
বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা হাতিয়ে নিচ্ছে স্ক্যামার চক্র
নিজস্ব প্রতিবেদক
ইন্টারনেট পেমেন্টে বা আইপি অ্যাকাউন্ট খুলে বিদেশি বিনিয়োগ পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা হাতিয়ে নিচ্ছে আন্তর্জাতিক ফিন্যান্সিয়াল স্ক্যামার চক্র।
ফ্রিল্যান্সিংয়ের আড়ালে বিভিন্ন সোস্যাল সিকিউরিটি নম্বর ও বিদেশি ব্যাংকের ভুয়া আইপি অ্যাকাউন্ট খুলে বৈদেশিক মুদ্রা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে সিরাজগঞ্জ থেকে দুই প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। প্রতারণার এই ধরনকে পুলিশ বলছে, নিউ অ্যাকাউন্ট ফ্রড।
বিদেশি স্ক্যামারদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে দেশে বসেই বিশ্বের নামিদামি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাৎ করছে দেশীয় স্ক্যামাররা। কয়েকটি ধাপ পেরিয়ে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে অর্থ। প্রথমে কোনো আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ পরামর্শক প্রতিষ্ঠানে আইডি খোলে তারা। দিতে হয় ব্যক্তিগত ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য। যাচাইয়ের অংশ হিসেবে প্রতিটি আইডির ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সাময়িকভাবে এক ডলার দিয়ে থাকে বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান।
তথ্য যাচাই শেষে দুই-তিন দিনের মধ্যে এই অর্থ আবার ফেরত নেওয়ার কথা বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানের। কিন্তু তার আগেই টাকা চলে যায় প্রতারকদের পকেটে। পারফেক্ট মানি, ওয়েব মানি, পেওনারের মতো বেশ কয়েকটি ইন্টারনেট পেমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার করে স্ক্যামাররা। সিটিটিসির সাইবার ইনভেস্টিগেশন বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার আ ফ ম আল কিবরিয়া বলেন, প্রতারকরা যখনই ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকাটা জমা হতো সেই টাকাটা তারা বিভিন্ন ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপস আছে আপনারা জানেন সেগুলো দিয়ে টাকাটা তারা অন্য অ্যাকাউন্টে নিয়ে নিত। এখানে বিদেশি অপরাধীদের সংশ্লিষ্টতা আছে। সিক্রেট যে গ্রুপ গুলো আছে সেখানে তারা বিভিন্ন মানুষের নামে কিনে অ্যাকাউন্ট খুলে।
প্রতারণার অভিযোগে সিরাজগঞ্জ থেকে এ চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। ভুয়া তথ্য ব্যবহার করেু বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানে এক লাখ অ্যাকাউন্ট খুলেছিল তারা। এর মধ্যে ১৫ হাজার অ্যাকাউন্ট থেকে তারা পনেরো হাজার ডলার সরিয়েছে।
আল কিবরিয়া বলেন, এখানে হুমকির জায়গাটা হচ্ছে যে, আমরা যে দুজনকে ধরেছি তারা দুজনই কিন্তু নিজেদেরকে ফ্রিল্যান্সার উদ্যোক্তা পরিচয় দিচ্ছে। তাদের সঙ্গে তাদের আন্ডারে ৩৫-৪০ জন করে ফ্রিল্যান্সার কাজ করেন। এটা একটা সেক্টর যেটাকে প্রমোট করা হচ্ছে সরকারিভাবে আমরা চাই যে ফ্রিল্যান্সিংটা প্রমোট হোক। সেখানে ফ্রিল্যান্সারদের কিন্তু জেনে না জেনে অপরাধে জড়িয়ে পড়ার একটা রিস্ক থেকে গেছে।
ফ্রিল্যান্সিংয়ের আড়ালে যারা অবৈধভাবে এই ধরণের প্রতারণায় আশ্রয় নিচ্ছে তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনার কথা জানিয়েছে সিটিটিসি।