শেরপুরের সীমান্তে বিদ্যুৎ ফাঁদে বন্যহাতির মৃত্যু, আটক ১
শেরপুর প্রতিনিধি
শেরপুরের পল্লীতে নালিতাবাড়ী সীমান্তে বিদ্যুৎ ফাঁদে এক বন্যহাতির মৃত্যু হয়েছে । এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে শহিদুল ইসলাম নামে কৃষককে আটক করা হয়েছে
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে পুড়াগাঁও ইউনিয়নের সীমান্তের পাহাড়ি গ্রাম বাতকুচি এলাকায় ধান খেতে বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে হাতিটির মৃত্যু হয়।
স্থানীয় কৃষক ও বন বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, শেরপুরের সীমান্তের পাহাড়ি গ্রামগুলোতে আমন ধান পেকে উঠার সাথে সাথে আবারও শুরু হয়েছে বন্যহাতির তান্ডব।
সীমান্তবর্তী নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলার প্রায় ৪০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে কৃষকদের বেঁচে থাকার স্বপ্ন আমন ফসলের খেতে হানা দিচ্ছে বন্য হাতির দল। শতশত বন্যহাতির দল উপদলে বিভক্ত হয়ে ৪০ কিলোমিটার পাহাড়ি এলাকা জুড়েই চালাচ্ছে তান্ডব।
বন্যহাতির দল দিনের বেলায় গভীর অরণ্যে আশ্রয় নিচ্ছে। আর সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে খাদ্যের সন্ধানে নেমে আসছে কৃষকদের ফসলি জমি ও লোকালয়ে। শতশত বন্যহাতি দিনে রাতে প্রতিনিয়ত তান্ডবলীলা চালিয়ে কৃষকদের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র অবলম্বন শতশত একর জমির আমন ফসল খেয়ে ও পায়ে মারিয়ে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে। কৃষকরা তাদের খেতের ফসল ও জানমাল রক্ষার্থে রাত জেগে পাহাড়া দিচ্ছে।
ঢাক ঢোল পটকা ফুটিয়ে মশাল জ্বালিয়ে হাতি তাড়ানোর চেষ্টা করছে।
কিন্তু যতই হাতির তাড়ানোর চেষ্টা চলছে ততই বন্যা হাতির দল তেড়ে আসছে লোকালয়ে। খেতের ফসলসহ বিভিন্ন ফসলাদি কলারবাগান শাকসবজি বাগানের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে চলেছে।
আবার কোন কোন স্থানে স্থানীয় কৃষকরা খেতের ফসল বাঁচাতে চারপাশে তৈরি করে রেখেছেন বৈদ্যুতিক ফাঁদ। বিদ্যুতের সংযোগ দিয়ে বৈদ্যুতিক আলো জ্বালিয়ে রাখা হয়েছে।
এতে কৃষকদের হাতি তাড়ানো সহজ হয়। আর কৃষকদের পেতে রাখা এ বৈদ্যুতিক ফাঁদে মাঝেমধ্যেই বন্য হাতির মৃত্যু হচ্ছে। হাতি তাড়াতে গিয়ে মৃত্যু হচ্ছে কৃষকদের ও।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে প্রায় অর্ধশত বন্যহাতির একটি দল নালিতাবাড়ি উপজেলার পুড়াগাঁও ইউনিয়নের বাতকুচি এলাকায় কৃষকদের আমন ধানের খেতে হানা দেয়।
ধান খেতে তান্ডবের একপর্যায়ে কৃষকদের পেতে রাখা বৈদ্যুতিক ফাঁদে হাতিটির মৃত্যু ঘটে। এসময় হাতির দল আরও ক্ষিপ্ত হয়ে সেখানে তান্ডবলীলা চালায় ও মৃত হাতিটিকে ঘিরে রাখে। ভোর হয়ে এলে হাতির দল গভীর অরণ্যে চলে যায়। বৈদ্যুতিক ফাঁদে হাতির মৃত্যুর ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ওই গ্রামের শহিদুল ইসলাম নামে এক কৃষককে আটক করেছে বনবিভাগ।
শুক্রবার শেরপুরের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) সাদিকুল ইসলাম খানসহ অন্যান্য বন কর্মকর্তাও থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
হাতির মৃত্যুর কারন জানতে আলামত সংগ্রহ করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মধুটিলা রেঞ্জ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন ময়না তদন্তের জন্য মৃত হাতির আলামত সংগ্রহের পর হাতির মৃতদেহটি মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এ বিষয়ে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে