ডার্ক মোড
Tuesday, 26 August 2025
ePaper   
Logo
যুক্তরাষ্ট্রের সম্মতি সাপেক্ষে চুক্তির তথ্য প্রকাশ করা হবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

যুক্তরাষ্ট্রের সম্মতি সাপেক্ষে চুক্তির তথ্য প্রকাশ করা হবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

নিজ্বস প্রতিনিধি

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার পর দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সইয়ের পর সম্মতি সাপেক্ষে এ সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন।

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের তথ্য অধিকার (তথ্য অধিকার আইন-আরটিআই) এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্মতির ভিত্তিতে আমরা অবশ্যই চুক্তিটি প্রকাশ করব।’ চুক্তি সই হওয়ার পরে একটি যৌথ বিবৃতি দেওয়া হবে, বলেন তিনি।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, চুক্তির বিষয়টি ফাঁস হওয়া কিছুটা দুর্ভাগ্যজনক। ‘আপনিও দেখেছেন। আসলে দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে কিছুই নেই।’

শনিবার (২ আগস্ট) ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে মন্ত্রী (প্রেস) গোলাম মোর্তোজার সঙ্গে কথোপকথনের সময় তিনি এই মন্তব্য করেন। গোলাম মোর্তোজা নিজের ভ্যারিফায়েড ফেসবুক পেজ গণমাধ্যমের জন্য এমন তথ্য প্রকাশ করেছেন।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, তারা স্পষ্টতই সেই বিষয়গুলো থেকে বেরিয়ে এসেছেন, যা পরোক্ষভাবে দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে যেতে পারে এবং মূলত তারা বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করে।

তিনি বলেন, যদি তারা বাণিজ্য চুক্তি বাস্তবায়ন করতে চায়—তাহলে বাংলাদেশের সক্ষমতা বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। ‘একই সঙ্গে, এ বিষয়ে আত্মতুষ্টিরও কোনো সুযোগ নেই,’ বলেন উপদেষ্টা।

তিনি আরও বলেন, ‘এর সাফল্য বা ব্যর্থতা আমাদের সক্ষমতা এবং প্রতিযোগিতার উপর নির্ভর করবে। এর সুফল পেতে হলে আমাদের সক্ষমতা এবং প্রতিযোগিতা বাড়াতে হবে। আমি শুনেছি, আত্মতুষ্টির কোনো সুযোগ নেই। আমি এতে শতভাগ একমত। কোনো অবস্থাতেই আমাদের আত্মতুষ্টির কোনো সুযোগ নেই।’

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৫টি বোয়িং বিমান কেনার বিষয়ে জানতে চাইলে বশির বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য আলোচনায় বিষয়টি মোটেও উত্থাপন করেনি। ‘এই বিষয়টি একতরফা। বোয়িং গত বছর ১২টি বিমান তৈরি করেছিল। তাই এই চুক্তি অনুসারে, তারা ২০৩৭ সালে প্রথম বিমান সরবরাহ করতে সক্ষম হতে পারে।’

কৃষি পণ্যের প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আগ্রহী ছিল। বাংলাদেশ দেড় থেকে দুই হাজার কোটি ডলার মূল্যের খাদ্যপণ্য আমদানি করে এবং যুক্তরাষ্ট্রও কৃষিপণ্যের একটি বৃহৎ উৎপাদক।

বাংলাদেশ মূলত জ্বালানি ও কৃষিপণ্যের ভিত্তিতে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর কথা বলেছে। যে পণ্যগুলো বাংলাদেশকে ইতোমধ্যেই আমদানি করতে হচ্ছে।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি প্রায় ৬০০ কোটি ডলার। তুলা, সয়াবিন, ভুট্টা এবং গমজাত পণ্য আমদানি বাড়িয়ে বাংলাদেশ ২০০ কোটি ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা করতে পারে।

তিনি বলেন, এই পদ্ধতি বাংলাদেশকে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে উল্লেখযোগ্যভাবে সাহায্য করবে। ‘বোয়িং বিমান খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়,’ উল্লেখ করে বশির বলেন, ‘আপনি প্রতিদিন এটি(বোয়িং) কিনবেন না, তবে আপনাকে প্রতিদিন সয়াবিন কিনতে হবে।’

উপদেষ্টা জোর দিয়ে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার বিমানের পরিচালনা ক্ষমতা বৃদ্ধির চেষ্টা করছে।

বাংলাদেশের জাতীয় পতাকাবাহী বিমান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের অতিরিক্ত ১ কোটি যাত্রী পরিবহনের সম্ভাবনা রয়েছে। ২৫টি বিমান খুব বেশি নয়, বলেন তিনি।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বাংলাদেশি রপ্তানি পণ্যের উপর ৩৫ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে পারস্পরিক শুল্ক কমানোর বিনিময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো গোপন চুক্তির জল্পনা-কল্পনা উড়িয়ে দেন। বলেন, পুরো আলোচনায় জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।

উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের নিজের দেশের স্বার্থকে উপেক্ষা করার কোনো সুযোগ নেই। আমরা যা কিছু করেছি, আমরা আমাদের দেশকে অগ্রাধিকার দিয়ে করেছি—যেমন আমেরিকা তার জাতীয় নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেয়।’

তিনি আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের একটি প্রতিনিধিদল বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে। ‘তারা এমন কিছু করবে না—যা তাদের নিজেদের স্বার্থের বিরুদ্ধে যায়।’

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন

আপনি ও পছন্দ করতে পারেন