
দেশে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ও যৌথ ডিগ্রি চালুর পরিকল্পনা
নিজ্বস প্রতিনিধি
যুক্তরাজ্যের ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব ইস্ট অ্যাংলিয়া, এমএইচ গ্লোবাল গ্রুপ এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস’র প্রতিনিধিদলের সদস্যরা বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এসএমএ ফায়েজের সঙ্গে ট্রান্স ন্যাশনাল এডুকেশন (টিএনই) বা ক্রস বর্ডার হায়ার এডুকেশন নিয়ে বৈঠক করেছেন।
গত ২৬ আগস্ট কমিশন ভবনের ৫ম তলার সভাকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বাংলাদেশে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব ইস্ট অ্যাংলিয়া’র ব্রাঞ্চ ক্যাম্পাস স্থাপন এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) ও মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) সঙ্গে যৌথ বা দ্বৈত ডিগ্রি প্রোগ্রাম চালুর বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এসএমএ ফায়েজ। এসময় সভায় উপস্থিত ছিলেন ৬৬ পদাতিক ডিভিশন রংপুরের জিওসি মেজর জেনারেল মোহাম্মদ কামরুল হাসান, ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, প্রফেসর ড. মাসুমা হাবিব, এবং ইউজিসি’র আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিভাগের পরিচালক জেসমিন পারভীন।
এছাড়া সভায় ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব ইস্ট অ্যাংলিয়া’র প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলর ও ভাইস-প্রেসিডেন্ট প্রফেসর স্টিভেন ম্যাকগুইর, হেড অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটমেন্ট সাইয়েদ নুহ, ফ্যাকাল্টি অব সায়েন্সস’র অ্যাসোসিয়েট ডিন (অ্যাডমিশন) প্রফেসর স্টিফেন লেকক, ফ্যাকাল্টি অব সোশ্যাল সায়েন্সেস’র অ্যাসোসিয়েট ডিন (ইন্টারন্যাশনালাইজেশন) ড. লুসিল কার্টিস, এমএইচ গ্লোবাল গ্রুপের প্রজেক্ট ডিরেক্টর নিল আপটন ও চিফ অপারেটিং অফিসার বেঞ্জামিন বিলভারস্টোন এবং জাহিরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
সভায় ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব ইস্ট অ্যাংলিয়া এবং এমএইচ গ্লোবাল প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার উন্নয়নে সহযোগিতা ও বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেন। ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এসএমএ ফায়েজ বিধি মোতাবেক সব ধরনের সহযোগিতা প্রদানের বিষয়ে প্রতিনিধি দলের সদস্যদের আশ্বস্ত করেন।
সভায় মেজর জেনারেল মোহাম্মদ কামরুল হাসান তার বক্তব্যে বৈঠকের পটভূমি তুলে ধরে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশে বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আন্তর্জাতিক ক্যাম্পাস স্থাপনের বিষয় তুলে ধরেন। তিনি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) ও মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) সঙ্গে যৌথ ডিগ্রি প্রোগ্রাম চালুর যৌক্তিকতা তুলে ধরেন। এই উদ্যোগ সফল হলে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরাও উচ্চশিক্ষা ও পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির সুযোগ পাবেন। তিনি বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে উদীয়মান সেক্টরসমূহ যেমন বিগডাটা এনালাইসিস, ডাটা সাইন্স, সাইবার সিকিউরিটি ইত্যাদি বিষয়ে যৌথ ডিগ্রি পরিচালনা করা হবে মর্মে উল্লেখ করেন।
ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার মানোন্নয়নে প্রস্তাবিত উদ্যোগ সহায়ক হবে। তিনি বিদ্যমান আইন ও বিধিমালার আলোকে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব ইস্ট অ্যাংলিয়া’র প্রস্তাব বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে বলে অভিমত প্রকাশ করেন।
প্রফেসর ড. মাসুমা হাবিব বলেন, বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হলে আমাদের শিক্ষার্থীরা বৈশ্বিক শিক্ষা ও গবেষণায় সম্পৃক্ত হতে পারবে। এতে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে এবং জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি গড়ে উঠবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
প্রফেসর স্টিভেন ম্যাকগুইর বলেন, উচ্চশিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করতে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব ইস্ট অ্যাংলিয়া প্রতিটি ব্রাঞ্চ ক্যাম্পাসে কঠোর একাডেমিক ও প্রশাসনিক মানদণ্ড বজায় রাখতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। বাংলাদেশেও তিনি সেই উচ্চমান নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেন।
বৈঠকে উচ্চ টিউশন ফি, কোয়ালিটি অ্যাসিওরেন্স, স্টুডেন্ট এমপ্লয়েবিলিটি এবং ক্রেডিট আওয়ারের অসামঞ্জস্যতাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করে তা নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের বিষয়ে সকলে একমত হোন।
আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা মেধাবী শিক্ষার্থীরাও যেন উচ্চশিক্ষার সুযোগ গ্রহণ করতে পারে সেজন্য বিনা বেতনে অধ্যয়নের সুযোগ প্রদানের উপর জোর দেন ইউজিসি’র আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিভাগের পরিচালক জেসমিন পারভীন।