ডার্ক মোড
Thursday, 20 February 2025
ePaper   
Logo
জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের সমর্থনে নারায়ণগঞ্জে  চলছে পথসভা, লিফলেট বিতরণ

জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের সমর্থনে নারায়ণগঞ্জে চলছে পথসভা, লিফলেট বিতরণ

নিজস্ব প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ

জুলাই বিপ্লবের ঘোষনাপত্রের সমর্থনে জেগে উঠেছে রাজনীতির সূতিকাগার খ্যাত প্রাচ্যেরডান্ডি নারায়ণগঞ্জ। জেলার নাগরিক সমাজ বিশেষ করে ছাত্র-যুবক শ্রেণীর পাশপাশি সমাজ সচেতন মানুষ জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রকে সমর্থন করে তা দ্রুত প্রকাশের দাবি জানিয়েছে। এক্ষেত্রে বিএনপি-জামায়াতসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দও সমর্থন জানিয়েছেন। এরই মধ্যে নারায়ণগঞ্জ ঘুরে গেলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।

জুলাই বিপ্লবের ঘোষনাপত্র সম্পর্কে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি’র আহবায়ক সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, বৈষম্য বিরোধী গণআন্দোলন বাংলাদেশের আম-জনতার আন্দোলন। ১৬ বছর ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের জুলুম-অত্যাচারের বিরুদ্ধে মুক্তির আন্দোলনে বিএনপিসহ অন্যান্য দল সাথে ছিল। সবাই আমরা আন্দোলন করেছি। এই আন্দোলন কোন একক ব্যক্তি বা সংগঠনের আন্দোলন নয়। এই আন্দোলনের মাস্টার মাইন্ড ছিলেন তারেক রহমান। তাঁর নির্দেশ অনুসারে বিএনপি আন্দোলন করেছে। জুলাই বিপ্লবের ঘোষনাপত্রে কিকি উল্লেখ আছে আমরা জানিনা। যদি এই ঘোষণাপত্র কোন ব্যক্তি বিশেষ বা কোন দলের পক্ষে হয় তাহলে আমরা এ সম্পর্কে বক্তব্য দিব। যদি এই ঘোষনাপত্র দেশ জাতির মঙ্গল কামনায় করা হয় তাহলে আমরা তা সমর্থন করি।

নারায়ণগঞ্জের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি বলেন, আমি কোন দলমত বুঝিনা। শুধু এইটুকু বুঝি ছাত্র-জনতা দেশবাসীকে ফ্যাসিস্ট সরকারের অত্যাচার জুলুম থেকে বাঁচাতে এই আন্দোলন করেছে। রাজপথে বুকের তাজারক্ত ঢেলে দিয়ে পুলিশের গুলিতে প্রাণ বিলিয়ে দিয়ে দেশকে স্বৈরাচার মুক্ত করেছে। জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র হবে আমাদের বীর ছাত্র-জনতার ত্যাগ ও বীরত্বের দলিল।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারী নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পথসভায় এই হুঁশিয়ারি দেন হাসনাত আবদুল্লাহ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মানবাধিকারের জন্য লড়াই করলে সেটি হবে ফ্যাসিবাদের পৃষ্ঠপোষকতা। আর ফ্যাসিবাদের পক্ষে যেসব কলম দিয়ে লেখা হবে, সেগুলো ভেঙে দেওয়া হবে। জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের সমর্থনে এই গণসংযোগ ও পথসভার আয়োজন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখা।

