
স্বাস্থ্য খাতের মাফিয়া জাহের উদ্দিন সরকারের প্রতারণায় নিঃস্ব নোয়াখালীর খালেদুজ্জামান অন্তর
নোয়াখালী প্রতিনিধি
আওয়ামীলীগ সময়কার স্বাস্থ্য খাতের কুখ্যাত জাহের উদ্দিন সরকারের বিরুদ্ধে এবার প্রতারণার অভিযোগ তুলেছেন নোয়াখালীর তরুণ ঠিকাদার ও আল খায়ের কনস্ট্রাকশন ট্রেডিংস-এর পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার খালেদুজ্জামান অন্তর। তিনি অভিযোগ করেছেন, জাহের উদ্দিন সরকার ও তার পরিবারের প্রতারণার শিকার হয়ে তিনি প্রায় নিঃস্ব হয়ে গেছেন।
কোটি টাকার প্রকল্পে কাজ করার পরেও তিনি তাঁর ন্যায্য পাওনা পাননি, বরং ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে অপহরণের নাটক সাজিয়ে মামলা করে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে খালেদুজ্জামান অন্তর বলেন, তার প্রতিষ্ঠান আল খায়ের ট্রেডিংস বেঙ্গল বিল্ডার্সের সঙ্গে যৌথভাবে ঠিকাদারি কাজ করে ১ কোটি ৫ লাখ টাকার বিল পাওনার মুখে পড়ে। এই টাকা দেয়ার কথা বলে বেঙ্গল বিল্ডার্সের তিন কর্মকর্তা তার সাথে মাইজদীর নবাব হোটেলে ডেকে নেন। তিনি অভিযোগ করেন, দুই দিন পূর্ব থেকেই ওই কর্মকর্তারা হোটেলের ৩০১ নম্বর রুম বুকিং নিয়ে সেখানে অবস্থান করছিলেন। পরে তারা তাকে ফাঁসানোর জন্য ‘অপহরণ নাটক’ সাজান। বিষয়টি স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনও জানে বলে দাবি করেন অন্তর।
তিনি আরও বলেন, বেঙ্গল বিল্ডার্স এখন কাজও দিচ্ছে না, পাওনাও দিচ্ছে না। বরং অন্য ঠিকাদার দিয়ে নিম্নমানের কাজ করিয়ে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করছে এবং নদী ভাঙন রোধ প্রকল্পে অর্থ আত্মসাৎ করছে। তিনি জানান, এতে করে স্থানীয়রা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াসহ সরকারের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এদিকে স্বাস্থ্য খাতে জাহের উদ্দিন সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিস্তৃত চিত্র উঠে এসেছে দুদকের সাম্প্রতিক মামলায়। সেখানে বলা হয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্যাকস সফটওয়্যার সরবরাহের নামে ভুয়া বিল জমা দিয়ে ৬ কোটি ৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন জাহের উদ্দিন সরকার ও তার পরিবারের সদস্যরা। মামলায় জাহেরের সঙ্গে তার বাবা, ছেলে, ভগ্নিপতিসহ পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, দুর্নীতির বিরুদ্ধের সোচ্চার সচেতন মহল বলছে, স্বাস্থ্য খাতে দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র ত্রিমুখী আঁতাতে দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছে—নেতা, আমলা ও ঠিকাদার মিলে চলছে এই লুটপাট। সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের ছেলে রাহাত মালেক শুভ্রর নেতৃত্বে এই চক্র কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় চক্রটি আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
ইঞ্জিনিয়ার খালেদুজ্জামান অন্তর আরো জানান, এভাবে প্রকল্পভিত্তিক দুর্নীতি শুধু ব্যক্তির ক্ষতিই করছে না, সরকারের অর্জন ও ভাবমূর্তি ধ্বংস করছে। তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপের পাশাপাশি জনসচেতনতার আহ্বান জানান।
মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন
আপনি ও পছন্দ করতে পারেন
সর্বশেষ
জনপ্রিয়
আর্কাইভ!
অনুগ্রহ করে একটি তারিখ নির্বাচন করুন!
দাখিল করুন