ডার্ক মোড
Monday, 14 July 2025
ePaper   
Logo
সাতক্ষীরায় প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে ক্লাস বর্জন

সাতক্ষীরায় প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে ক্লাস বর্জন


এসএম শহীদুল ইসলাম, সাতক্ষীরা
শিক্ষা সনদ ইস্যু হওয়ার ৮ মাস আগেই সেই সনদেই চাকরি শুরু। এরপর হয়েছেন প্রধান শিক্ষক তাও আবার ভুয়া সনদে। এসব অভিযোগ সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ধুলিহর—ব্রহ্মরাজপুর
সম্মিলিত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মমিনুর রহমান মুকুলের বিরুদ্ধে।
রোববার (১৩ জুলাই) সকালে স্যানিটারি ন্যাপকিন চুরি শিক্ষক শিক্ষকদের গালিগালাজ ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ক্লাস বর্জন করে মানববন্ধন করেছে
শিক্ষক অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনে শিক্ষকরা বলেন, প্রধান শিক্ষক মমিনুর রহমান ‍গালিগালাজসহ খারাপ ব্যবহার করেন। এছাড়া আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ

রয়েছে। তিনি স্কুলে থাকলে আমরা কোনো ক্লাস নিবো না।অপরদিকে, শিক্ষার্থীদের অভিযোগথ মেয়েদের সেনেটারি ন্যাপকিন চুরি, খারাপ ব্যবহার করেন প্রধান শিক্ষক। প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ না করা
পর্যন্ত আমরা ক্লাস করবো না। এসময় তারা প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগসহ বিভিন্ন সেস্নাগান দিতে থাকে। খবর পেয়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়েছে মাধ্যমিক
শিক্ষা কর্মকর্তা নারয়ান চন্দ্র মন্ডল। তাকেও বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা প্রায় তিন ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। এরপর পুলিশের একটি দল উপস্থিত হয়ে
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে।অনুসন্ধানে বিভিন্ন কাগজপত্র যাচাই করে দেখা গেছে, ধুলিহর—ব্রহ্মরাজপুর সম্মিলিত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মমিনুর
রহমান মুকুল শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেছেন ১৯৯৫ সালের পহেলা জানুয়ারি। তবে যে সনদে তিনি শিক্ষক হয়েছেন সেটি ইস্যু করা

হয়েছে একই বছরের আগস্ট মাসের ১৯ তারিখে।অর্থাৎ শিক্ষা সনদ ইস্যু করার ৮ মাস ১৮ দিন আগেই সেই সনদে চাকরি শুরু করেছেন তিনি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মমিনুর রহমান মুকুল প্রধান শিক্ষক হয়েছেন ২০০৯ সালের ৩১জানুয়ারি। প্রধান শিক্ষক হতে যে বিএড সনদ দেখিয়েছেন সেখানেও প্রতারণার আশ্রয়
নিয়েছেন তিনি। তার বি.এড সনদ দেখানো হয়েছে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ নামক একটি প্রতিষ্ঠান থেকে। তবে
প্রধান শিক্ষক হওয়ার এক বছর আগে অর্থাৎ ২০০৮ সালের মে মাসের ১৫ তারিখে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের কার্যক্রম ও
সকল সার্টফিকেট বাতিল করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।গালিগালাজের বিষয়টি অস্বীকার করে প্রধানশিক্ষক মমিনুর রহমান মুকুল বলেন, আমি কড়া
প্রধান শিক্ষক হওয়ায় শিক্ষকরা আমার বিরুদ্ধে লেগেছে। তবে স্কুলের অর্থ আত্মসাথের বিষয়ে

তিনি বলেন আওয়ামীলীগের সময়ে ভবন বরাদ্দের জন্য সাতক্ষীরা সদর—২ আসনের এমপি রবিসহ বিভিন্ন দপ্তরে ঘুষ দেওয়া লেগেছে। যে কারণে
স্কুল ফান্ডের টাকা নিয়ে ঘুষ দিয়েছি। তিনি আরও বলেন, কেউ না চাইলে আমি স্কুলে থাকবো না। এছাড়া জাল সনদে চাকরির বিষয়টা তিনি অস্বীকার করেন।
সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নারায়ন চন্দ্র মন্ডল বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমাদের কাছে
রয়েছে। তিনি আরও জানান, জাল সনদে চাকরি, টিউশন ফি’র টাকা আত্মসাত, বিদ্যালয়েন উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা তুলে আত্মসাত, স্কুলের
শিক্ষার্থীদের আদায়কৃত অর্থ আত্মসাত, শিক্ষক—কর্মচারী নিয়োগ বাণিজ্যের টাকা আত্মসাতসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, বিগত দশ বছরে
প্রধান শিক্ষক মমিনুর রহমান মুকুল প্রায় এক কোটি ৮১ লক্ষ টাকা আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগে বলা হয়েছে। তিনি স্কুলের ব্যাংক

একাউন্টে কোন টাকা জমা না রেখে নিজের ব্যক্তিগত একাউন্টে জমা রেখে তা উত্তোলন করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি দ্রুত তদন্ত করে
ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন