
শ্রীপুরে পৌর কর বৃদ্ধির বিরুদ্ধে রাস্তায় নামলেন শিক্ষক-সাংবাদিক-সাহিত্যিকরা
এস এম জহিরুল ইসলাম, শ্রীপুর (গাজীপুর)
গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভায় বাড়িঘরের উপর অস্বাভাবিক হারে হোল্ডিং কর বৃদ্ধি ও নতুন কর আরোপের প্রতিবাদে স্মারকলিপি প্রদান ও মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় সচেতন নাগরিক সমাজ। মঙ্গলবার (২২ জুলাই ২০২৫) শ্রীপুর পৌরসভার সম্মুখে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন—কর বৃদ্ধি নয়, বরং নাগরিক সেবা উন্নয়নই হওয়া উচিত পৌর প্রশাসনের প্রধান লক্ষ্য।
এর আগে ‘শ্রীপুর পৌর সচেতন নাগরিক ফোরাম’-এর ব্যানারে পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর একটি লিখিত স্মারকলিপি প্রদান করা হয়, যেখানে কর বৃদ্ধি সংক্রান্ত সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তকে অমানবিক ও অযৌক্তিক উল্লেখ করে তা অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানানো হয়।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, চলতি অর্থবছরের বাজেট ঘোষণায় পৌর প্রশাসক জনসমক্ষে আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, নতুন করে কর আরোপ কিংবা পূর্ববর্তী করের পরিমাণ বৃদ্ধি করা হবে না। কিন্তু কিছুদিন পরেই পৌরসভার এসেসমেন্ট কমিটির পক্ষ থেকে যেভাবে হোল্ডিং কর বহুগুণে বাড়িয়ে নোটিশ প্রদান করা হয়েছে, তা পৌরবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষের জন্ম দিয়েছে।
স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়, শ্রীপুর পৌরসভা এখনো অনেক দিক থেকে অবহেলিত। অনেক ওয়ার্ডে এখনো নাগরিক সুবিধার ঘাটতি রয়েছে—পাকা সড়ক, সড়কবাতি, ড্রেনেজ, নিয়মিত আবর্জনা অপসারণের মতো মৌলিক সেবাও অনিয়মিত বা অনুপস্থিত। এই পরিস্থিতিতে বাড়িভিত্তিক ৩৭ টাকা করে আবর্জনা কর এবং ২৭ টাকা করে সড়ক বাতি করসহ অন্যান্য কর আরোপ করেরোপকে ‘অযৌক্তিক ও জনস্বার্থবিরোধী’ বলেই আখ্যায়িত করেছেন তারা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, কর নির্ধারণে স্বচ্ছতা ও যুক্তি থাকা জরুরি। পূর্বে নির্ধারিত করের তুলনায় হঠাৎ কয়েকগুণ কর বৃদ্ধি করা হলে তা সাধারণ মানুষের পক্ষে বহন করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। এমন সিদ্ধান্ত দুর্নীতিবাজ একটি চক্রের প্রত্যক্ষ ইন্ধনে বাস্তবায়িত হয়েছে বলেও দাবি তাদের।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, পৌর সচেতন নাগরিক ফোরামের উপদেষ্টা প্রফেসর মো. সেলিম মোল্লা, পৌর সচেতন নাগরিক ফোরামের সভাপতি রওশন হাসান, সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম, শ্রীপুর সাহিত্য পরিষদের সভাপতি রানা মাসুদ, শ্রীপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এম এম ফারুক, সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম রানা, মুক্তিযোদ্ধা কলেজের সহকারী অধ্যাপক এমদাদুল হক, শ্রীপুর সাহিত্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মিসকাত রাসেল এবং সংগঠক ও সমাজকর্মী রাহাত জুয়েল।
বক্তারা অভিযোগ করেন, এসেসমেন্ট কমিটির সভাপতি একজন বিতর্কিত ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা, যিনি অতীতে রাজনৈতিক সুবিধাভোগী চক্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তার নেতৃত্বেই শ্রীপুর পৌরসভার কর নির্ধারণে স্বেচ্ছাচারিতা চলছে বলে দাবি তাদের। তারা আশঙ্কা করেন, এর মাধ্যমে বর্তমান দায়িত্বশীল প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপপ্রয়াসও হতে পারে।
বক্তারা বলেন, কর আরোপের পূর্বে নাগরিকদের সঙ্গে মতবিনিময় ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত না করে একতরফাভাবে গৃহীত যে কোনো সিদ্ধান্ত জনগণ কখনোই মেনে নেবে না। তারা ঘোষণা দেন, স্মারকলিপি ও মানববন্ধনের মাধ্যমে দাবি বাস্তবায়ন না হলে পরবর্তী ধাপে পৌরসভা ঘেরাও কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন
আপনি ও পছন্দ করতে পারেন
সর্বশেষ
জনপ্রিয়
আর্কাইভ!
অনুগ্রহ করে একটি তারিখ নির্বাচন করুন!
দাখিল করুন