ডার্ক মোড
Friday, 10 January 2025
ePaper   
Logo
অপরাধীদের নিরাপদ ডাম্পিংপয়েন্ট পূর্বাচল

অপরাধীদের নিরাপদ ডাম্পিংপয়েন্ট পূর্বাচল

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচল এখন অপরাধীদের নিরাপদ ডাম্পিংপয়েন্ট। পূর্বাচলে মিলছে একের পর এক লাশ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা না থাকায় হরহামেশাই সংগঠিত হচ্ছে অপরাধ। প্রতিনিয়ত পূর্বাচলজুরে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, সড়ক দুর্ঘটনা, অপহরণ ও মারামারির ঘটনা ঘটেই চলছে। অপরাধ সংগঠিত হওয়ার খবর পেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ঘটনাস্থলে দেখা যায়। গত কয়েক বছরে পূর্বাচলের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ৩০টি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। একের পর এক লাশ উদ্ধার হওয়ায় পূর্বাচলবাসীর মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা সহকারী পুলিশ সুপার (রূপগঞ্জ সার্কেল) মেহেদী ইসলাম বলেন, পূর্বাচলের পুলিশ ক্যাম্পটি সম্প্রতি চালু হয়েছে। এই পুলিশের জনবলও সংকট। তবুও পূর্বাচলে টহল বাড়ানো চেষ্টা চালাচ্ছি।

সর্বশেষ গত ৬ জানুয়ারি সোমবার সকালে পূর্বাচলের ৫ নম্বর সেক্টরের গুতিয়াবো সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের সড়ক থেকে রানী আক্তার (২৯) নামে এক নৃত্যশিল্পীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সাথে উদ্ধার করা হয়েছে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ধারালো একটি ছোরা।

এর আগে গত ১৭ ডিসেম্বর পূর্বাচলের ২নং সেক্টরের ৪ নম্বর ব্রিজের নিচে লেকের পানি থেকে শাহিনুর রহমান কাব্য ও তার এক বন্ধুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গেই পূর্বাচলে নেমে আসে ঘুটঘুটে অন্ধকার ও শুনশান নীরবতা। রাত যত গভীর হতে থাকে ততোই বাড়তে থাকে নিরবতা। রীতিমতো গা ছমছমে পরিবেশ। ৩০০ ফুট সড়কে সড়ক বাতি থাকলেও পূর্বাচলের ভেতরে রাস্তাগুলোতে কোনো সড়ক বাতি নেই। এ কারণে ভেতরে রাস্তাগুলো থাকে নিরব ও সুনশান।

তাই পূর্বাচলজুড়ে ঘটে চলছে একের পর এক অপরাধ যজ্ঞ। পূর্বাচলের বিশাল এরিয়াতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পর্যাপ্ত তৎপরতা না থাকায় হত্যা, ছিনতাই, ডাকাতিসহ নানা অপরাধ বেড়েই চলছে দিনদিন।

গত ৮ বছরে পূর্বাচল থেকে ৩৩টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গত ১৩ নভেম্বর সকালে জসিম উদ্দিন নামে এক শিল্পপতির লাশ পূর্বাচলের ৫নং সেক্টরের একটি লেক থেকে ৭ টুকরো করা অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন বিকালে ১৭ নম্বর সেক্টর থেকে জসিম উদ্দিনের লাশের আরও ৩টি টুকরো উদ্ধার করা হয়।

একই বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর পূর্বাচলের ১০ নম্বর সেক্টরের ৪ নম্বর সেতুর নিচ থেকে কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় মানুষের একটি কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়। ২০১৭ সালের ২৪ এপ্রিল ১৩ নম্বর সেক্টরে ব্রিফকেসের ভেতর থেকে তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

২০১৮ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ১১ নম্বর সেতুর নিচ থেকে গুলিবিদ্ধ সোহাগ, শিমুল ও আজাদ নামে তিন যুবকের মরদেহ, একই বছরের ৭ নভেম্বর ১০ নম্বর সেক্টর থেকে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা ইসরাফিুল হোসেন জানান, পূর্বাচলের আশেপাশে প্রতিটি দোকান, রেস্টুরেন্ট গভীর রাত পর্যন্ত খোলা থাকে। এখানে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে থেকে লোকজন এসে এখানে অপরাধ অপকর্ম করছেন আর প্রতিনিয়তই ছিনতাই হচ্ছে।
ওভার স্পিডে গাড়ি চালানোর কারণে দূর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছেন অনেকে। কিছুদিন পরপরই পূর্বাচলের বিভিন্ন স্থান থেকে লাশ পাওয়া যায়। বর্তমানে আমরা পূর্বাচলবাসী অনেক আতঙ্কের মধ্যে বসবাস করছি।

মন্তব্য / থেকে প্রত্যুত্তর দিন