ডার্ক মোড
Tuesday, 01 April 2025
ePaper   
Logo
এসএসএফের সাবেক ডিজি মুজিব ও তার স্ত্রীর বিপুল সম্পদ

এসএসএফের সাবেক ডিজি মুজিব ও তার স্ত্রীর বিপুল সম্পদ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট 

স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) সাবেক মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. মুজিবুর রহমান ও তার স্ত্রীর নামে বিপুল সম্পদের খোঁজ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।দুদক বলেছে, রাজধানীর মিরপুরে ৪ হাজার ৫০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, মিরপুর, ক্যান্টনমেন্ট, খিলক্ষেত, পূর্বাচল এলাকায় ১০টি প্লট রয়েছে এসএসএফের সাবেক ডিজি মুজিবুর ও তাঁর স্ত্রীর নামে।

 এছাড়া ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় আরও একটি ফ্ল্যাট, পূর্বাচলে একটি বাড়ি ও সাভারে আরেকটি জমিসহ টিনশেড বাড়ির সন্ধান পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

 দুদকের অনুসন্ধানে মুজিবুর রহমান ও তার স্ত্রী তাসরিন মুজিবের এসব স্থাবর সম্পদ ছাড়াও ১৫টি ব্যাংক হিসাবে বিপুল অঙ্কের অর্থের লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হওয়ার পর থেকে আত্মগোপনে রয়েছেন মুজিবুর রহমান।  

দুদকের সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, মুজিবুর রহমান সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে পরিবারের সদস্যদের নামে অবৈধ সম্পদ করেছেন। মুজিবুর ও তার স্ত্রীর বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে দুর্নীতি-ঘুষের বিপুল পরিমাণ টাকা জমা ও উত্তোলন করা হয়েছে। মুজিবুর রহমান তার স্ত্রী তাসরিন মুজিবের নামে থাকা ঢাকার ২টি ফ্ল্যাট, ১১টি প্লট ও সাভারের বাড়ি ক্রোক করতে আদালতে আবেদন করেছে দুদক। পাশাপাশি তাদের ১৫টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আবেদন করা হয়েছে। দুদকের উপপরিচালক মোহাম্মদ সিরাজুল হক গত সোমবার আদালতে মুজিবুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী তাসরিন মুজিবের নামে থাকা স্থাবর সম্পদ কোক ও অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধের আবেদন করেন।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগপর্যন্ত মুজিবুর রহমান এসএসএফের মহাপরিচালক ছিলেন। এরপর তাকে ময়মনসিংহে আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ডের জিওসি পদ থেকে বদলির আদেশ দেওয়া হয়। গত ১২ সেপ্টেম্বর মুজিবুর রহমানকে বরখাস্ত করা হয়। লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মুজিবুর রহমান এর আগে সেনা সদর দপ্তরে কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) অতিরিক্ত মহাপরিচালক ছিলেন।

দুদক সূত্র জানায়, মুজিবুর রহমান ও তার স্ত্রী তাসরিন মুজিবের নামে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় প্লট রয়েছে। এর মধ্যে ৭টি প্লটের মালিক তাসরিন মুজিব। তার নামে এসব প্লট রয়েছে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের বাউনিয়া মৌজা এলাকায়। তাঁর নামে থাকা সবচেয়ে বড় প্লট সাড়ে ৭ কাঠার। যার মৌজা মূল্য দেখানো হয়েছে ৯৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা। এছাড়া তাসরিনের নামে ঢাকার ক্যান্টনমেন্টের জোয়ার সাহারা এলাকায় একটি ফ্ল্যাট রয়েছে।

মিরপুরের মাটিকাটা এলাকায় মুজিবুর রহমানের নামে ৪০৫০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। তিনি এই ফ্ল্যাটের মূল্য দেখিয়েছেন ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা। তাঁর নামে মিরপুরের মাটিকাটা, ক্যান্টনমেন্ট ও খিলক্ষেত এলাকায় তিনটি প্লট রয়েছে। মুজিবুরের নামে সবচেয়ে বড় সাড়ে ৭ কাঠার প্লট রয়েছে খিলক্ষেত এলাকায়। প্লটের বাইরে ঢাকার অদূরে পূর্বাচলে তার নামে একটি প্লটসহ বাড়ি রয়েছে। এছাড়া সাভারে আছে ৫ শতাংশ জায়গার ওপর জমিসহ টিনশেড বাড়ি।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘দুর্নীতি ছাড়া কোনো সরকারি বা সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তার পক্ষে চাকরি করে এত বিপুল সম্পদ অর্জন করা সম্ভব না। হয়তো অনেক যুক্তি আসতে পারে সম্পদ অর্জনের পক্ষে। কিন্তু তিনি যদি শান্তি মিশনের শীর্ষ পদেও থাকেন তবু এত সম্পদ অর্জন করা সম্ভব না। দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। এছাড়া যাদের আশ্রয় ও প্রশ্রয়ে এরা দুর্নীতি করেছেন, তাঁদেরও আইনের আওতায় আনা হোক। ’

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন

আপনি ও পছন্দ করতে পারেন