মেয়ের হানিমুন নিয়ে কথা কাটাকাটি, জামাইকে অ্যাসিড নিক্ষেপ শ্বশুরের
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
বিয়ের পর প্রত্যেক নববধূ কিংবা বরের হানিমুন ঘিরে থাকে নানান স্বপ্ন। জীবনের অন্যতম এই পর্ব জন্ম দেয় বিভিন্ন ধরনের সুখস্মৃতির। কিন্তু ২৯ বছর বয়সী এক যুবকের স্বপ্নের মধুচন্দ্রিমা দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। মধুচন্দ্রিমার জন্য নববধূকে নিয়ে কোথায় যাবেন, সেটি ঠিক করা নিয়ে তর্ক-বিতর্কের জেরে অ্যাসিড হামলার শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বর। নতুন জামাইকে অ্যাসিড নিক্ষেপ করেছেন শ্বশুর; যিনি বর্তমানে পলাতক রয়েছেন।
অত্যন্ত মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটেছে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রের থানে জেলায়। বৃহস্পতিবার দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
থানে জেলার কল্যাণ এলাকার বাজারপেথ থানা পুলিশের জ্যেষ্ঠ পরিদর্শক এস আর গৌড় বলেছেন, জামাই ইবাদ আতিক ফালকে একটি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তাকে অ্যাসিড নিক্ষেপ করা তারই শ্বশুর জাকি গোলাম মুর্তজা খোতাল (৬৫) পলাতক রয়েছেন।
পুলিশের কাছে দায়ের করা এফআইআরে বলা হয়েছে, সম্প্রতি খোতালের মেয়েকে বিয়ে করেন ফালকে। মধুচন্দ্রিমার জন্য নববধূকে নিয়ে কাশ্মির যেতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার শ্বশুর কাশ্মিরের পরিবর্তে দেশের বাইরের ধর্মীয় কোনও স্থানে যেতে বলেন। এ নিয়ে উভয়ের মাঝে বাগবিতণ্ডার শুরু হয়।
পরে বুধবার রাতে ফালকে বাড়িতে ফিরে রাস্তার ধারে গাড়ি পার্ক করার সময় খোতাল তাকে লক্ষ্য করে অ্যাসিড নিক্ষেপ করেন। আগে থেকেই সেখানে অ্যাসিড নিয়ে জামাই ফালকের অপেক্ষায় ছিলেন শ্বশুর। গাড়ি পার্ক করার সময় কিছু বুঝে ওঠার আগেই জামাইকে লক্ষ্য করে অ্যাসিড ছুড়ে মারেন তিনি।
তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তারা বলেছেন, ফালকের সঙ্গে মেয়ের বিয়েতে রাজি ছিলেন না খোতাল। যে কারণে তিনি বিয়ে ভেঙে দেওয়ার উপায় খুঁজছিলেন। পুলিশের ওই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘‘খোতাল তার মেয়ের বিয়ে ভেঙে দিতে চেয়েছিলেন এবং সেজন্য এই জঘন্য কাজ করেছেন।’’
পলাতক খোতালের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে থানে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা আইনের বিভিন্ন ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে অ্যাসিড নিক্ষেপ ও অপরাধমূলক ভীতি প্রদর্শন করে গুরুতর জখমের অভিযোগও রয়েছে।
থানের কল্যাণ এলাকার এই ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই অবাক হয়েছেন। তারা প্রশ্ন করে বলেছেন, মধুচন্দ্রিমার গন্তব্যের মতো তুচ্ছ বিষয় নিয়ে মতবিরোধ কীভাবে এমন ভয়ঙ্কর সহিংসতায় পরিণত হতে পারে, সেটি অবাক করার মতো।