
এক টুকরো রুটির জন্য কিশোরী হত্যা: মনিরামপুরের নীরব ট্র্যাজেডি ও সমাজের বিবেক পরীক্ষা
- জেমস আব্দুর রহিম রানা
যশোরের মনিরামপুর উপজেলার রোহিতা গ্রামে ঘটে যাওয়া কিশোরী হত্যার ঘটনা শুধু পারিবারিক ট্র্যাজেডি নয়। এটি সমাজের নৈতিকতা, পরিবারিক দায়িত্ব, শিশু অধিকার এবং রাষ্ট্রীয় দায়িত্বহীনতার এক ভয়ঙ্কর প্রতিফলন। মাত্র ১৩ বছর বয়সী এক মাদরাসাছাত্রীকে রুটি চুরির অভিযোগে তার বাবার হাতে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। ঘটনা পুরো জেলা স্তব্ধ করেছে। শিশুদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা এবং তাদের মৌলিক অধিকার রক্ষা করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলেও, মনিরামপুরে তা ব্যর্থ হয়েছে। শিশুরা ক্ষুধার কারণে ছোটখাটো ভুল করতে পারে, কিন্তু সেই ভুলের জন্য মৃত্যুর শাস্তি গ্রহণযোগ্য নয়। পরিবার, সমাজ, শিক্ষক এবং রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো শিশুদের সুরক্ষা, শিক্ষা, খাদ্য এবং সহানুভূতির পরিবেশ নিশ্চিত করা।
শিশুর বাবা-মায়ের দায়িত্ব ছিল তাকে ভালোবাসা, সহমর্মিতা এবং শিক্ষা দিয়ে বড় করা। কিন্তু সহানুভূতি ও মানবিক সমঝোতার অভাব শিশুটিকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে। সমাজের কাছে এটি একটি কঠিন বার্তা, যে শিশুদের প্রতি সহানুভূতি ও নৈতিক শিক্ষার অভাব ভয়ঙ্কর পরিণতি ডেকে আনতে পারে। দারিদ্র্য ও ক্ষুধার প্রভাব শিশুরা ছোটখাটো ভুল করতে প্ররোচিত করে। মনিরামপুরের কিশোরী ক্ষুধার কারণে রুটি চুরি করেছিল। পরিবারের সহানুভূতি এবং সমাজের সচেতনতা থাকলে এমন মর্মান্তিক ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব ছিল।
স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, শিশুটির মা তাকে জুতা দিয়ে মারধর করেছিলেন। বাবা মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়ে পরে ফিরে এসে মেয়েটিকে মারধর করতে থাকে এবং এক পর্যায়ে শ্বাসরোধে শিশুটি মারা যায়। এরপর মরদেহ গোপন করা হয় এবং রাতের আঁধারে সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়। মরদেহ পানিতে ফেলার সময় শিশুটির পায়জামা ও ওড়না আলাদা করে ফেলে দেওয়া হয়।
মনিরামপুর থানার ওসি বাবলুর রহমান খান জানিয়েছেন, বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি হত্যার দায় স্বীকার করেন। প্রথমে ধর্ষণের অভিযোগসহ মামলা দায়ের করা হয়েছিল, কিন্তু তদন্তে হত্যার দায় বাবার প্রমাণিত হয়। আদালতে স্বীকারোক্তির পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, এমন ঘটনা আগে কখনো দেখা যায়নি। একজন বাবা, যিনি সন্তানকে সুরক্ষা দিতে বাধ্য ছিলেন, তিনি নিজ হাতে তার সন্তানকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছেন।
সামাজিক বিজ্ঞানীরা বলছেন, শিশুদের ভুল ক্ষমা করা এবং তাদের শেখানোই অভিভাবকের দায়িত্ব। মারধর ও সহিংসতা কখনোই সমাধান নয়। দারিদ্র্য ও ক্ষুধার প্রভাব শিশুরা অপরাধের দিকে ঠেলে দেয়। সমাজ ও রাষ্ট্রের ব্যর্থতা শিশুদের ওপর চাপিয়ে দেয়, যেখানে শিশুটি ভুল করলেও তার শাস্তি অমানবিক। শিশুর মৌলিক অধিকার—খাদ্য, নিরাপত্তা ও শিক্ষা—নিশ্চিত করা না হলে এমন ট্র্যাজেডি ঘটতে পারে।
শিশু মনোবিজ্ঞানী ড. শামীমা করিম বলেছেন, শিশুরা তুচ্ছ ভুল করতে পারে, কিন্তু তা শিক্ষার মাধ্যমে সংশোধনযোগ্য। শাস্তি ও সহিংসতা শিশুর মনস্তাত্ত্বিক বিকাশকে ধ্বংস করে। পরিবারিক সহানুভূতি না থাকলে শিশুর মানসিক ও শারীরিক নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়ে। শিশুরা ভুলের জন্য শিক্ষার সুযোগও হারায়। পরিবার এবং সমাজের দায়িত্ব হলো শিশুর ছোটখাটো ভুলকে শিক্ষা এবং মানবিক সহানুভূতির মাধ্যমে সমাধান করা।
স্থানীয়রা বলছেন, এমন ঘটনা আগে কখনো দেখেননি। একজন বাবা সন্তানকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছেন। এটি কল্পনাতীত। মাদরাসার শিক্ষকরা জানিয়েছেন, শিশুদের ক্ষুধা, কৌতূহল বা অনভিপ্রায় তাদের ছোটখাটো ভুলের দিকে ঠেলে দেয়। পরিবারে সহানুভূতি ও শিক্ষা থাকলে এমন মর্মান্তিক পরিণতি এড়ানো সম্ভব।
সামাজিক কর্মীরা বলছেন, শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দরিদ্র পরিবারের জন্য কার্যকর সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকা জরুরি। দারিদ্র্য ও ক্ষুধার কারণে শিশুরা অপরাধের দিকে ধাবিত হয়। সমাজ, পরিবার এবং রাষ্ট্রকে একযোগে কাজ করতে হবে, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নিরাপদ, সুরক্ষিত এবং মানবিক পরিবেশে বড় হতে পারে। শিশুরা ক্ষুধা, দরিদ্রতা ও অভাবের কারণে ছোটখাটো ভুল করতে পারে, কিন্তু সেই ভুলকে মৃত্যুর শাস্তিতে পরিণত করা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।
বাংলাদেশে শিশু অধিকার সংরক্ষণে শিশু সুরক্ষা আইন, শিশু অধিকার রক্ষা নীতি এবং বিভিন্ন সামাজিক নীতিমালা আছে। আইন ও নীতি শিশুদের প্রতি সহিংসতা, নির্যাতন এবং অবহেলার বিরুদ্ধে কার্যকর। কিন্তু মনিরামপুরের ঘটনা প্রমাণ করেছে, আইন থাকলেও বাস্তবায়ন ও সামাজিক সচেতনতার অভাব কতটা বিপজ্জনক। রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো শুধু আইন প্রণয়ন নয়, তা কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা। শিশুরা নিরাপদ পরিবেশে বড় হলে সমাজও উন্নত হবে।
আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা দেখায়, শিশুদের প্রতি সহনশীলতা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার মাধ্যমে এমন হত্যার ঘটনা কমানো সম্ভব। নরওয়ে, সুইডেন ও কানাডার মতো দেশগুলোতে শিশুদের ছোটখাটো ভুল বা অপরাধ শিক্ষার মাধ্যমে সংশোধন করা হয়। পরিবার, স্কুল এবং সমাজের মধ্যে শিশুর জন্য নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তোলা হয়। বাংলাদেশেও আইন আছে, কিন্তু বাস্তবায়ন এবং সামাজিক সচেতনতা অপর্যাপ্ত।
ঘটনার মাধ্যমে সমাজ ও রাষ্ট্রকে শিক্ষা নিতে হবে। শিশুরা ক্ষুধার্ত হলে ছোটখাটো ভুল করতে পারে, কিন্তু পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো শিশুর ক্ষুধা, নিরাপত্তা ও শিক্ষা নিশ্চিত করা। এক টুকরো রুটি এবং একটি ছোট ভুলের জন্য শিশুর জীবন হারানো সমাজের জন্য এক ভয়ঙ্কর সতর্কবার্তা।
এই ঘটনার পর থেকে মনিরামপুরে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। শিশু অধিকার সংস্থা, সামাজিক কর্মী এবং স্থানীয় প্রশাসন শিশুদের নিরাপত্তা ও সহানুভূতির পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুদের শিক্ষা, খাদ্য এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মানসিক ও শারীরিক বিকাশ বিপন্ন হবে। শিশুদের প্রতি সহনশীলতা, পরিবারিক সমঝোতা এবং সামাজিক দায়িত্বশীলতা বৃদ্ধি না হলে এমন মর্মান্তিক ঘটনা ভবিষ্যতেও ঘটতে পারে।
মনিরামপুরের ঘটনা আমাদের শেখাচ্ছে, পরিবার ও সমাজের দায়িত্বশীলতা ছাড়া শিশুদের জীবন নিরাপদ রাখা সম্ভব নয়। আইন ও নীতি থাকলেও বাস্তবায়ন, সচেতনতা এবং সহানুভূতি অপরিহার্য। শিশুরা নিরাপদ, সুরক্ষিত এবং মানবিক পরিবেশে বড় হতে পারলে সমাজও উন্নত হবে। এক টুকরো রুটি চুরির জন্য শিশুর মৃত্যুর ঘটনা কেবল পারিবারিক শোক নয়, এটি সমগ্র সমাজের বিবেককে ঝাপসা করে।
এ ঘটনায় দেশের মানুষ, বিশেষজ্ঞ, শিক্ষক এবং প্রশাসনকে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। শিশুদের প্রতি সহানুভূতি, পরিবারের সহানুভূতি এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সমাজকে শিক্ষা দিতে হবে যে, ছোটখাটো ভুল মানবিক শিক্ষা ও সহানুভূতির মাধ্যমে সংশোধনযোগ্য। শাস্তি এবং সহিংসতা কখনোই সমাধান নয়। এই ঘটনার মাধ্যমে সমাজকে শিশু অধিকার, নৈতিক দায়িত্ব এবং মানবিক মূল্যবোধে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।
মনিরামপুরের ঘটনা একটি সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করছে। সমাজ, পরিবার এবং রাষ্ট্র যদি একযোগে শিশুদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সচেষ্ট হয়, তবে ভবিষ্যতে এমন মর্মান্তিক ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব। শিশুদের শিক্ষা, খাদ্য এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সমাজের অগ্রগতির শর্ত। এক টুকরো রুটির জন্য শিশুর জীবন হারানো আমাদের সমাজের দায়িত্ব, মানবিকতা এবং নৈতিকতার পরীক্ষা।
শিশুরা আমাদের ভবিষ্যৎ। তাদের নিরাপদ এবং সহানুভূতিশীল পরিবেশে বড় হতে দেওয়া আমাদের সামাজিক এবং নৈতিক দায়িত্ব। মনিরামপুরের ঘটনা কেবল শোক নয়, এটি আমাদের জন্য সতর্কবার্তা যে শিশুর প্রতি সহানুভূতি, পরিবারিক শিক্ষা এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা ছাড়া কোন আইন কার্যকর হতে পারে না।
এ ঘটনার পর সমাজকে আরও মানবিক, সচেতন এবং দায়িত্বশীল হতে হবে। শিশুদের ক্ষুধা, দরিদ্রতা এবং ছোটখাটো ভুলকে শিক্ষার মাধ্যমে সংশোধন করা, মৃত্যুর শাস্তি থেকে রক্ষা করা, পরিবার ও সমাজকে দায়িত্বশীল করা—এই সবই আমাদের দায়িত্ব। এক টুকরো রুটির জন্য শিশুর জীবন হারানো কখনোই স্বাভাবিক নয়, এটি সমাজের বিবেককে কেঁপে দিয়েছে এবং আমাদের সতর্ক করেছে।
মনিরামপুরের কিশোরী হত্যার ঘটনা আমাদের শেখাচ্ছে যে, নৈতিকতা, সহানুভূতি, পরিবারিক দায়বদ্ধতা এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ছাড়া শিশুর জীবন নিরাপদ রাখা অসম্ভব। শিশুদের ক্ষুধা, দরিদ্রতা এবং ছোটখাটো ভুল স্বাভাবিক, কিন্তু সেই ভুলকে মৃত্যুর শাস্তিতে পরিণত করা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্রকে একযোগে কাজ করতে হবে, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নিরাপদ, সুরক্ষিত এবং মানবিক পরিবেশে বড় হতে পারে।
