দোজার গবেষণাকর্ম চলচ্চিত্রের সৈয়দ শামসুল হক
বিনোদন ডেস্ক
বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের সেমিনার হলে ২৪ শে ডিসেম্বর ২০২৪ (মঙ্গলবার) অনুষ্ঠিত হয় ‘চলচ্চিত্রের বহুমাত্রিক শাখায় সৈয়দ শামসুল হক’ শীর্ষক সেমিনার। বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের মহাপরিচালক মোঃ কামরুজ্জামানের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গবেষক মো. রাসেল রানা দোজা। প্রবন্ধের উপর আলোচনা করেন ‘চলচ্চিত্রের বহুমাত্রিক শাখায় সৈয়দ শামসুল হক ’ শীর্ষক গবেষণা কর্মের তত্ত্বাবধায়ক বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ আজম , বিশিষ্ট শিল্প সমালোচক ও চলচ্চিত্র শিক্ষক জনাব মইনুদ্দীন খালেদ , ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এর মিডিয়া এন্ড টেলিভিশন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড.ইমরান ফিরদাউস এবং বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা ও গবেষক জনাব লাবিব নাজমুছ ছাকিব।
আলোচকদের আলোচনায় উঠে আসে সৈয়দ শামসুল হকের সাহিত্যের প্রতিটি শাখায়- গল্প, উপন্যাস, কবিতা, নাটক প্রবন্ধে বিচরণ'র পাশাপাশি সমানভাবেই চলেছে শক্তিশালী গণমাধ্যম চলচ্চিত্রেও তার অভিযাত্রা। চলচ্চিত্রের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান- কাহিনী, সংলাপ গীত রচনা, চিত্রনাট্য এবং পরিচালনায় তার সরব উপস্থিতি। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসের প্রারম্ভ থেকে অর্থাৎ ষাটের দশক গোড়ার দিক থেকে আশির দশক পর্যন্ত তার সৃজনশীল প্রতিটি কাজ সমৃদ্ধ করেছে আমাদের চলচ্চিত্র শিল্পকে। ১৯৫৯ সালে প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার মহিউদ্দিনের পরিচালনায় মাটির পাহাড় চলচ্চিত্রে তিনি গীত রচনা, কাহিনী, সংলাপ, চিত্রনাট্য ও সহকারী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। চলচ্চিত্র যাত্রায় প্রথমেই তিনি যে সফলতার স্বাক্ষর রাখেন তা তাকে পরবর্তী কাজগুলোকে আরো গতিশীল করেছিল। এরপর তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি একে একে যুক্ত হন অনেক দর্শক নন্দিত চলচ্চিত্রের কাহিনীকার, গীতিকার, সংলাপ রচয়িতা ও চিত্রনাট্যকার হিসেবে।কাজ করেন ষাট সত্তর আশি দশকের বিখ্যাত চিত্র পরিচালক মহিউদ্দিন, আব্দুল জব্বার খান,সুভাষ দত্ত, কামাল আহমেদ কিউ এম জামান, কাজী জহির প্রমূখদের সাথে।
কেবল চলচ্চিত্রের কাহিনী,সংলাপ, গীত রচনা চিত্রনাট্য ও পরিচালনায় সীমাবদ্ধ ছিলেন না । ১৯৫৯ থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত তৎকালীন পাঠক নন্দিত জনপ্রিয় সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন চিত্রালিতেও চলচ্চিত্র সাংবাদিকতায় সহ-সম্পাদক হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৬৫ সালে চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত চলচ্চিত্র ও সংস্কৃতি বিষয়ক মাসিক পত্রিকা অন্তরঙ্গের সম্পাদনার দায়িত্বে অধিষ্ঠিত ছিলেন। চলচ্চিত্র বিষয়ক ও অন্যান্য লেখার সূত্রে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন মাসিক সিনেমা ও সচিত্র সন্ধানীর সাথে। সাহিত্য রচনার পাশাপাশি চলচ্চিত্রে এতগুলো শাখায় বিচরণ করা দ্বিতীয় জন খুঁজে পাওয়া সত্যিই বিরল।
বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের পরিচালক জনাব মুহাম্মদ আরিফ সাদেকের সঞ্চালনায় এ সেমিনার অনুষ্ঠানে মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও গবেষকগণ। অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের প্রকল্প পরিচালক জনাব ইয়াকুব আলী।