
আশাশুনিতে ইরি ধানের সম্ভাব্য বাম্পার ফলন: ঝড়-বৃষ্টির শঙ্কায় উদ্বিগ্ন কৃষকরা
আশাশুনি (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরার আশাশুনিতে চলতি মৌসুমে ইরি ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনায় কৃষকদের মধ্যে যেমন আশার আলো দেখা দিয়েছে, তেমনি অনিশ্চিত আবহাওয়ার কারণে দেখা দিয়েছে উদ্বেগও। উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন থোড় গজানো সবুজ ধানের সমারোহ। অনেক জমিতে ধান পাকতে শুরু করেছে, কোথাও কোথাও ধান কর্তনেরও খবর পাওয়া গেছে।
তবে একটানা মেঘলা আকাশ, দমকা হাওয়া ও সম্ভাব্য ঝড়-বৃষ্টির কারণে কৃষকরা চরম উৎকণ্ঠায় রয়েছেন। পরিপক্ব ধান মাঠে থাকায় শিলাবৃষ্টি কিংবা আকস্মিক দুর্যোগে ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় দিন কাটছে দুশ্চিন্তায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর আশাশুনিতে বহু পতিত জমিও আবাদে এসেছে। উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের উদ্যোগে প্রান্তিক ও বর্গাচাষিদের মাঝে বিনামূল্যে সার, বীজ ও কৃষি উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে। এতে কৃষকদের মধ্যে আগ্রহ বেড়ে যায় এবং আবাদি জমির পরিমাণও বৃদ্ধি পায়।
উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাঠ দিবসসহ বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মসূচির মাধ্যমে কৃষকদের আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদে উদ্বুদ্ধ করা হয়। ধান পাকার আগমুহূর্তে রোগবালাই ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষায় থোড় অবস্থার ধানের সঠিক যত্ন নেওয়ার জন্য কৃষি বিভাগ থেকে নানা নির্দেশনাও দেওয়া হচ্ছে।
উপজেলার শ্রীউলা, খাজরা, কুল্যা, বড়দলসহ বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের মধ্যে অনেকে জানান, “জমিতে ধান ভালো হয়েছে। থোড় ধান বাতাসে দুলছে দেখে মন ভরে যায়। আর কয়েক সপ্তাহ পরেই কর্তন শুরু হবে—এই আশায় আছি। তবে প্রতিদিনের মতো আজও আকাশ মেঘলা, কখন যে ঝড় আসে, সেই ভয়ে বুক দুলছে। ফসল ভালো হলেও প্রকৃতি বিরূপ হলে সব শেষ হয়ে যাবে।”
আশাশুনি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, “আমরা ধান রোপণের শুরু থেকে কৃষকদের পাশে ছিলাম, এখনও আছি। পর্যাপ্ত পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। এবার আশাশুনিতে ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে কর্তনের আগমুহূর্ত পর্যন্ত প্রাকৃতিক দুর্যোগের শঙ্কা থেকেই যায়।”
স্থানীয় সচেতন মহলের মতে, যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে, তবে আশাশুনির কৃষকদের গোলা এবার পরিপূর্ণ ধানে ভরে উঠবে।