
গোয়ালী মন্দ্রা বেদে পল্লীতে বিভিন্ন ধরণের মাদক ও নগদ টাকা উদ্ধার, নারী পুরুষসহ গ্রেপ্তার ১৮
মুন্সীগঞ্জ (দক্ষিন) প্রতিনিধি
মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের গোয়ালী মান্দ্রা বেদে পল্লীতে সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও আনসার বাহিনীর এক যৌথ অভিযান চালানো হয়। শুক্রবার ভোর রাত সোয়া ৫টা হতে আড়াই ঘন্টা ব্যাপি এ অভিযানে পলাতক আসামীসহ ১৮ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধার করা হয় হিরোইন, আইস, ইয়াবা ও গাঁজাসহ নগদ টাকা। উদ্ধার অভিযানে নের্তৃত্ব দেন লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নেছার উদ্দিন। এসময় তার সাথে ছিলেন লৌহজং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল ইমরান।
গতকাল জেলা পুলিশের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, বেদে পল্লীতে মাদক বিরোধী শুক্রবারের যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১০০ গ্রাম গাঁজা, ৭৩০ পিস ইয়াবা, ৪ গ্রাম আইস, ২৫ গ্রাম হেরোইন, ১২টি বাটন মোবাইল ফোন, ১৩টি এন্ড্রোয়েড সেটসহ মাদক বিক্রির নগদ দুই লক্ষ বিয়াল্লিশ হাজার সাতশত তিয়াত্তর টাকা উদ্ধার করা হয়। এ সময় মাদক বিক্রি ও মাদক মজুত রাখার অপরাধে লৌহজংয়ের মৌছামান্দ্র গ্রামের সামসুদ্দিন মোল্লার পুত্র মোঃ রাজন ইসলাম (২২), একই এলাকার মো. আলীর পুত্র আবু তালহা (১৪), শাহজাহানের কন্যা মোসাঃ ঝিনুক (২২), আহম্মদ আলীর স্ত্রী মোসাঃ সুমনা (৩৫), রোকন মন্ডলের স্ত্রী ফারজানা আক্তার (৩৫), শ্রীনগরের মশদগাও গ্রামের মৃত জামাল উদ্দিনের পুত্র ওমর ফারুক (৩৭) লৌহজংয়ের খড়িয়া বেদে পল্লীর রানা মিার পুত্র আজিজুল (১৭), শ্রীনগরের বীরতারা গ্রামের মৃত শেখ সিরাজের পুত্র মোঃ আকাশ (২৭) মৌছামান্দ্রার মো. রাশেদ হোসেনের পুত্র মোঃ নিরব (২০) শিবচর থানার মোল্লাকান্দি এলাকার মোসলেম মেল্লার পুত্র মোঃ রানা (২০), মৌছামান্দ্রার মৃত জিন্নাত আলীর পুত্র মোঃ এনামুল (৫৫) গোয়ালী মান্দ্র পশ্চিম পাড়া এলাকার নুরহাত সাপুরিয়ার পুত্র মোঃ মাগরিব (২৪) খড়িয়া মাল পাড়ার মৃত মাইন উদ্দিনের পুত্র মোয়াজ্জেম মাল (৫৫) দক্ষিন শিমুলিয়া গ্রামের মৃত আয়নাল শিকদারের পুত্র মোঃ রাকিব হোসেন (৩৪) শ্রীনগরের খোদাই বাড়ি এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের পুত্র দুলাল বেপারী (২২) সিরাজদিখানের মালখানগর গ্রামের আঃ আজিজের পুত্র মোঃ জুয়েল (৪৯) শ্রীনগরের পাটাভোগ এলাকার আলী আজমের পুত্র মোঃ আওলাদ হোসেন (২৬) ও মৌছা মান্দ্রার মাসুদ মোল্লার পুত্র মাহিন মোল্লা (১৯) কে গ্রেপ্তার করা হয়। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন একাধিক মাদক মামলার পলাতক আসামী।
লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নেছার উদ্দিন জানিয়েছে, গোয়ালীমান্দ্রা বেদে পল্লীটি মাদক বেচা-কেনার আখড়ায় পরিণত হয়েছিল। মাদক বেচা-কেনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ছিচকে চুরিও বেড়ে গিয়েছিল। এ নিয়ে উপজেলা মাসিক আইন শৃঙ্খলা মিটিংয়েও আলোচনা হয়েছে। এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় ও সমাজ হতে মাদক প্রতিরোধ ও নির্মুলের উদ্দেশ্যে শুক্রবার উপজেলার গোয়ালী মান্দ্রা বেদে পল্লীতে আমি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল ইমরানকে সাথে নিয়ে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ ও আনসার সমন্বয়ে যৌথবাহিনীর অভিযান পরিচালনা করি। পর্যায়ক্রমে উপজেলার অন্যান্য এলাকাতেও এরকম অভিযান চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
এদিকে যৌথ বাহিনীর এ অভিযাানকে সাধুবাদ জানিয়েছে এলাকাবাসী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসীদের অনেকেই জানান, আমাদের এলাকাটিকে নষ্ট করে দিয়েছে এ বেদে পল্লী। এখানে দূর দূরান্ত থেকে লোকজন মাদক কিনতে আসে। রাতে নেশা করে টাকা শেষ হয়ে গেলে এরা বেদে পল্লী সংলগ্ন গ্রামগুলোতে চুরি করে লোকজনের বাসাবাড়ির মালামাল নিয়ে আবার এই মাদক বিক্রেতাদের কাছেই বিক্রি করতো। গত কয়েক মাস ধরে এদের জ¦ালায় আমরা অতিষ্ট ছিলাম। এ ধরণের অভিযান চালানোয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ।