ভোলা মাছের পটকার দাম কেন কোটি টাকা
অনলাইন ডেস্ক
বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলে প্রায়ই কয়েক কেজি ওজনের একটি মাছ কয়েক লাখ টাকায় বিক্রির খবর পাওয়া যায়। স্থানীয়রা এটিকে বলেন, ‘ভোলা মাছ’। কথিত আছে, এই মাছের বায়ুথলি বা পটকা চীনে রপ্তানি হয়। সর্বশেষ পাকিস্তানের এক জেলে একটি ভোলা মাছ আজ শুক্রবার নিলামে ৭ কোটি পাকিস্তানি রুপিতে বিক্রি করেছেন বলে গণমাধ্যমে এসেছে।
বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলে প্রায়ই কয়েক কেজি ওজনের একটি মাছ কয়েক লাখ টাকায় বিক্রির খবর পাওয়া যায়। স্থানীয়রা এটিকে বলেন, ‘ভোলা মাছ’। কথিত আছে, এই মাছের বায়ুথলি বা পটকা চীনে রপ্তানি হয়। সর্বশেষ পাকিস্তানের এক জেলে একটি ভোলা মাছ আজ শুক্রবার নিলামে ৭ কোটি পাকিস্তানি রুপিতে বিক্রি করেছেন বলে গণমাধ্যমে এসেছে।
মাছটি কেন এত মূল্যবান— এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম বিজনেস ইনসাইডার।
বাংলাদেশে ভোলা মাছ নামে পরিচিত মৎস্য প্রজাতিটি একেক দেশে একেক নামে পরিচিত। এটি মূলত পার্চ জাতের মাছ।
বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল শুকনো সামুদ্রিক খাবারগুলোর মধ্যে এই মাছের পটকা বা বায়ুথলি একটি। এটি মূলত চীনা খাবার। প্রতি কেজির দাম ৪৫০ থেকে ১০০০ ডলার পর্যন্ত হতে পারে অর্থাৎ বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা! তবে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ খুব কম হওয়ায় এটির দাম দিন দিন বাড়ছেই। সেই সঙ্গে রয়েছে কালোবাজারে বেচাকেনা। তখন এটির দাম আরও বাড়ে।
চীনে এই মাছের পটকাকে সাধারণত সম্পদ ও সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে দেখা হয়। বিশেষ কোনো আচার অনুষ্ঠানে সাধারণত উপহার হিসেবে এটি দেওয়া হয়ে থাকে, বিশেষ করে বিয়ের অনুষ্ঠানে। আবার অনেকে বিনিয়োগ হিসেবে মাছের পটকার শুঁটকি মজুত করে থাকেন।
ক্যান্টোনিজ খাবারের চার বিশেষ পদের মধ্যে ভোলা মাছের পটকা একটি। বাকিগুলো হলো—ঝিনুক, সি কিউকাম্বার (সমুদ্র শসা) ও হাঙরের পাখনা। ক্যান্টোনিজ খাবার হলো দক্ষিণ–পূর্ব চীনের আঞ্চলিক রান্নার একটি পদ। মাছের পটকার স্যুপ ও স্ট্যু ক্যান্টোনিজদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়।
তবে ভোলা মাছের পটকার চাহিদা বেশি হওয়ার কারণ হলো এটির ঔষধি গুণ। এর মধ্যে উচ্চমাত্রায় কোলাজেন ও ফাইবার রয়েছে। ধারণা করা হয়, এটি খেলে স্বাস্থ্যকর ত্বকের পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও পরিপাক ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
চীনে সন্তান প্রসবের পর দ্রুত সেরে ওঠার জন্য ও সার্জারি পরবর্তী ব্যথা উপশমের জন্য ভোলা মাছের পটকা খেতে বলা হয়।
পূর্ব এশিয়াতে মাছ ধরার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় চীনকে এখন চাহিদার বেশির ভাগ পটকাই বাইরের দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এর মধ্যে অন্যতম—উগান্ডা। উগান্ডায় জেলেরা প্রতিযোগিতা করে লেক ভিক্টোরিয়া থেকে নিল পার্চ মাছ ধরে এবং উচ্চমূল্যে চীনে রপ্তানি করে।
এ ছাড়াও মেক্সিকোর ততোয়াবা মাছ (ভোলা মাছের স্থানীয় নাম) থেকেও পটকা সংগ্রহ করে অবৈধভাবে চীনে রপ্তানি করা হয়। মাছের পটকা পাচারকে কেন্দ্র করে মেক্সিকোতে লাখ লাখ ডলারের অবৈধ বাণিজ্য হয়।
বিলুপ্তপ্রায় এ মাছ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলেও চীনে পটকার ব্যাপক চাহিদার কারণে পাচার রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না।