এ সময় পথসভায় বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, সহমুখপাত্র আরেফিন মুহাম্মদ, যুগ্ম সদস্যসচিব আবদুল্লাহ্ আল আমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আহসান, কেন্দ্রীয় সদস্য শওকত আলী, সাবিত আল হাসান, তামিম আহমেদ প্রমুখ।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘যেসব টক শো, যেসব মিডিয়াপাড়া, যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী আওয়ামী লীগের মানবাধিকারের জন্য লড়াই করছেন; আপনারা এ ফ্যাসিবাদের তেল নুন ঘি খেয়ে এত দিন পর্যন্ত ফ্যাসিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছেন। ফ্যাসিবাদের পক্ষে যে কলমগুলো লিখবেন, সেই কলমগুলো ভেঙে দেব। ফ্যাসিবাদের পক্ষে যেসব মিডিয়া কথা বলবে, সেসব মিডিয়ার বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান অব্যাহত থাকবে। ফ্যাসিবাদের পক্ষে যেসব মগজ চিন্তার প্রসার ঘটাবে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের শক্ত অবস্থান থাকবে।’

তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষা বুঝতে ব্যর্থ হলে আওয়ামী লীগের মতো পরবর্তী সময়ে যারাই নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে আসবে, তাদেরও একই পরিণতি হবে বলে মন্তব্য করেন হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী প্রতিটি রাজনৈতিক দল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ফ্যাসিবাদবিরোধী মনস্তাত্ত্বিক চিন্তা শক্তি রয়েছে, সব কটির সংমিশ্রণে পরবর্তী বাংলাদেশের বিনির্মাণ করতে হবে এবং প্রতিটি জিনিসের দালিলিক স্বীকৃতি দিতে হবে। অবিলম্বে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণা দিতে হবে।

আওয়ামী লীগের প্রত্যেক নেতা-কর্মীকে বিচারের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করার দাবি করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা হাসনাত। তিনি বলেন, ‘তাঁদের বিচার নিশ্চিত না হওয়ার জন্য যারা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের কথা বলবে, যারা বলবে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না, আমরা ধরে নেব আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাদের ইন্ধন ছিল।’

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ১৫ জানুয়ারি জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের আলটিমেটাম ছিল। বর্তমান সরকার রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে ঘোষণাপত্র দেবে বলে কথা দিলেও এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতিনিধি হয়ে যাদের উপদেষ্টা করেছি, আপনারা যদি মনে করেন, কোনো কারণে ঘোষণা দিতে এবং জন–আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে রাষ্ট্রীয় কোনো বাধা আছে, সেটি আপনারা জনসমক্ষে প্রকাশ করুন। যদি আপনারা সেটি করতে ব্যর্থ হন, তাহলে উপদেষ্টার কাতার থেকে জনগণের কাতারে নেমে আসুন। আমরা যেভাবে আগস্টে রাস্তায় নেমে হাসিনার পতন ঘটিয়েছি, ঠিক একইভাবে রাস্তায় নেমে দাবি আদায় করে নেব।’

জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বলেন, ‘মুজিববাদ দিয়ে বাংলাদেশের তরুণদের কনফিউজড করা হয়েছে। চব্বিশের তরুণেরা দেখিয়ে দিয়েছে, বাংলাদেশ কী করতে পারে। শামীম ওসমান এই নারায়ণগঞ্জে জুলুম-অত্যাচার করেছে। শামীম ওসমান ও তাদের সুবিধাভোগীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।’

নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি ফারহানা মানিক মুনা বলেন, ‘গণপরিষদ নির্বাচন ছাড়া কোনো যৌক্তিক নির্বাচন এই মুহূর্তে বাংলাদেশে নেই। আমাদের ঘোষণাপত্রে এসব কিছুর ঘোষণা থাকতে হবে। এই ঘোষণাপত্র বাংলাদেশের তরুণদের ম্যান্ডেট হিসেবে কাজ করবে। গত চার মাসে রাজনৈতিক দলগুলো ঘোষণাপত্রের উদ্যোগ নেয়নি। তারা তরুণ প্রজন্মের পালস বুঝতে পারেনি। লড়াই শেষ হয়নি, বাংলাদেশ পুনর্গঠনের আগপর্যন্ত বাংলাদেশের তরুণদের পার্লামেন্টে

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন