
বসুন্ধরায় ঈদের বিক্রি ‘মোটামুটি’, তবে ‘গতবারের চেয়ে কম’
Bussiness Desk
রাজধানীর অন্যতম বিপণি বিতান বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সে ঈদের কেনাকাটা ‘মোটামুটি’ জমে উঠলেও সেটাকে গতবারের চেয়ে কম বলছেন বিক্রেতারা।
তারা বলছেন, রোজার শুরুর দিকে বেচাকেনা ‘ভালো’ ছিল। কিন্তু ২০ রোজার পর সেটি কমে যায়। আগামী শুক্র ও শনিবার (২৮ ও ২৯ মার্চ) বিক্রি কিছুটা বাড়বে বলে আশা করছেন তারা।
বসুন্ধরা সিটির চতুর্থ তলা পর্যন্ত জামা-কাপড়ের দোকান। পঞ্চম তলায় বিক্রি হয় জুতা। আর ষষ্ঠ তলায় রয়েছে সোনা ও অলংকারের দোকান।
বৃহস্পতিবার বসুন্ধরা সিটিতে গিয়ে দেখা যায়, ব্র্যান্ডের দোকানগুলোতে উপচেপড়া ভিড়। বিশেষ করে ইজি ফ্যাশন, আর্টিসান, টুয়েলভ, জেন্টল পার্ক, ইনফিনিটি, রিচম্যান, লুবনান, দর্জিবাড়ি, ইলিইন, ক্যাটস আই, ফিট এলিগ্যান্স, রাইজ, প্লাস পয়েন্টের মত শোরুমে মানুষের উপস্থিত বেশি। ভিড় ছিল ‘লেভেল টু’তে আড়ংয়ের বিক্রয়কেন্দ্রেও।
শাড়ির দোকানেও ক্রেতাদের আনোগোনা দেখা যায়, তবে তুলনামূলক কম বলছেন বিক্রেতারা।
শাড়ির দোকানের মধ্যে জ্যোতি, জামদানি হাউস, নীল আঁচল শাড়িজ, কালাঞ্জলি শাড়িজ, মনে রেখ শাড়িজ, ঢাকা জামদানি কুটির, শাড়িবাজার, শালিমার ও অর্চিতে ক্রেতা ছিল বেশি।
মনে রেখ শাড়িজের ম্যানেজার সবুজ মিয়া বলেন, “ঈদে শাড়ির বেচাকেনা কম। ঈদে এখন অন্যান্য পোশাকই বেশি পরেন নারীরা।
“কয়েক বছর আগেও পাঞ্জাবি ও থ্রি-পিছের মত ঈদে শাড়ি বেচাকেনা অনেক বেশি হত; এখন আর সেটা নাই।
লেভেল ফাইভের লা রিভ, রেড এবং লেভেল সিক্সে বাটা, এপেক্স, ওরিয়ন, বে ইত্যাদির শোরুমে বিক্রেতারা ব্যস্ত সময় পার করছেন।
লেভেল-২ এর ‘রাইজ’ শোরুমের ম্যানেজার তাজুল ইসলাম বলেন, “২০ রমজানের আগ পর্যন্ত ভালো বেচাকেনা হয়েছে। এখন বেচাকেনা কিছুটা কম। আর সব মিলিয়ে এবার বেচাকেনা গতবারের চেয়ে খুবই কম।”
বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সে কেনাকাটা করতে আসা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী রানা হামিদ বলেন, “কয়েকটি শপিং মল ঘুরেছি; পছন্দসই পাঞ্জাবি পাইনি। অনেকগুলো ব্যান্ডের দোকান একসঙ্গে থাকায় এখানে আসছি।
জেন্টল পার্কের ম্যানেজার মো. আসাদ হোসেন বলেন, “আমাদের জেন্টস (পুরুষ) আইটেম বেশি চলছে। বিশেষ করে পাঞ্জাবি, জিন্স প্যান্ট ও টি-শার্ট। এবার আড়াই হাজার থেকে ৮ হাজার টাকার পাঞ্জাবি রয়েছে।”
ইলিইনে দেখা যায়, ক্রেতারা লাইন ধরে ঢুকছেন।
সেখানে কথা হয় পুরান ঢাকা থেকে আসা মনামি আক্তারের সঙ্গে।
তিনি বলেন, “স্বামী ও ছোট ভাইয়ের জন্য পাঞ্জাবি কিনতে অনেক দোকান ঘুরেছি। এখানে দাম একটু বেশি, তবে পাঞ্জাবি ‘প্রিমিয়াম’। পছন্দ হলেই নিয়ে যাব।”
পাঞ্জাবির আরেক পরিচিত ব্যান্ড লুবনানের বিক্রয়কর্মী সাহরিফ হাসান তানিম বলেন, “বিভিন্ন সংকটের কারণে মানুষের হাতে টাকা নেই। আগে রাজনৈতিক লোকজন একসঙ্গে ৩০০ পিসও অর্ডার করে নিয়ে যেত। এবার এমন একজনও আসেননি।
“আমাদের পাঞ্জাবির দাম এমনিতেই একটু বেশি। সব ধরনের কাস্টমার আমাদের দোকানে আসে না। সব মিলিয়ে এবার বেচাকেনা কম।”
লুবনানে পাঞ্জাবি কিনতে আসা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক শাহিনুজ্জামান বলেন, “দাম একটু বেশি হলেও এখানকার পাঞ্জাবি আমার পছন্দ। নিজের পাশাপাশি কয়েক আত্মীয়ের জন্য কিনতে এসেছি।”ক্যাটস আইয়ের বিক্রয়কর্মী নাজমুল হাসান অয়ন বলেন, “বেচাকেনা আছে মোটামুটি। আমাদের বেচাকেনা আসলে ২০ রোজার আগেই বেশি হয়। আগামী শুক্র ও শনিবার হয়ত বিক্রি একটু বাড়বে।”
তিনি বলেন, “ভিড় দেখা গেলেও বসুন্ধরায় ঈদের ভিড় আরও বেশি হয়। এ সময়ে আমাদের কর্মীদের বলার মত সুযোগ থাকে না।”
বসুন্ধরা সিটিতে ছেলেমেয়েকে সঙ্গে নিয়ে কেনাকাটা করতে এসেছেন কুমিল্লার ব্যবসায়ী পলাশ মাহমুদ।
তিনি বলেন, “ছেলে-মেয়েরা ঢাকার বাইরে লেখাপড়া করে; কেনাকাটা করে ঢাকায়। তাই এখানে আসছি, দেখি তাদের পছন্দে কী কী কেনা যায়।”
গেন্ডারিয়ার বাসিন্দা আব্দুল আওয়াল এসেছেন ছেলেকে নিয়ে। তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মোটামুটি পছন্দ অনুযাযী সব কিছু এখানে পাওয়া যায়; বেশি ঘোরাঘুরি করতে হয় না। তাই সব সময় এখান থেকেই কেনাকাটা করি।”
দর্জিবাড়ির ম্যানেজার জাহিদুল ইসলাম বলেন, “লোকজন তো আছে, তবে ঈদের বেচাকেনায় ভিড় আরও বেশি থাকার কথা।
“রমজানের শুরুতে বেচাকেনা ভালো ছিল। ২০ রোজার পর পরে কিছুটা কমেছে।”
Source ;Bdnews24