ডার্ক মোড
Wednesday, 23 October 2024
ePaper   
Logo
কক্সবাজার থেকে যাত্রীবেশে কৌশলে ঢাকা ও নারায়ণগন্জে ইয়াবা আসছে

কক্সবাজার থেকে যাত্রীবেশে কৌশলে ঢাকা ও নারায়ণগন্জে ইয়াবা আসছে

 

নারায়ণগন্জ প্রতিনিধি

কেউ হকার। কেউ মাছ বিক্রেতা। আবার কেউবা ফল বিক্রেতা সেজে রাজধানীর উপকন্ঠে নারায়ণগন্জ জেলার কাঁচপুর, সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড মোড়, ডেমরা, মিজমিজি, মৌচাকসহ আশপাশ এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকে পেশাদার মাদক কারবারিরা। ছদ্মবেশি একটা রূপ থাকলেও মূল কারবার মাদকের।

ছদ্মবেশধারি এ সকল মাদক কারবারিরা বার বার অবস্থান বদলায়। কোনো এলাকায় তিন মাসের বেশি থাকেনা। ওরা কক্সবাজারের টেকনাথ সীমান্ত এলাকা থেকে ইয়াবা ও আইস সহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্ব বহন করে যাত্রীবেশে নারায়ণগন্জ ও ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় সরবারহ করে। মাঝে মধ্যে ছোটখাটো চালান ধরা পড়লেও ছদ্মবেশধারি মাদক কারবারিদের নির্মুল করা যাচ্ছেনা।

মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সকালে সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড় এলাকায় কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী সেইন্টমার্টিন সৌহার্দ নামের একটি বাসে এ অভিযান চালায় নারায়ণগঞ্জ জেলা মাদক নিয়ন্রণ অধিদপ্তর। এ সময় যাত্রীবাহী বাসে থেকে ৮ হাজার ৪ শত পিস ইয়াবাসহ এক যুবককে আটক করা হয়। আটককৃত যুবক মোঃ রুবেল হোসেন (৩৪) চাঁদপুর জেলার শাহবাড়ি থানার টামটা ছৈয়াল বাড়ীর মোঃ আব্দুল মান্নানের পুত্র ।

জেলা মাদক নিয়ন্রণ অধিদপ্তরের উপ পরিদর্শক ইকবাল আহমেদ দীপু বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জের সেইন্টমার্টিন সৌহাদ্য (ঢাকা মেট্রো-ব-১৩-২০০১) নামের যাত্রী বাহী বাসে অভিযান চালিয়েছি। এ সময় মোঃ রুবেল হোসেন নামের এক যাত্রী কে আটক করা হয়েছে। যাত্রীর নিকট থেকে ৮ হাজার ৪ শত পিছ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। এ মাদকের বর্তমান মূল্য প্রায় ২৬ লাখ টাকা।

এ ঘটনায় জেলা মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মাদক আইনে মামলা দায়ের করেছে।

এদিকে, গত ৪ অক্টোবর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) অভিযানে ২০ হাজার পিস ইয়াবাসহ দুজন মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারদের মধ্যে একজন নারী মাদক কারবারিও রয়েছেন। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- কলিমা আক্তার ওরফে রোজি (৩০) ও মো.তানজিল (৩২)।

ডিএনসির ঢাকা মেট্রো (দক্ষিণ) কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ মামুন এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, গত সেপ্টেম্বর মাসে রাজধানীর ওয়ারী ও ডেমরা এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এ সময় ৫০ পিস ইয়াবা বিক্রির সময় বংশাল ও ওয়ারী এলাকার চিহ্নিত মাদককারবারি মো. তানজিলকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্য ও জব্দ ইয়াবার উৎস সন্ধানকালে কক্সবাজারের টেকনাফকেন্দ্রিক মাদক ব্যবসায়ীদের একটি নতুন চক্রের সন্ধান পাওয়া যায়। ক্রেতা সেজে ডেমরার বামৈল এলাকায় পৌঁছে চক্রের এক নারী সদস্য কলিমা আক্তার ওরফে রোজিকে আটক করা হয়।

পরে তার ভাড়া করা বাড়ি তল্লাশি করে ওয়ারড্রবের ড্রয়ার থেকে ২০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।

ডিএনসি জানায়, আগে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে ইয়াবা ও আইস ঢাকার মাদক কারবারিদের কাছে বাহক মারফত পৌঁছে দেওয়া হতো। সম্প্রতি মাদকদ্রব্ব নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান ও চেকপোস্টসমূহের কারণে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ও আইস জব্দ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে কক্সবাজারের মাদক কারবারিরা কৌশলে বিভিন্ন পরিমাণে ইয়াবা এনে রাজধানীর কাছাকাছি নারায়ণগন্জ জেলার কাঁচপুর, সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড মোড়, মৌচাক, ও শিমুলপাড়াসহ যাত্রাবাড়ী, ডেমরাসহ বিভিন্ন এলাকায় ভাড়াটিয়া সেজে অবস্থান নেয়।

চিকিৎসা, হকারি ব্যবসাসহ নানা কারণ দেখিয়ে তারা ঢাকায় অবস্থান করে এবং নিয়মিত ভিত্তিতে অবস্থান পরিবর্তন করে। রাজধানীর মাদক কারবারিরা কক্সবাজারের মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে টাকা পৌঁছে দিলে, তারা এসব কারবারিদের মাধ্যমে রাজধানীর ব্যবসায়ীদের কাছে ইয়াবা পৌঁছে দিতো।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন

আপনি ও পছন্দ করতে পারেন