দোহারে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন
দোহার (ঢাকা) প্রতিনিধি
ঢাকার দোহার উপজেলার প্রাণকেন্দ্র জয়পাড়া বেগম আয়েশা পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, দূর্নীতি, ঘুষ বাণিজ্য ও অসদাচরণের অভিযোগে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন অত্র প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এ আগেও কয়েক দফা বিক্ষোভ করেছেন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে গত অক্টোবর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত রয়েছেন প্রধান শিক্ষক কুলছুম বেগম।আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে কুলসুম বেগমের বিরুদ্ধে নিজের নিয়োগ, বিসিবি’র সাবেক সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের শ্যালিকা পরিচয়ে প্রভাব বিস্তার ও স্বেচ্ছাচারীতা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১২ জন আত্মীয় স্বজনের নিয়োগ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিষ্ঠানের নামে চাদাঁবাজি, দূর্নীতি, ঘুষ বাণিজ্য, অসদাচরণ ও বোর্ড পরীক্ষায় ফলাফল বিপর্যয়ের অভিযোগসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে স্থায়ী অপসারণের দাবীতে আবারো বৃহস্পতিবার দুপুরে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেছেন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগষ্টের পর থেকে শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষক অপসারন ও পদত্যাগ দাবীতে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন কুলসুম বেগম। তার স্থায়ী অপসারণের দাবীতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করলে ততকালীন ইউএনও মো: জাকির হোসেন, কুলছুম বেগমের অনুপস্থিতিতে তার সাথে ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করেও ব্যর্থ হলে, স্বাক্ষরিত এক পত্রে ২৫/০৮/২০২৪ তারিখে তার পরিবর্তে, সর্বজৈষ্ঠ্য সহকারি শিক্ষক নাদিরা বেগমকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ দেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতির ক্ষমতাবলে ইউএনও এই দ্বায়িত্ব অর্পণ করেন।
এই আন্দোলনের শীর্ষ পর্যায়ের অন্যতম নেতৃত্বেদানকারী উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেনির শিক্ষার্থী, সানজিদা আক্তার বলেন,আমরা চাই এমন স্কুল যেখানে থাকবে না কোনো দূর্নীতি ও অনিয়ম। আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়তে একজন দক্ষ, রুচিশীল, স্নেহপ্রবণ এবং মার্জিত প্রধান শিক্ষিকা চাই।
শিক্ষার্থী আরও অভিযোগ করে বলেন, কুলছুম বেগমের হুমকিতে, আমরা কিছু শিক্ষার্থী পরিবারসহ নিরাপত্তাহীনতায় আছি। আমরা ফ্যাসিবাদের দোসর এবং নিজে ফ্যাসিস্ট, দূর্নীতিবাজ কুলছুম বেগমের স্থায়ী অপসারন চাই। শিক্ষার্থীরা আরও বলেন,বিগত প্রায় ২ মাসের বেশী সময় ধরে কুলছুম বেগম প্রতিষ্ঠানে আসেননি। গণ অভ্যুত্থানে উৎখাত বিগত আওয়ামী সরকারের এমপি ও বিসিবি’র সাবেক সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও স্থানীয় সাবেক এমপি সালমান এফ রহমানের ঘনিষ্ট হিসাবে বিভিন্ন সময়ে প্রভাব বিস্তার ও অনিয়মতান্ত্রিক কাজ করায় এবং একাডেমিক কাজে মনোনিবেশ না করায় অপসারন দাবীতে এই আন্দোলন আরো তীব্র হয়েছে।
এছাড়াও, দোহারে ছাত্র জনতার আন্দোলনে সক্রিয় শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালীন বিভিন্ন সময়ে হুমকি ধামকি দিয়ে তিনি আন্দোলন থেকে নিবৃত্ত করতে চেষ্টা করেছেন এবং আন্দোলনকারীদের নিয়ে ক্লাসে কটুক্তির অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এই সময় আন্দোলনকারীরা স্কুলের সামনের প্রধান সড়ক কিছু সময়ের জন্য অবরোধ করে রাখেন।
এই বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে কুলছুম বেগমের ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।