ডার্ক মোড
Wednesday, 30 October 2024
ePaper   
Logo
নিউইয়র্কে প্রবীন সম্মাননার পর্বে বেলাল বেগ সংবর্ধনা

নিউইয়র্কে প্রবীন সম্মাননার পর্বে বেলাল বেগ সংবর্ধনা

যুক্তরাষ্ট্র ব্যুরো

‘‘দিনমান বঙ্গবন্ধু” এবং প্রবীন সম্মাননা পর্বে ‘বেলাল বেগের সম্মাননা’ শিরোনামে বিপা ও বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাবের যৌথ উদ্যোগে পড়শী কাব্যের এক সফল আয়োজন হলো গত রোববার জ্যামাইকার পারফর্মিং আর্ট সেন্টারে। পুরো অনুষ্ঠানটি ছিলো অত্যন্ত গতিময় এবং আন্তরিক।

বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন পোট্রেট, ভাস্কর্য এবং ৭ মার্চের ভাষণের অংশবিশেষ এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা দিয়ে সাজানো হয়েছিলো পুরোটা মঞ্চ। দুপুর ২ টায় মূল আয়োজন শুরু হয় বিপা’র শিশু কিশোরদের বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি, তাঁর ব্যবহৃত জিনিস, বাংলাদেশের পতাকা- এ সবকিছুই রঙতুলিতে, লেখা দিয়ে।

এই আয়োজন উপলক্ষে একটা দেয়াল পত্রিকাও প্রকাশ করে বিপা’র শিশু কিশোররা যেখানে বাংলায় চমৎকার ভাবে বঙ্গবন্ধুর জীবনী লিপিবদ্ধ ছিল। বিপা’র বাংলা শিক্ষক এবং অংকন শিক্ষকের তত্বাবধানে ওদের করা কাজগুলো উপস্থিত দর্শকদের মুগ্ধ করে। অনুষ্ঠানের শুরুতেই উপস্থাপক ক্ষুদে শিল্পী এবং লেখকদের মঞ্চে ডেকে নেন । অংশগ্রহনকারীদের বঙ্গবন্ধুর বই এবং টি শার্ট উপহার দেয়া হয়।

মূল অনুষ্ঠান শুরু হয় আবু সাঈদ রতনের শুভেচ্ছা বক্তব্যের মধ্য দিয়ে। বিপা’র শিক্ষক নিলোফার জাহানের পরিচালনা এবং নির্দেশনায় দুটি দেশাত্মবোধক গান বিপা’র ছাত্র-ছাত্রীরা পরিবেশন করে। এরপর জারিন মাইশা এবং আলভান চৌধুরীর গান -“বঙ্গবন্ধু ফিরে এলে তোমার স্বপ্নের স্বাধীন বাংলায় তুমি আজ/ঘরে ঘরে এত খুশি তাই। /কী ভালো তোমাকে বাসি আমরা, বলো কী করে বোঝাই” সবাইকে আলোড়িত করে ভীষনভাবে।’’ এরপর শুরু হয় বিভিন্ন ধাপে ভাগ করা শিল্পী, কবি এবং আবৃত্তি শিল্পীদের অনুষ্ঠান ॥

বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গীকৃত প্রতিটি কবিতা, গান, লেখা সবাইকে মোহাবিষ্ট করে রাখে। কবিতায়, লেখায়, গানে বারবার উঠে আসা প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ সবার মনকে বারবার ফিরিয়ে নিয়ে গেছে মাতৃভূমিতে। কবি আনোয়ার সেলিম, কবি কাজী আতিক, ছড়াকার খালেদ শরফুদ্দীন, ছড়াকার মিনহাজ আহমেদ শাম্মু, লেখক দস্তগীর জাহাঙ্গীর তাঁদের স্বরচিত লেখা পাঠ করেন। কবি কেতকী ফারহানা বিশ্বাসের লেখা কবিতা পাঠ করেছেন সাবিনা নিরু। আবৃত্তি শিল্পী গোপন সাহা, পিংকি চৌধুরী, আনোয়ারুল লাভলু’র একক কবিতা এবং আবৃত্তিশিল্পী শুক্লা রায়ের নির্দেশনায় “ টুঙ্গিপাড়ার খোকা” কবিতা-গানে দলীয়ভাবে পরিবেশন করেন তাহরীনা পারভীন প্রীতি, পারভীন সুলতানা, রিচার্ড রিকি গোমেজ, এবং শুক্লা রায়।

সঙ্গীত শিল্পী দিনার মনি, মারিস্টেলা আহমেদ শ্যামলী, তাহমিনা শহীদ, আল আমিন বাবুর দেশাত্মবোধক এবং বঙ্গবন্ধুর জন্য উৎসর্গকৃত সঙ্গীত উপস্থিত সবার প্রাণোন্মদনার সৃষ্টি করে। তবলায় সঙ্গত: করেন পিনাক পানি গোস্বামী এবং কীবোর্ডে ছিলেন রবিউল ইসলাম জুয়েল।

সঙ্গীত শিল্পী, গীতিকার, সুরকার তাজুল ইমাম মঞ্চে আসেন এবং সদ্য প্রয়াত দুজন বীর মুক্তিযোদ্ধা- মতিয়া চৌধুরী এবং সুজেয় শ্যামের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নিরবতা পালন করা হয়। তাজুল ইমাম নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরেন ত্রিশ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে পাওয়া স্বাধীন বাংলাদেশের কথা। এরপর নৃত্য পরিবেশন করেন বিপা’র তিন গুনী ছাত্রী জারিন মাইশা, মাহিমা খান এবং এলমা রুদমিলা।

অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে সম্মাননা জানানো হয় প্রবীন লেখক-কবি এবং বিটিভির সাবেক প্রযোজক বেলাল বেগ কে। এই পর্বটি পরিচালনা করেন ছড়াকার মনজুর কাদের। প্রথমেই তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান আনোয়ার সেলিম এবং খালেদ শরফুদ্দিন। এরপর বেলাল বেগ কে ডিজাইনার নুসরাত এলিনের দেয়া উত্তরীয় পরিয়ে দেন ডাঃ প্রতাপ চন্দ্র দাশ। বিপা’র সঙ্গীত শিক্ষক সেলিমা আশরাফ তাঁর হাতে শুভেচ্ছা উপহার তুলে দেন।

অত্যন্ত প্রাঞ্জল এ পর্বটি সবাই দারুণভাবে উপভোগ করে। এ পর্বে নিলোফার জাহান দুটি সঙ্গীত পরিবেশন করেন। বেলাল বেগ উপস্থাপক মনজুর কাদেরের সাথে কথোপকথনের ফাঁকে ফাঁকে স্বভাব সুলভ উত্তেজনায় মুহুর্মুহু “ জয় বাংলা” শ্লোগান দেন। তিনি স্বদেশ প্রেমে, সততায় নিজের জীবন যাপনের কথা বলেন। তাঁর সহধর্মিনীকেও মঞ্চে আহŸান করা হয়। বেলাল বেগ গীতাঞ্জলি থেকে কয়েকটি লাইন পাঠ করেন “হে মোর দুর্ভাগা দেশ, যাদের করেছ অপমান, অপমানে হতে হবে তাহাদের সবার সমান!”

সবশেষে বিপা’র নৃত্য শিক্ষক এ্যানি ফেরদৌস ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন যাঁরা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন এই আয়োজনকে স্বার্থক করার জন্য। পুরো অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আবৃত্তিশিল্পী জি এই আরজু এবং সাবিনা নিরু।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন