মুক্তিপণের আশায় উচ্চবিত্ত পরিবারের ছেলে-মেয়েদের টার্গেট করে অপহরণ করতেন
দোহার (ঢাকা) প্রতিনিধি
ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার বান্দুরা হলিক্রস স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্র প্রতিক সরকার(১৩)কে বিদ্যালয় সংলগ্ন সড়ক থেকে মাইক্রোবাসে তুলে অপহরন করেন দুস্কৃতকারী।এ ঘটনায় ৫ অপহরণকারীকে ১টি মাইক্রোবাসসহ আটক করেছে দোহার থানা পুলিশ।
আটককৃতরা হলেন,শরীয়তপুর নড়িয়া থানার বাসিন্দা পারভেজ আহমেদ(৪০), যাত্রাবাড়ি এলাকার মোক্তার হোসেন আকাশ (৩৯), মুন্সিগঞ্জের লৌহজং এলাকার আতিক হাওলাদার আরিফ (৪৪) , ঢাকার জুরাইন এলাকার জুম্মন খান (৪১) ও গাড়ি চালক চাঁদপুরের বরইনাও গ্রামের মিজান (৫৩)।
বুধবার সকালে নবাবগঞ্জ উপজেলার বান্দুরা হলিক্রস স্কুল এন্ড কলেজের সামনে এ ঘটনা ঘটে। অপহৃত প্রতিক সরকার নবাবগঞ্জ উপজেলার বান্দুরা হলিক্রস স্কুল এন্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। সে উপজেলার বান্দুরা এলাকার সঞ্জয় কুমার সরকারের ছেলে।
সাইনপুকুর তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক মো.শফিকুল ইসলাম সুমন বলেন, সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ওয়ারলেস ম্যাসেজে জানতে পারেন নবাবগঞ্জ উপজেলার বান্দুরা হলিক্রস স্কুল এন্ড কলেজের এক ছাত্র প্রতিক সরকার নামে বিদ্যালয় এলাকা থেকে মাইক্রোবাসে তুলে অপহরন করেন দুস্কৃতকারী।বার্তা পেয়ে অপহরনকারীদের আটক করতে দোহার-নবাবগঞ্জ থানা পুলিশ বাহিনীর যৌথ টহলে দোহার উপজেলার সাইনপুকুর সড়ক দিয়ে পলায়নকালে সাইনপুকুর পুলিশ ফাড়ি ফোর্স সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে তল্লাশি করছিলো।
এ সময়ে সিলভার কালার একটি মাইক্রোবাস পদ্মা কলেজের সামনে এসে পৌছেলে তার গতিবিধি ও আচরন দেখে আমার সন্দেহ হয়। এর পরেই গাড়িটি থামতে বললে তারা গতিপথ পরিবর্তনের চেষ্ঠা করে।এ সময়ে সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স নিয়ে গাড়িটি আটক করতে সক্ষম হই। এ সময়ে অপহৃত বালকটি চিৎকার দিলে আমরা পাঁচ অপহরণকারীসহ মাইক্রোবাসটি আটক করি।
দোহার সার্কেলের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার মো.আশরাফুল আলম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অপহরণকারীরা স্বীকার করেছেন ঢাকা জেলার দোহার,নবাবগঞ্জ,কেরানীগঞ্জ এলাকায় তারা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাইরে তারা ফেরি করে থাকেন। উচ্চবিত্ত পরিবারের ছেলে-মেয়ের সন্ধান পাইলে তাকে আমরা অপহরন করে থাকি। পরে সুযোগ বুঝে তার পরিবারের কাছে মুক্তিপন চেয়ে পরিবারের কাছে টাকা দাবি করি।
উদ্ধার হওয়া শিক্ষার্থী প্রতিকের পিতা সঞ্চয় সরকার জানান,নবাবগঞ্জ উপজেলার ঘোষপাড়া,বাংলাবাজার এলাকার বাড়ি থেকে বান্দুরা হলিক্রস স্কুলে যাওয়ার পথে অপহরনকারীর হোতা পারভেজ আহম্মেদ আমার ছেলের নাম ধরে ডাক দেয়।এ সময়ে আমার ছেলে ঘুরে দাড়ালে পারভেজ আবারও আমার অবস্থান জানতে চায়।
এ সময়ে উত্তরে আমার ছেলে বলেন বাবা বাসায় আছে।বাড়ি চিনি না বলে সুকৌশলে আমার ছেলেকে বাড়ি দেখাতে বলে গাড়িতে তুলতে চাইলে প্রতিক রাজি না হলে জোর করে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে হা-পা বেধেঁ ফেলে রাখে। সাইনপুকুর তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ বাহিনীর প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। তারা আমার ছেলেকে উদ্ধার না করলে আমি হয়তো আর ফিরৎ পেতাম না।আমি এই অপহরনকারীদেও বিচার চাই।
দোহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল করিম জানান,আটককৃতরা পেশাদার অপরাধী এবং ঢাকা জেলায় তারা এই অপহরন অবৈধ বানিজ্য করে বেড়ায়। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বৃহস্পতিবার আদালতে রিমান্ড চেয়ে পাঠানো হবে।