ডার্ক মোড
Monday, 25 August 2025
ePaper   
Logo
কোল থেকে পানিতে পড়া শিশুর বাবা মায়ের ক্ষোভ বাঁধটি সংস্কার করা হলে আদরের মণিকে হারাতে হতোনা

কোল থেকে পানিতে পড়া শিশুর বাবা মায়ের ক্ষোভ বাঁধটি সংস্কার করা হলে আদরের মণিকে হারাতে হতোনা

বেতাগী (বরগুনা) প্রতিনিধি

বরগুনার বেতাগীতে আদরেরর সন্তান শিশু ইমামুলকে হারিয়ে মা পারভীন বেগম পাগল প্রায়।বাবা স্বপন মিযা কিং কর্তব্য বিমূঢ়। সুপার সাইক্লোন ইয়াসের প্রভাবে বিষখালী নদীর রক্ষা বাঁধটি ঘূর্ণিঝড় ভেঙে যাওয়ায় গত বুধবার বেলা এগারিটার দিকে উপজেলার সড়িষামুড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ কালিকাবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা এই দম্পতি তাদের ৩ বছর বয়েসী শিশু ইমামুল হোসেন কে নিয়ে দক্ষিন কালিকাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। পানি মাড়িয়ে যাওয়ার পথে হঠাৎ শিশুটি মায়ের কোল থেকে পরে যায়। জোয়ারের পানির প্রবল স্রোত শিশুটিকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা অনেক খোঁজাখুঁজি করে শিশুটিকে মৃত অবস্থায় পানি থেকে উদ্ধার করেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মৃত্যু‘র চার দিন পড়েও মা পারভীন বেগম এখানো বার বার বিলাপ করছেন, কিছুতেই যেন কোলের শিশুকে ভুলতে পারছেন না।কেউ গেলে তাকে দেখে বলছেন ‘ আমার সোনা মণিকে ফিরিয়ে দিন। যদি প্রতি রক্ষা বাঁধটি সংস্কার করা থাকতো এমন দূর্ঘটনায় আমাকে পড়তে হতো না’।’ মর্মান্তিক এই মৃত্যু‘তে পাড়া প্রতিবেশিরাও শোকে বিহবল। তাদেরই কয়েকজন বলেন, ‘এই মৃত্যু‘ কোন স্বাভাবিক মৃত্যু‘ নয়, মানুষের অবহেলায় মৃত্যু‘ তাই কিছুতেই মানা যায়না।’

শিশু ইমামুল বাবা স্বপন মিযা অশ্রুভেজা চোখে অন্য রকম প্রতিবাদ স্বরুপ ক্ষোভের সাথে বলেন, ‘বাঁধটি ভেঙে যাওয়ার ফলে আমার সন্তানকে আজ হারাতে হলো। এর ক্ষতি কি কেউ পুষিয়ে দিতে পারবে। এখনো কবে বাঁধটি সংস্কার করা হবে জানিনা। তবে আগামীতে আর কোন দূর্যোগে এ ভাবে যেন কারো বাবা- মায়ের কোল খালি না হয় সে জন্য সজাগ থাকতে হবে। বন্যার আগে-ভাগেই বাঁধ সংস্কারে এগিয়ে আসতে হবে।’

স্থানীয়রা জানায়, ঘূর্ণিঝড় সিডর ও আম্পানে বাধঁটি নড়বড়ে হয়ে পড়ে। বিভিন্ন সময় দাবির প্রেক্ষিতে সংস্কারের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডর পক্ষ থেকে বরাদ্দও দেওয়া হযেছিল। কিন্ত সময়ের অপেক্ষা এরই মধ্যে সুপার সাইক্লোন ইয়াস আঘাত হানে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: সুহৃদ সালেহীন বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার জোয়ারের চাপে বিষখালী নদী-সংলগ্ন বেতাগী উপজেলার দক্ষিণ কালিকাবাড়ী এলাকার বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে। বাঁধটি সংস্কারে আমাদের হাতে কোন বরাদ্দ নেই।তবে যথাশীঘ্র যাতে বাধঁটি সংস্কার করা হয় সে বিষয় বরগুনা জেলা প্রশাসকসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে।

পানির কারণে শিশুর মৃত্যু একটি দু:খ জনক ঘটনা। তার পরেও প্রকৃতির উপড় আমাদের কারও হাত নেই। ইমামুলের পরিবারকে খুব দ্রূতই সরকারি ভাবে সহায়তা দেওয়া হবে।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন