ডার্ক মোড
Monday, 12 May 2025
ePaper   
Logo
সাতক্ষীরায় পাকা ধানে কারেন্ট পোকার আক্রমনে কৃষকরা দিশেহারা

সাতক্ষীরায় পাকা ধানে কারেন্ট পোকার আক্রমনে কৃষকরা দিশেহারা

কে এম আনিছুর রহমান, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরায় রোপা আমন ধান পাকতে শুরু করেছে। কিছু কিছু কৃষক ধান কাটতে শুরু করেছেন। তবে শেষ সময়ে জেলার বিভিন্ন এলাকায় ধানখেতে কারেন্ট পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। এতে ধান চিটা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা কৃষকদের। কীটনাশক ব্যবহার করেও তেমন প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। পাকা ধানে কারেন্ট পোকা আগে কখনো দেখা যায়নি বলে জানান ভুক্তভোগী কৃষকেরা। তবে পোকা দমনে কৃষি অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে আমনচাষীদের বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

সাতক্ষীরা জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি মৌসুমে জেলার সাতটি উপজেলায় ২ লাখ ৫২ হাজার ৫৯০ টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে ৮৮ হাজার ৭৬৮ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষ করা হয়েছে, যা গত মৌসুমের তুলনায় ২৪৩ হেক্টর বেশি। গত মৌসুমে জেলায় রোপা আমনের আবাদ হয়েছিল ৮৮ হাজার ৫২৫ হেক্টর জমিতে, যা থেকে ২ লাখ ৪৯ হাজার ২৫৭ টন ধান উৎপাদন হয়।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাধনডাঙ্গা গ্রামের আমনচাষী আজহারুল ইসলাম জানান, চলতি মৌসুমে ১৫ বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। ধানও পাকতে শুরু করেছে। তবে কারেন্ট পোকার আক্রমণে অধিকাংশ ধান নষ্ট হয়ে গেছে। গত দুদিনে প্রায় ২০ শতাংশ জমির ধান কেটেছেন তিনি। কারেন্ট পোকার কারণে ৫০-৫৫ শতাংশ ধান চিটা হয়ে গেছে।

তিনি আরো জানান, গত মৌসুমে একই পরিমাণ জমিতে রোপা আমন চাষ করে ২০০ মণ ধান উৎপাদন করেছিলেন। কিন্তু চলতি মৌসুমে ১০০ মণ ধান পাবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। জমি চাষ, বীজতলা, চারা রোপণ, সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের মজুরি দিয়ে প্রতি বিঘায় ৮ থেকে সাড়ে ৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। সে হিসাব অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে ১৫ বিঘায় ১ লাখ ২০ থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ধানের যে অবস্থা তাতে উৎপাদন খরচ হয়তো কোনো রকম উঠে আসবে।

একই অবস্থা বাধনডাঙ্গা গ্রামের প্রান্তিক কৃষক আব্দুল হাকিম, আব্দুল খালেক, এনামুল হক, আনারুল ইসলাম ও নাসির উদ্দিনের। তারা কম-বেশি জমিতে রোপা আমন চাষ করেছেন বলে জানান। কিন্তু হঠাৎ করে কারেন্ট পোকার আক্রমণে নষ্ট হয়ে গেছে তাদের ৪০-৪৫ শতাংশ পাকা ধান। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের মরামর্শ অনুযায়ী পোকা দমনের জন্য প্লেনাম, তড়িত ও মিমসিনসহ বিভিন্ন প্রকার কীটনাশক ব্যবহার করেও কোনো প্রতিকার পাননি তারা।

শুধু সদর উপজেলার বাধনডাঙ্গা গ্রামই নয়, জেলার সব উপজেলায়ই রোপা আমনে দেখা দিয়েছে কারেন্ট পোকা।

সাতক্ষীরা জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সাইফুল ইসলাম জানান, জেলার বেশকিছু এলাকায় আমন ধানে বিচ্ছিন্নভাবে কারেন্ট পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের পরামর্শ দেয়ার জন্য। কৃষকরা যাতে কারেন্ট পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পান, সেজন্য কীটনাশক ব্যবহারের জন্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন

আপনি ও পছন্দ করতে পারেন