
হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠদের বিচার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার: ফিনিশ প্রেসিডেন্টকে প্রধান উপদেষ্টা
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠদের বিচার অন্তর্বর্তী সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে বুধবার ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাবের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আইনমান অনুসরণ করেই এই বিচার পরিচালিত হচ্ছে। বিচারাধীন থাকা সত্ত্বেও তিনি (হাসিনা) উসকানিমূলক ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী মন্তব্য করছেন। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা প্রত্যর্পণ চেয়েছি।’
বৈঠকে বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন, জাতিসংঘ সংস্কার, রোহিঙ্গা সংকট, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, আসিয়ানভুক্তির প্রচেষ্টা, শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের বিচার এবং নেপাল-ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ পাওয়ার উদ্যোগসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।
এ সময় অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অব্যাহত সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘গত ১৪ মাসে আমরা (অন্তর্বর্তী সরকার) অভূতপূর্ব আন্তর্জাতিক সমর্থন পেয়েছি।’
তিনি জানান, অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ফেব্রুয়ারিতে অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘গত ১৫ বছর ধরে আমাদের জনগণ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এখন তারা ফেব্রুয়ারির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।’
বাংলাদেশে বড় ধরনের রাজনৈতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার চলছে এবং রাজনৈতিক দলগুলো জুলাই চার্টারে সই করবে বলে আশা করা হচ্ছে বলেও ফিনিশ প্রেসিডেন্টকে জানান তিনি।
ফিনিশ প্রেসিডেন্ট সরকারের পররাষ্ট্রনীতি নিয়েও জানতে চান। উত্তরে ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করতে এবং আসিয়ানের পূর্ণ সদস্যপদের পথে এগোতে কাজ করছে।
বৈঠকে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে কার্যকারিতা বাড়াতে জাতিসংঘের সংস্কার নিয়েও আলোচনা হয়।
প্রেসিডেন্ট স্টাব বলেন, ‘বিশ্বব্যবস্থা বদলাচ্ছে। আমাদের জাতিসংঘকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।’
জবাবে ইউনূস মন্তব্য করেন, ‘বিশ্বব্যাপী অনিশ্চয়তা বাড়ছে, আর জাতিসংঘ অনেকাংশে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রভাব বিস্তারের ক্ষমতা হারিয়েছে।’
এ ছাড়া দুই নেতা দীর্ঘায়িত রোহিঙ্গা সংকট, শরণার্থীদের জন্য আন্তর্জাতিক অর্থায়ন বৃদ্ধি এবং আঞ্চলিক সংযোগ প্রসঙ্গেও কথা বলেন।
ইউনূস বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের সুযোগ পেলে নেপাল, ভুটান ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো উপকৃত হবে এবং এতে আঞ্চলিক প্রবৃদ্ধি দ্রুত ত্বরান্বিত হবে।
বৈঠকে জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান ও এসডিজি-বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদও উপস্থিত ছিলেন।