইসলাহ ওয়েলস ডিভিশন ইন ইউকে