
বাউফলে পুত্রকে দিয়ে চালাচ্ছেন এমপিওভূক্ত মাদ্রাসা;শিক্ষক—কর্মচারীদের হেনস্থা
বাউফল (পটুয়াখালী)প্রতিনিধি
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার উত্তর দাসপাড়া দাখিল মাদ্রাসায় ভারপ্রাপ্ত সুপার মোঃ নজির উদ্দিন মৃধার বিরুদ্ধে গুরুতর অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। পুত্রকে দিয়ে মাদ্রাসার সকল শিক্ষক ও কর্মচারীকে হেনস্থা করা ও স্কুলের অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে সকল শিক্ষকের স্বাক্ষরিত অভিযোগে এসব উত্থাপন করা হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়, গত ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে সহকারী মৌলভী মোঃ নজির উদ্দিন মৃধাকে ভারপ্রাপ্ত সুপার হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। কিন্তু দায়িত্ব পালনে তিনি সম্পুর্নরুপে অযোগ্য ও
অদক্ষ বলে দাবি করেছেন শিক্ষকরা। তার পক্ষে সব কার্যক্রম পরিচালনা করছেন তার ছেলে ইমরান হোসেন,যিনি মাদ্রাসার কোনো কর্মচারী নন।
এমনকি ছুটির আবেদন, স্কেল সংশোধন, প্রত্যয়নপত্রে স্বাক্ষরসহসব কার্যক্রমে ইমরানের অনুমতি ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগকারীরা আরও বলেন, মাদ্রাসার গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র ইমরানের বাড়িতে রাখা হয়, যা নিয়মবহির্ভূত।
অফিস সহকারী বা অন্য কোনো শিক্ষক—কর্মচারীর এ বিষয়ে কোনো ধারণা নেই। বিভিন্ন পদে নিয়োগের জন্য বিপুল অর্থ গ্রহণের অভিযোগও উঠেছে। সুপার পদে ১০ লাখ, সহ—সুপার পদে ৮ লাখ এবংকর্মচারী পদে ৫ লাখ টাকা করে দাবি করা হয়েছে বলেও অভিযোগপত্রে উল্লেখ রয়েছে।
এছাড়া মাদ্রাসারএকটি ভবন ও টিনসেট ঘরের সংস্কার ও বেঞ্চ তৈরির কাজে স্বেচ্ছাচারিতা দেখিয়েছেন ইমরান হোসেন।
কাজ চলমান অবস্থায় শিক্ষক—কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনা না করে নিজেই কাজ বন্ধ করে দেন তিনি।
শিক্ষক—কর্মচারীদের দাবি, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের প্রভাবশালী পুত্রের নিয়মিত অপমানজনক আচরণ, হয়রানি এবংহুমকির কারণে শিক্ষকরা আতঙ্ক ও মানসিক চাপের মধ্যে কাজ করছেন। প্রতিবাদ করায় সহকারী শিক্ষক ওজুনিয়র মৌলভীর বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা মামলাও দায়ের করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা।
বিগত ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সুপারপুত্র ইমরান মাদ্রাসার কোনো কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হতে পারেন না, তবুও তিনি বর্তমানে সকল কাজ নিয়ন্ত্রণ করছেন। বোর্ড ও মাদরাসা অধিদপ্তরের
পাসওয়ার্ড পর্যন্ত তার কাছে সংরক্ষিত রয়েছে। মাদ্রাসায় আয় না থাকায় শিক্ষক—কর্মচারীদের চাঁদার মাধ্যমে দৈনন্দিন কার্যক্রম চললেও, অনিয়ম, দুর্ব্যবহার ও হুমকির কারণে সুষ্ঠু পাঠদানের পরিবেশ
মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে বলে জানান তারা। শিক্ষক—কর্মচারীরা এই পরিস্থিতির সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
এ বিষয়ে ওই মাদ্রাসার সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমিনুল ইসলাম জানান, শিক্ষক পুত্রের বিরুদ্ধে ও ভারপ্রাপ্ত সুপার নজির মৃধার বিরুদ্ধেও একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের বিরুদ্ধে
তদন্ত চলমান আছে।