শিশুদের মৌলিক অধিকার—খাদ্য, শিক্ষা, সুরক্ষা—নিশ্চিত করতে হবে। পরিবার ও সমাজের দায়িত্ব হলো শিশুদের সুরক্ষা, সহানুভূতি এবং শিক্ষার মাধ্যমে উন্নত করা। আইন ও নীতি থাকলেও বাস্তবায়ন, সচেতনতা এবং মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি ছাড়া তা কার্যকর হবে না। মনিরামপুরের ঘটনা স্পষ্ট করে দিয়েছে, শিশুর প্রতি সহানুভূতির অভাব এবং দায়িত্বহীনতা কতটা ভয়ঙ্কর পরিণতি ডেকে আনতে পারে।
শিশু মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, শিশুরা তুচ্ছ ভুল করতে পারে, তবে তা শিক্ষার মাধ্যমে সংশোধনযোগ্য। শাস্তি ও সহিংসতা শিশুর মানসিক বিকাশকে ধ্বংস করে। পরিবারিক সহানুভূতি না থাকলে শিশুর শারীরিক ও মানসিক নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়ে। সমাজকে শিক্ষিত হতে হবে, শিশুদের ছোটখাটো ভুলের প্রতিক্রিয়া কখনো সহিংসতা বা মৃত্যুর শাস্তি নয়। মানবিক শিক্ষা এবং সহানুভূতি তাদের জীবনের বিকাশ নিশ্চিত করে।
স্থানীয়রা বলেন, এমন ঘটনা আগে কখনো দেখেননি। একজন বাবা, যিনি সন্তানকে সুরক্ষা দিতে এবং ভালোবাসা দিতে বাধ্য ছিলেন, তিনি নিজ হাতে তার সন্তানকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছেন। মাদরাসার শিক্ষকরা জানিয়েছেন, শিশুরা ক্ষুধা, কৌতূহল বা অনভিপ্রায় ছোটখাটো ভুল করতে পারে। পরিবারে সহানুভূতি এবং শিক্ষা থাকলে এমন মর্মান্তিক পরিণতি এড়ানো সম্ভব।
সামাজিক কর্মীরা বলছেন, শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দরিদ্র পরিবারের জন্য কার্যকর সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকা জরুরি। দারিদ্র্য ও ক্ষুধার কারণে শিশুরা অপরাধের দিকে ধাবিত হয়। সমাজ, পরিবার এবং রাষ্ট্রকে একযোগে কাজ করতে হবে, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নিরাপদ, সুরক্ষিত এবং মানবিক পরিবেশে বড় হতে পারে। শিশুরা ক্ষুধা, দরিদ্রতা ও অভাবের কারণে ছোটখাটো ভুল করতে পারে, কিন্তু সেই ভুলকে মৃত্যুর শাস্তিতে পরিণত করা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।
বাংলাদেশে শিশু অধিকার সংরক্ষণে শিশু সুরক্ষা আইন, শিশু অধিকার রক্ষা নীতি এবং বিভিন্ন সামাজিক নীতিমালা রয়েছে। এই আইন ও নীতি শিশুদের প্রতি সহিংসতা, নির্যাতন এবং অবহেলার বিরুদ্ধে প্রযোজ্য। কিন্তু মনিরামপুরের ঘটনা প্রমাণ করেছে, আইন থাকলেও বাস্তবায়ন ও সামাজিক সচেতনতার অভাব কতটা বিপজ্জনক। রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো শুধু আইন প্রণয়ন নয়, তা কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা। শিশুরা নিরাপদ পরিবেশে বড় হলে সমাজও উন্নত হবে।
আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা দেখায়, শিশুদের প্রতি সহনশীলতা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার মাধ্যমে এমন হত্যার ঘটনা কমানো সম্ভব। নরওয়ে, সুইডেন ও কানাডার মতো দেশগুলোতে শিশুদের ছোটখাটো ভুল বা অপরাধ শিক্ষার মাধ্যমে সংশোধন করা হয়। পরিবার, স্কুল এবং সমাজের মধ্যে শিশুর জন্য নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তোলা হয়। বাংলাদেশেও আইন আছে, কিন্তু বাস্তবায়ন এবং সামাজিক সচেতনতা অপর্যাপ্ত।
ঘটনার মাধ্যমে সমাজ ও রাষ্ট্রকে শিক্ষা নিতে হবে। শিশুরা ক্ষুধার্ত হলে ছোটখাটো ভুল করতে পারে, কিন্তু পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো শিশুর ক্ষুধা, নিরাপত্তা ও শিক্ষা নিশ্চিত করা। এক টুকরো রুটি এবং একটি ছোট ভুলের জন্য শিশুর জীবন হারানো সমাজের জন্য এক ভয়ঙ্কর সতর্কবার্তা।
এই ঘটনার পর থেকে মনিরামপুরে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। শিশু অধিকার সংস্থা, সামাজিক কর্মী এবং স্থানীয় প্রশাসন শিশুদের নিরাপত্তা ও সহানুভূতির পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুদের শিক্ষা, খাদ্য এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মানসিক ও শারীরিক বিকাশ বিপন্ন হবে। শিশুদের প্রতি সহনশীলতা, পরিবারিক সমঝোতা এবং সামাজিক দায়িত্বশীলতা বৃদ্ধি না হলে এমন মর্মান্তিক ঘটনা ভবিষ্যতেও ঘটতে পারে।
মনিরামপুরের ঘটনা আমাদের শেখাচ্ছে যে, পরিবার ও সমাজের দায়িত্বশীলতা ছাড়া শিশুদের জীবন নিরাপদ রাখা সম্ভব নয়। আইন ও নীতি থাকলেও বাস্তবায়ন, সচেতনতা এবং সহানুভূতি অপরিহার্য। শিশুরা নিরাপদ, সুরক্ষিত এবং মানবিক পরিবেশে বড় হতে পারলে সমাজও উন্নত হবে। এক টুকরো রুটি চুরির জন্য শিশুর মৃত্যুর ঘটনা কেবল পারিবারিক শোক নয়, এটি সমগ্র সমাজের বিবেককে ঝাপসা করে।
এ ঘটনায় দেশের মানুষ, বিশেষজ্ঞ, শিক্ষক এবং প্রশাসনকে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। শিশুদের প্রতি সহানুভূতি, পরিবারের সহানুভূতি এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সমাজকে শিক্ষা দিতে হবে যে, ছোটখাটো ভুল মানবিক শিক্ষা ও সহানুভূতির মাধ্যমে সংশোধনযোগ্য। শাস্তি এবং সহিংসতা কখনোই সমাধান নয়। এই ঘটনার মাধ্যমে সমাজকে শিশু অধিকার, নৈতিক দায়িত্ব এবং মানবিক মূল্যবোধে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।
মনিরামপুরের ঘটনা একটি সতর্কবার্তা হিসেবে কাজ করছে। সমাজ, পরিবার এবং রাষ্ট্র যদি একযোগে শিশুদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সচেষ্ট হয়, তবে ভবিষ্যতে এমন মর্মান্তিক ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব। শিশুদের শিক্ষা, খাদ্য এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সমাজের অগ্রগতির শর্ত। এক টুকরো রুটির জন্য শিশুর জীবন হারানো আমাদের সমাজের দায়িত্ব, মানবিকতা এবং নৈতিকতার পরীক্ষা।
শিশুরা আমাদের ভবিষ্যৎ। তাদের নিরাপদ এবং সহানুভূতিশীল পরিবেশে বড় হতে দেওয়া আমাদের সামাজিক এবং নৈতিক দায়িত্ব। মনিরামপুরের ঘটনা কেবল শোক নয়, এটি আমাদের জন্য সতর্কবার্তা যে শিশুর প্রতি সহানুভূতি, পরিবারিক শিক্ষা এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা ছাড়া কোন আইন কার্যকর হতে পারে না।
এ ঘটনার পর সমাজকে আরও মানবিক, সচেতন এবং দায়িত্বশীল হতে হবে। শিশুদের ক্ষুধা, দরিদ্রতা এবং ছোটখাটো ভুলকে শিক্ষার মাধ্যমে সংশোধন করা, মৃত্যুর শাস্তি থেকে রক্ষা করা, পরিবার ও সমাজকে দায়িত্বশীল করা—এই সবই আমাদের দায়িত্ব। এক টুকরো রুটির জন্য শিশুর জীবন হারানো কখনোই স্বাভাবিক নয়, এটি সমাজের বিবেককে কেঁপে দিয়েছে এবং আমাদের সতর্ক করেছে।
মনিরামপুরের কিশোরী হত্যার ঘটনা আমাদের শেখাচ্ছে যে, নৈতিকতা, সহানুভূতি, পরিবারিক দায়বদ্ধতা এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ছাড়া শিশুর জীবন নিরাপদ রাখা অসম্ভব। শিশুদের ক্ষুধা, দরিদ্রতা এবং ছোটখাটো ভুল স্বাভাবিক, কিন্তু সেই ভুলকে মৃত্যুর শাস্তিতে পরিণত করা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্রকে একযোগে কাজ করতে হবে, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নিরাপদ, সুরক্ষিত এবং মানবিক পরিবেশে বড় হতে পারে।
শিশুদের মৌলিক অধিকার—খাদ্য, শিক্ষা, সুরক্ষা—নিশ্চিত করতে হবে। পরিবার ও সমাজের দায়িত্ব হলো শিশুদের সুরক্ষা, সহানুভূতি এবং শিক্ষার মাধ্যমে উন্নত করা। আইন ও নীতি থাকলেও বাস্তবায়ন, সচেতনতা এবং মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি ছাড়া তা কার্যকর হবে না। মনিরামপুরের ঘটনা স্পষ্ট করে দিয়েছে, শিশুর প্রতি সহানুভূতির অভাব এবং দায়িত্বহীনতা কতটা ভয়ঙ্কর পরিণতি ডেকে আনতে পারে।
শিশু মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, শিশুরা তুচ্ছ ভুল করতে পারে, তবে তা শিক্ষার মাধ্যমে সংশোধনযোগ্য। শাস্তি ও সহিংসতা শিশুর মানসিক বিকাশকে ধ্বংস করে। পরিবারিক সহানুভূতি না থাকলে শিশুর শারীরিক ও মানসিক নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়ে। সমাজকে শিক্ষিত হতে হবে, শিশুদের ছোটখাটো ভুলের প্রতিক্রিয়া কখনো সহিংসতা বা মৃত্যুর শাস্তি নয়। মানবিক শিক্ষা এবং সহানুভূতি তাদের জীবনের বিকাশ নিশ্চিত করে।
স্থানীয়রা বলেন, এমন ঘটনা আগে কখনো দেখেননি। একজন বাবা সন্তানকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছেন। মাদরাসার শিক্ষকরা জানিয়েছেন, শিশুরা ক্ষুধা, কৌতূহল বা অনভিপ্রায় ছোটখাটো ভুল করতে পারে। পরিবারে সহানুভূতি এবং শিক্ষা থাকলে এমন মর্মান্তিক পরিণতি এড়ানো সম্ভব।
সামাজিক কর্মীরা বলছেন, শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দরিদ্র পরিবারের জন্য কার্যকর সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকা জরুরি। দারিদ্র্য ও ক্ষুধার কারণে শিশুরা অপরাধের দিকে ধাবিত হয়। সমাজ, পরিবার এবং রাষ্ট্রকে একযোগে কাজ করতে হবে, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নিরাপদ, সুরক্ষিত এবং মানবিক পরিবেশে বড় হতে পারে। শিশুরা ক্ষুধা, দরিদ্রতা ও অভাবের কারণে ছোটখাটো ভুল করতে পারে, কিন্তু সেই ভুলকে মৃত্যুর শাস্তিতে পরিণত করা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।
কলামিস্ট ও সিনিয়র গণমাধ্যমকর্মী, যশোর।
মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন
আপনি ও পছন্দ করতে পারেন
সর্বশেষ
জনপ্রিয়
আর্কাইভ!
অনুগ্রহ করে একটি তারিখ নির্বাচন করুন!
দাখিল করুন