ভোমরা বন্দর ব্যবসায়ীর ২৩ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের প্রতিবাদে ৮টি সংগঠনের কর্মসূচির ঘোষণা
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
সাতক্ষীরার ভোমরার ব্যবসায়ীর ২৩ লাখ ৩৮ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনার প্রায় পাঁচদিন পেরিয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত ছিনতাইয়ের মাস্টারমাইন্ড স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা রফিকুজ্জামান রফিক গ্রেপ্তার ও ছিনতাইকৃত টাকা উদ্ধার হয়নি। এ ঘটনায় ভোমরার ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চরা হয়েছে। তারা এ ঘটনায় রবিবার এক যৌথসভা করে মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় ভোমরা বন্দরে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন।
ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্টস এ্যাসোশিয়েনের অর্থ সম্পাদক মো. আব্দুল গফুর সরদার জানান, গত বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকালে ভোমরার মেসার্স মা ট্রেডাসের সত্ত্বাধিকারী জিএম আমির হামজার ব্যবসার ২৩ লাখ ৩৮ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এঘটনায় স্থানীয় জনতা একজন ছিনতাইকারিকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে। ঘটনার প্রায় পাঁচ দিনে পেরিয়ে গেলেও পুলিশ এখনো পর্যন্ত ছিনতাইকৃত টাকা উদ্ধার বা বাকি ছিনতাইকারিদের কাউকে গ্রেপ্তার করেত পারেনি। এ ঘটনা ব্যবসায়ীদের মধ্যে দারুণ ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ছিনতাই হওয়া টাকা ফেরত, ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং নিরাপদে সড়কে চলাচল ব্যবস্থা নিশ্চিত ও জননিরাপত্তার দাবিতে রবিবার (২২ ডিসেম্বর) ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্টস এ্যাসোশিয়েনের উদ্যোগে এ্যাসোশিয়েনের হলরুমে এক জরুরি যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ভোমরা বন্দর ব্যবহারকারী ৮টি সংগঠনের শীর্ষ পয়র্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেন। কর্মসূচি অনুযায়ী মঙ্গলবার সকাল ১০টায় ভোমরা বন্দরে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হবে। কর্মসূচিতে বন্দর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনের কর্মচারী ও কর্মকর্তারা অংশ নেবেন।
এবিষয়ে সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ছিনতাইকৃত টাকা উদ্ধার ও আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে। আসামিরা ঘটনার পাঁচদিন আগে থেকেই পরিকল্পনা করে এই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটিয়েছে। শীঘ্রেই টাকা উদ্ধারসহ আসামিদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবে পুলিশ। এবিষয়ে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এই মুহূর্তে বেশি কিছু বলা যাবে না বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, ভোমরার মেসার্স মা ট্রেডার্স এর সত্ত্বাধিকারী মো. আমির হামজার কর্মচারী শওকত আলী ও ওবায়দুল্লাহ বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকালে সাতক্ষীরা শহরের ইসলামী ব্যাংক ও পূবালী ব্যাংক থেকে ২৩ লাখ ৩৮ হাজার ৫শ’ টাকা তুলে মোটরসাইকেলে ভোমরায় যাচ্ছিলেন। শওকত আলী মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন এবং ওবায়দুল্লাহ টাকার ব্যাগ নিয়ে তার পিছনে বসে ছিলেন।
একপর্যায় বিকাল সোয়া পাঁচটার দিকে সাতক্ষীরা-ভোমরা সড়কের আলিপুর ঢালীপাড়া এলাকায় পল্লী বিদ্যুতের সাব স্টেশনের সামনে বালির গাদার কাছে পৌছালে ছিনতাইকারীরা হাতুড়ি দিয়ে শওকাতের মাথায় আঘাত করলে তারা মোটরসাইকেল থেকে পড়ে যায়। এসময় ছিনতাইকারীরা টাকার ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় জনতা ছিনতাইকারী মেহেদী হাসান মুন্নাকে আটক করে। পরে তাকে পুলিশের সোপর্দ করা। বাকি ৪ ছিনতাইকারী টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায়র ব্যবসায়ী আমির হামজা বাদী হয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে গ্রেপ্তারকৃত আসামি মেহেদী হাসান মুন্না শুক্রবার (২০ডিসেম্বর) বিকালে সাতক্ষীরা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুজাতা আমিন এর কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন। এসময় তিনি ব্যবাসয়ীর টাকা ছিনতাইয়ের সাথে সাতক্ষীরা পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক রফিকুজ্জামান রফিকসহ পাঁচজন জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।