
মাচাদো ফোন দিয়েছিলেন, বলিনি পুরস্কারটা আমাকে দাও: ট্রাম্প
চলতি বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কার না পাওয়ার পর প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ভেনেজুয়েলার যে বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া কোরিনা মাচাদো পুরস্কারটি জিতেছেন, তাকে তিনি একাধিকভাবে সহায়তা করেছিলেন।
শুক্রবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, পুরস্কারজয়ী মাচাদো ফোন করে জানিয়েছেন, তিনি এই পুরস্কারটি ‘ট্রাম্পের সম্মানেই গ্রহণ করেছেন’।
“যিনি নোবেল পেয়েছেন, তিনি আজ আমাকে ফোন করেছেন। বলেছেন, ‘আমি আপনার সম্মানে এটি গ্রহণ করছি কারণ পুরস্কারটি সত্যিই আপনার প্রাপ্য ছিল’। আমি কিন্তু বলিনি, এটা আমাকে দিয়ে দিন। যদিও মনে হয় তিনি হয়তো দিয়েই দিতেন।
“আমি তাকে পদে পদে সাহায্য করেছি। ভেনেজুয়েলায় দুর্যোগের সময় ওদের অনেক সাহায্যের প্রয়োজন ছিল। আমি খুশি, কারণ আমি লাখ লাখ মানুষের জীবন বাঁচাতে পেরেছি,” ট্রাম্প এসব বলেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএনআই।
ভেনেজুয়েলার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় নিরলস সংগ্রাম করে যাওয়ার স্বীকৃতিস্বরূপ চলতি বছর নোবেল কমিটি শান্তিতে পুরস্কারজয়ী হিসেবে মাচাদোকে বেছে নিয়েছেন।
‘সাতটি যুদ্ধ বন্ধ করার’ জন্য নোবেল জয়ের প্রত্যাশায় থাকা ট্রাম্প ইউক্রেইনের যুদ্ধও পুরস্কারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বলে ইঙ্গিত দেন।
“আমি বলেছিলাম, তাহলে বাকি সাতটা যুদ্ধের কী হবে? প্রতিটা যুদ্ধ থামানোর জন্য আমার একটা করে নোবেল পাওয়া উচিত। তখন তারা বলে, ‘আপনি যদি রাশিয়া-ইউক্রেইনের যুদ্ধ থামান, তাহলে নিশ্চয়ই নোবেল পাবেন।’ আমি বললাম, আমি সাতটা যুদ্ধ থামিয়েছি। এটা একটা যুদ্ধ, আর সেটাই বড় ব্যাপার,” বলেন ট্রাম্প।
তার দাবি, তার নেতৃত্বেই ভারত-পাকিস্তান, আর্মেনিয়া-আজারবাইজান, কসোভো-সার্বিয়া, ইসরাইল-ইরান, মিশর-ইথিওপিয়া, রুয়ান্ডা-কঙ্গো এই সংঘাতগুলোর অবসান ঘটেছে।
শুক্রবার পুরস্কার ঘোষণার আগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুও বৃহস্পতিবার এক্সে পোস্ট করে ট্রাম্পকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেয়ার আহ্বান জানান। বলেন, “তিনি এর যোগ্য।”
এদিকে নরওয়ের নোবেল কমিটি মারিয়া কোরিনা মাচাদোকে ‘সাহসী ও নিবেদিতপ্রাণ শান্তির অগ্রদূত’ আখ্যা দিয়েছে।
“তিনি এমন এক নারী, যিনি অন্ধকারের মাঝেও গণতন্ত্রের আলো জ্বালিয়ে রেখেছেন,” বলেছে তারা।
কমিটি বলেছে, “দীর্ঘস্থায়ী শান্তির জন্য গণতন্ত্র অপরিহার্য। অথচ আজ বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্র পিছিয়ে যাচ্ছে, একের পর এক কর্তৃত্ববাদী শাসন গণতান্ত্রিক রীতিনীতিকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে আর সহিংসতায় জড়াচ্ছে। মাচাদো বহু বছর ধরে ভেনেজুয়েলার জনগণের মুক্তির জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।”
আলফ্রেড নোবেলের উইলে বর্ণিত শান্তি পুরস্কারের তিনটি মানদণ্ডেই মাচাদো উপযুক্ত বলে বিবেচিত হয়েছেন, বলেছে তারা।