ডার্ক মোড
Friday, 30 May 2025
ePaper   
Logo
সংবিধান সংশোধনের ব্যাপারে জনগণের মতামত থাকতে হবে: আলী রীয়াজ

সংবিধান সংশোধনের ব্যাপারে জনগণের মতামত থাকতে হবে: আলী রীয়াজ

স্টাফ রিপোর্টার

সংবিধান সংশোধনের ব্যাপারে জনগণের মতামত ও আকাঙ্খার প্রতিফলন থাকতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ।

বৃহস্পতবিার ঢাকায় এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কতগুলো মৌলিক সংস্কারের ব্যাপারে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

“কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। কিছু বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আরও আলাপ-আলোচনা করতে হবে। আমরা আশা করি, জুলাইয়ের মধ্যে আমরা একটি নাগরিক সনদ প্রণয়ন করতে পারব।”

এ সনদের উদ্দেশ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, নাগরিকদের অধিকার সংরক্ষণ করা, ক্ষমতার ভারসাম্য তৈরি করা এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে কার্যকর করাই জাতীয় সনদের লক্ষ্য।

“আমরা জাতীয় সনদ প্রণয়নের মাধ্যমে নাগরিকদের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর একটি চুক্তি স্বাক্ষরের চেষ্টা করছি, যাতে নাগরিকরা রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়বদ্ধ করতে পারে।”

গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। সে লক্ষ্যে প্রথম ধাপে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন ও পুলিশ সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। সে সব কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশের বিষয়ে ঐকমত্য গঠনে রাজনেতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম দফা আলোচনা শেষ হয়েছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ও সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম আকাঙ্খা হলো সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক উত্তরণ ঘটানো। এজন্য নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ অংশীজন হিসেবে নির্বাচন কমিশন, রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের কার্যকর ও সোচ্চার ভূমিকা দরকার।

“নির্বাচন যাতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে হতে পারে সেজন্য কতগুলো মৌলিক সংস্কারের ব্যাপারে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা এবং অধ্যাদেশের মাধ্যমে কতগুলো আইন পাস হওয়া দরকার। একইসঙ্গে দরকার রাজনৈতিক দলের মধ্যে সংস্কার আনয়ন।”

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ও টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “দুর্নীতি কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সব সুপারিশ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। তবে আমরা আশাবাদী যে রাজনৈতিক দলগুলো দুদক সংস্কার কমিশনের সব সুপারিশের ব্যাপারে নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে।”

তার মতে, দুর্নীতি রোধে এবং নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে নাগরিকদের সোচ্চার থাকা দরকার।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন বলেন, “অতীতে বিভিন্ন আইনের মাধ্যমে মৌলিক অধিকারকে সীমিত করা হয়েছে। কিন্তু মৌলিক অধিকার প্রদানে রাষ্ট্রকে সচেষ্ট হওয়া দরকার।”

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার মনে করেন, সংস্কার প্রস্তাবগুলোর অর্ধেকও যদি বাস্তবায়ন করা যায়, তাহলে বাংলাদেশ বদলে যাবে।

সিরডাপ-এর এ টি এম শামছুল হক মিলনায়তনে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন এর উদ্যোগে ‘নাগরিক সনদ ও নাগরিক প্রত্যাশা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন, সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বিচারপতি এম এ মতিন।

সেখানে বক্তব্য রাখেন আলোকচিত্রী শহীদুল আলম, সুজন-এর নির্বাহী সদস্য অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের মিডিয়া ও প্রচার সমন্বয়ক সৈয়দ হাসিব উদ্দিন, ভয়েস ফর রিফর্মের উদ্যোক্তা ও সংগঠক এ কে এম ফাহিম মাশরুর, ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহরুখ মহিউদ্দিন।

বৈঠকে লিখিত প্রবন্ধ পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আসিফ মোহাম্মদ সাহান।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সুজন-এর কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার।

 

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন