নারায়ণগঞ্জ জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ১৬০৯ ছাড়ালো
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জ জেলায় ডেঙ্গু মশার বিস্তার বেড়েছে । এডিস মশাবাহিত ভাইরাসটির সংক্রমণও অনেকটা উর্ধ্বগতি। গত ২৪ ঘণ্টায় নারায়ণগঞ্জে নতুন করে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে ৭০ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট রোগীর সংখ্যা হলো ১৬০৯ জন।
জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে, নারায়ণগঞ্জ জেলায় এ যাবৎ কোন মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। তবে বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকায় গিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা আছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন অফিস থেকে প্রকাশিত দৈনিক প্রতিবেদন অনুযায়ি বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) সকাল পর্যন্ত এই তথ্য পাওয়া গেছে।
গত ২৪ ঘন্টায় নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল, সদর জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতাল, আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেসহ জেলায় মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি আছে ১৩৫জন। বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ পুরো জেলায় হাসপাতাল থেকে ছাড় প্রাপ্ত হয়েছে ১৪৭৪জন।
এনসিসি’র নাগরিক সেবায় ভোগান্তি কাউন্সিলরদের ‘পুনর্বহাল’ দাবি
একটা সিটি কর্পোরেশনের জন্ম-মৃত্যু সনদসহ বিভিন্ন নাগরিক সেবা মূল দায়িত্বে থাকেন ওয়ার্ড কাউন্সিলররা। বিগত সময় বিরম্বণা এড়াতে নগর ভবনের কার্যক্রম ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ে স্থানান্তর করা হয়। তবে গত ৫ আগস্ট পট পরিবর্তন হওয়ার পর থেকে আমূল পরিবর্তন দেখা দিয়েছে বিভিন্ন সেক্টরে। অবকাঠামোগত পরিবর্তনের লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের পর অপসারন করা হয় কাউন্সিলদের। এতে নগরবাসীর কাঙ্খিত সেবায় যেমন বিলম্ব হচ্ছে তেমনি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মোট ২৭টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলরসহ দায়িত্ব পালন করেন মোট ৩৬ জন। মেয়র ও কাউন্সিলদের অপসারণ করার পর প্রশাসকসহ সিটি কর্পোরেশনের ১৪ জন কর্মকর্তাদের দায়িত্ব ভাগ করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু প্রায় দেড় মাস অতিক্রম হওয়ার পর অপসারণকৃত কাউন্সিলররা অভিযোগ তুলেছে ‘নাগরিক সেবা নিতে ভোগান্তি পোহাচ্ছে নগরবাসী’। অন্যদিকে নাগরিক সেবা দিতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছেন কর্মকর্তারা এমটাই দাবি সাবেক জনপ্রতিনিধিরা।
এদিকে, সিটি কর্পোরেশনের শুধু জন্ম-মৃত্যু সনদে স্বাক্ষর নয়, ওয়ার্ডের সড়ক মেরামত ও ময়লা পরিষ্কারসহ বিভিন্ন ভোগান্তির অভিযোগ তুলেছেন তারা। তাই দল মত নির্বিশেষে জনগনের সেবায় কাজ করতে নিজেদের পদে পূর্নবহালের দাবি জানান নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক কাউন্সিলররা।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১২ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শওকত হাসেম শকু বলেন, নাগরিকরা তাদের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। একটা ওয়ার্ডে তো জন্ম মৃত্যু বা সনদের স্বাক্ষর করা পর্যন্ত কাজ থাকে না, আরও কিছু রাস্তার সংস্কার মেরামত এবং ময়লা পরিষ্কার হওয়ার বিভিন্ন কাজ থাকে। সেগুলো এখন কিন্তু হচ্ছে না। আগের গতিতে যতটা সেবা দিতে পারতাম সেই সেবাটা কর্মকর্তারা দিতে পারছে না। এখন অনেক সেবাই অনলাইনে করতে হচ্ছে। অনলাইন সেবা পেতেও একটু সময় বেশি লাগছে। দেখা যাচ্ছে ছোট একটা জিনিসের জন্য যেখানে আগে ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিসে আসলেও হতো সেটার জন্য এখন নগর ভবনে যেতে আসতে হবে। তাও একবার গেলেই যে সেই সেবা পাওয়া যাবে এমনটাও নিশ্চিত নয়।
তিনি আরও বলেন, অন্যান্য সিটি কর্পোরেশনে নির্বাচনের নারায়ণগঞ্জ নির্বাচন এক নয়। এখানে সকল কাউন্সিলররা ভোটে নির্বাচিত কাউন্সিলর। তাই দল মত নির্বিশেষে সকলের পূর্ণ বহন করা হোক তবে যারা যারা অনুপস্থিত আছেন তাদের ক্ষেত্রে সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলারা বা যে কাউন্সিলর আছেন তারা সম্মিলিতভাবে দায়িত্বটা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। কিন্তু এখন কর্মকর্তাদের কাছে দায়িত্বটা যায় তারা অনেক ক্ষেত্রেই সেবাটা দিতে পারছেন না। তাছাড়া সামনে আগামীতে জানুয়ারে ফেব্রুয়ারি দিকে স্কুলে ভর্তিসহ বিভিন্ন কাজ আসবে, তখন চাপটা বেশির বাড়ে। তখন আসলে নাগরিকের ভোগান্তিতে আরো ভয়াবহ পর্যায়ে যাবে। তাই ওয়ার্ডের নাগরিকদের সেবার স্বার্থে আমরা চাই সকল কাউন্সিলরদের পূর্ণবহাল করা হোক।
১১নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ওহিদুল ইসলাম বলেন, নাগরিক সেবা পেতে হলে কাউন্সিলরদের ছাড়া অন্য কোন বিকল্প নেই। সে ক্ষেত্রে কাউন্সিলরের পূর্ণবহন করার দাবি আমারও। তবে অনেক কাউন্সিলর এখন উপস্থিত নেই তাই যারা তারা জনসেবা দিতে ইচ্ছুক তাদেরকে সেবা দিতে দেওয়ার সুযোগ দেয়া হোক।
আমার ওয়ার্ডে আমি দায়িত্ব না থাকা সত্ত্বেও আমি এবং আমার সচিব মিলে কাজগুলো গুছিয়ে দায়িত্বগত কর্মকর্তার কাছে যাচ্ছি, সেখান থেকেই কাজগুলো করে নিতে পারছি। আমার ওয়ার্ডে কার্যক্রম সচল আছে। কিন্তু যে কাজ আমি একদিনে পারতাম সেই কাজটা করতে তিন দিন সময় লাগছে। যেভাবে আমি আমার জনগণদের দায়িত্ব না থাকার পরও সেবা দিচ্ছে, সব ওয়ার্ড এর ক্ষেত্রে চিত্রটা এরকম নয়।