
গাড়ীর ক্যামেরায় ধারণ করা ডাকাতি চেষ্টার ঘটনা ভাইরাল :ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওেেত ব্যরিকেপ দিয়ে ফিল্মি স্টাইলে গাড়ীতে ডাকাতির চেষ্টায় ৫ ডাকাত গ্রেপ্তার
মুন্সীগঞ্জ (দক্ষিন) প্রতিনিধি
ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ব্যারিকেট দিয়ে গাড়ীতে ডাকাতির চেষ্টা ঘটনায় ৫ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে মুন্সীগঞ্জ ডিবি পুলিশ। ফিল্মি স্টাইলে মহাসড়ক বেড়িকেট দিয়ে ডাকাতি চেষ্টার এই ঘটনা গাড়ীতে থাকা ভিডিও ক্যামেরায় ধারণ হয়। এই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক ভাইরাল হয়।
পুলিশ ওই ভিডিও দেখে ডাকাত দলটিতে গ্রেপ্তারে মাঠে নেমে গতকাল বুধবারের মধ্যে এই ৫ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় বলে জেলা পুলিশের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়।
প্রেস ব্রিফিংয়ে বলা হয়, গত ৫ মে দিবাগত রাত আনুমানিক দেড়টার সময় মাদারীপুর জেলার শিবচর থানার ভদ্রাসন গ্রামের তোতা মিয়ার ছেলে মোঃ রবিউল আলম(৩০)-এর জনৈক প্রতিবেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি তার নিজের গাড়িতে ওই অসুস্থ প্রতিবেশির চিকিৎসার জন্য তাকেসহ মোট চার জন ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করেন। রাত আনুমানিক ২টার সময় সময় ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের শ্রীনগর থানাধীন ছনবাড়ি মোড়ে এসে এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ির চাপ থাকায় তিনি ঢাকা মুখি বাম পার্শ্বের সার্ভিস লেন দিয়ে নেমে গাড়ী চারাতে থাকেন। সে সময় ষোলঘর এর নিকটবর্তী এলাকায় তিনি রাস্তার উপর বেশ কিছু ছনের আটি দিয়ে তৈরী করা একটি বেরিকেড দেখতে পান। তিনি গাড়ি থামাতেই রাস্তার নিচ থেকে দেশীয় মারাত্বক ধারালো অস্ত্র (ছেন-দা) সজ্জিত ছয়জন ডাকাত অস্ত্র উঁচিয়ে গাড়িতে আক্রমন করতে প্রবল বেগে ছুটে আসে।
তাদের একজন গাড়ীর ডানপার্শে আঘাত করতেই গাড়ীর দক্ষ চালক অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার সহিত গাড়ীটিকে দ্রুত পিছনের দিকে চালনা করে। এতে ডাকাত দল গাড়ীটিকে ধরার জন্য তাদের অস্ত্র সহ ধাওয়া করে। কিন্তু গাড়ীটিকে ধরতে ব্যর্থ হয়ে একজন ডাকাত ক্ষোভে তার ধারালো অস্ত্রটি গাড়ীর দিকে ছুঁড়ে মারে। তবে গাড়ীটি নিরাপদে ডাকাতরে নিয়ন্ত্রনের বাহিরে চলে যায়। অস্ত্রের আঘাতে গাড়ীর ডানপার্শ্বের লুকিংগ¬াস এবং বনেট কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গাড়ীটির সামনে ক্যামেরা সংযুক্ত থাকায় এই পুরো কার্যক্রমটি ক্যামেরায় রেকর্ড হয়। এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ প্রধান ধারার গনমাধ্যমে ব্যপক ভাবে প্রচারিত হয়।
মুন্সীগঞ্জ জেলা পুলিশ ঘটনাটি অবগত হয়ে তাৎক্ষনিক ভাবে জেলা পুলিশের সিনিয়র অফিসাররে তত্বাবধানে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি চৌকশ টিম এসআই আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা পূর্বক আসামীরে গ্রেপ্তার অভিযান পরিচালনা করে। মঙ্গলবার দুপুর থেকে বুধবার দুপুর ১টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে অভিযান পরিচালনা করে ঢাকা জেলার বিভিন্ন থানা এলাকা থেকে ঘটনার সাথে জড়িত ৫ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। তাদের ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্রশস্ত্র এবং ঘটনার সময় তাদের পরিহিত পোষাক উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীগন সকলেই ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছে।
তাদের বিরূদ্ধে বিধি মোতাবেক আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। উল্লেখ্য যে, উল্লেখিত ডাকাতদলের নেতা মোঃ কামাল ওরফে সিএনজি কামাল (৪০) তার দলের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে গত সেপ্টেম্বর মাসে একইভাবে বর্নিত ঘটনাস্থলের নিকটবর্তী স্থানে এক্সপ্রেসওেয়েতেই একটি ডাকাতি সংঘটিত করেছিল। সে সময় তারা ভিকটিমের মূল্যবান স্বর্নালংকার ও টাকা পয়সা সহ একটি লাইসেন্সকৃত অস্ত্র ডাকাতি করে নিয়ে যায়। সে ঘটনায় শ্রীনগর থানার মামলা নাম্বার-২৩ তারিখ-২৭/০৯/২০২৪ইং ধারা-৩৯৫/৩৯৭ পেনাল কোড রুজুর পর ঘটনা উঘাটন পূর্বক আসামীরে গ্রেপ্তার ও লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধার করা হয়। সম্প্রতি আসামীগন উক্ত মামলায় জামিনে মুক্ত হয়ে পূনরায় একইভাবে এই অপরাধ সংঘঠিত করে।
গ্রেফতারকৃত ডাকাতরা হলো পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী থানার টিলা গ্রামের মৃত ফজল আলীর পুত্র মোঃ কামাল ওরফে সিএনজি কামাল (৪০)। বর্তমানে সে ঢাকার কেরানীগঞ্জের বন্ধডাক পাড়ায় বসবাস করে। একই জেলা ও থানার নয়া ভাঙ্গুরি গ্রামের মো. খলিল সরদারের পুত্র মোঃ ইসমাঈল সরদার (৩৮)। সেও ঢাকার কেরানী গঞ্জের একই এলাকায় বসবাস করে। মাদারীপুর জেলার কালকিনী থানার আউলিয়ার চর গ্রামের মৃত কাঞ্চন বেপারীর পুত্র মোঃ রমজান বেপারী (২৭)। সেও কেরানীগঞ্জের বন্ধ ডাকপাড়া এলাকায় বসবাস করে। পটুয়াখারী জেলার কলাপাড়া তানার উত্তর কাচামায়া গ্রামের শাহ আলম মোল্লার পুত্র মোঃ রাসেল মোল্লা (২৪)। সে কেরনী গঞ্জের আমবাগিচা পানির ট্যাঙ্ক এলাকায় বসবাস করে। এবং মাদারীপুর সদরের আত্যিপুর গ্রামের মো. সারোয়ার হোসেনের পুত্র মোঃ লিমন মাতব্বর (২০)। লিমন কেরানীগঞ্জের কমতলী নাইচ্চার বাড়ির ভাড়াটিয়া