ডার্ক মোড
Thursday, 19 December 2024
ePaper   
Logo
ঢাকায় ভূমি ও জলবায়ু বিষয়ক সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত

ঢাকায় ভূমি ও জলবায়ু বিষয়ক সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

৯ দফা দাবীতে ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের উদ্যোগে ভূমি ও জলবায়ু বিষয়ক সমাবেশ ও মিছিল শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি ঢাকার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি কমরেড বদরুল আলমের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক জায়েদ ইকবাল খান,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুস সাত্তার হাওলাদার, বাংলাদেশ কিষাণী সভার সভাপতি ডা: সামসুন্নাহার খান ডলি, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এএএম ফয়েজ হোসেন, সামাজিক ন্যায় বিচার আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক গাজী সোয়েব কবীর, রেডিমেট গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি লাভলী ইয়াসমিন, সম্মিলিত শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক নাহিদ হাসান নয়ন, মাদারল্যান্ড গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন, ন্যাশনাল লেবার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মরিয়ম আক্তার, বাংলাদেশ ভূমিহীন সমিতির সহ—সভাপতি ডা: সামসুল আলম, বাংলাদেশ ভাসমান নারী শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহানারা বেগম, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি শাহাবউদ্দীন মাতুব্বর,বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন,রাজশাহী জেলা শাখার আহবায়ক এম এম হাসিনুর রহমান,বাংলাদেশ ছাত্র সভার আহবায়ক লিডিয়া আহমেদ সিলভা প্রমূখ।

সমাবেশে কমরেড বদরুল আলম ভূমি ও জলবায়ু পরিবর্তনের মধ্যে সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে বাংলাদেশের ভূমি ব্যবস্থায় প্রভাব পড়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পরিবেশ— প্রতিবেশ ব্যবস্থায় পরিবর্তন ঘটেছে যা উদ্ভিদ ও প্রাণী জগতের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। দেশের দক্ষিণাঞ্চের উপকূলবর্তি এলাকায় লবণাক্ততা বৃদ্ধি ভূমির উর্বরতা শক্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ফলে ফসল উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। উপকূলের মানুষ প্রতি বছর সুপার সাইক্লোন, ভয়াবহ ঝর, বন্যা, চরমভাবাপন্ন আবহাওয়াজনিত ঘটনা মোকাবেলা করে সর্বস্বান্ত হচ্ছে। দেশের উত্তরাঞ্চলে মরুকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে অনেক আগে। অধিকন্তু আমাদের ঋতুচক্রে পরিবর্তন সৃষ্টি করেছে। স্বল্প বৃষ্টি, অতিবৃষ্টি, অসময়ে বৃষ্টি, অনিয়মিত বৃষ্টি, অতিশীত, অতিগরম, আগাম শীত, আগাম গরম এখন স্বাভাবিক ঘটনায় পরিনত হয়েছে।

কমরেড বদরুল আলম ভূমিহীনদের অধিকারের কথা উল্লেখ করে বলেন, দেশের সকল খাসজমি ভূমিহীনদের মধ্যে বন্দোবস্ত দিতে হবে। শহরের শ্রমজীবী মানুষ মূলত গ্রাম হতে নানা কারনে উচ্ছেদ হয়ে শহরে এসে কায়িক শ্রমের কাজে নিযুক্ত হচ্ছে। এ শ্রমিকরা শহরের কাজেকর্মে বেঁচে থাকার মত মজুরী পায় না। মানবেতর জীবন করছে। শহরের শ্রমিকদেরও মাথা গোঁজার ঠাঁই করতে তাদের মাঝে খাসজমি বন্দোবস্ত দিতে হবে।

কৃষিজমি রক্ষায় গুরুত্বারোপ করে বদরুল আলম খাদ্য সার্বভৌমত্ব অর্জনে সকল কৃষিজমি সংরক্ষণ করায় বিশেষ উদ্যোগ নেয়ার কথা বলেন।

কমরেড আলম আরো বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এর জন্য আমরা দায়ী নই। বিশ্বের ধনী দেশগুলো শিল্পোৎপাদন, জীবনযাপন ও ভোগবিলাসের জন্য কার্বন নির্গমন করে বিশ্বের উষ্ণতা বৃদ্ধি করে। বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে তাদের রয়েছে ঐতিহাসিক ও প্রতিবেশগত দায়। তাদেরকে দক্ষিণের ভুক্তভোগী দেশগুলোকে খেসারত দিতে হবে।

সমাবেশ হতে অন্যান্য বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে নদি ভাঙ্গন ত্বরান্বিত হচ্ছে। ভূমিহীন ও নদী ভাঙ্গা মানুষের ভুমির অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। বক্তারা আরো বলেন, নানা অজুহাতে কৃষকের জমি বেহাত করা করা হচ্ছে। এ কৃষি জমি দখল করা বন্ধের আহ্বান জানান।

সমাবেশ হতে নিম্নোক্ত দাবীসমূহ পেশ করা হয়ঃ—

১. ভূমিহীনদের মধ্যে খাস জমি বন্দোবস্ত দিতে হবে
২. খাসজমির ভুয়া বন্দোবস্ত বাতিল করতে হবে
৩. খাসজমির অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করতে হবে
৪. খাসজমি বন্দোবস্ত ও ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন ও সক্রিয় করতে হবে
৫. জলবায়ু উদ্বাস্তুদের স্বীকৃতি দিতে হবে
৬. জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে
৭. নদি ভাঙ্গন ও সিকস্তি পরিবারকে পুনর্বাসন করতে হবে
৮. শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে
৯. জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার ক্রমান্বয়ে বন্ধ করতে হবে

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন